হাকিকুল ইসলাম খোকন নিউইয়র্ক থেকে: সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি অসাধারণ নিষ্ঠা, নেতৃত্ব এবং প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে মানবতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ডিসট্রেসড চিলড্রেন এ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক, ডাঃ এহসান হক সম্প্রতি রাজশাহী সরকারি কলেজ কর্তৃক মানবিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।
গত ১০ই অক্টোবর, ২০২০ রাজশাহী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ হাবিবুর রহমান এই পুরষ্কার ঘোষণা করেন। পুরষ্কার ঘোষণার সময় তিনি বলেন, “আমরা আনন্দিত যে, বিশ্বব্যাপী সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করা শিশু অধিকারকর্মী এবং মানবতাবাদী নেতা হিসাবে আজীবন প্রয়াসের জন্য রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ডাঃ এহসান হককে রাজশাহী কলেজ মানবিক পুরষ্কারে ভূষিত করেছে। ডিসিআই-এর মাধ্যমে তিনি একটি স্বচ্ছ এবং স্থায়ী সহযোগিতার ব্যবস্থা করেছেন এবং হাজার হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং চক্ষুসেবার মাধ্যমে উন্নত জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের কলেজের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থীর এই অসামান্য অর্জনের জন্য আমরা রাজশাহী কলেজ, এই কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং সমস্ত অনুষদ অত্যন্ত গর্বিত। আমরা আশা করি আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীরা ডাঃ হকের এই উৎসর্গ, নিঃস্বার্থ অবদান এবং সুবিধাবঞ্চিতদের প্রতি তার আবেগ দ্বারা অনুপ্রাণিত হবে।”
২০২১ সালের ১৬ই জানুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরষ্কার প্রদান করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ডিসিআই-য়ের শুভেচ্ছাদূত বিখ্যাত অভিনেত্রী ববিতা আক্তার এবং স্বনামধন্য গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন। অভিনেত্রী ববিতা ডাঃ হককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই পুরষ্কারের জন্য রাজশাহী কলেজকে ধন্যবাদ। ডাঃ এহসান হক একজন সত্যিকারের মানবতাবাদী। বিগত তিন দশক ধরে তাঁর জীবনের একটি অঙ্গ হয়ে আছে স্বেচ্ছাসেবা এবং সামাজিক উন্নয়ন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর অবিশ্বাস্য প্রতিশ্রূতি, মমতা এবং নেতৃত্ব প্রত্যক্ষ করেছি। সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আমি প্রতিনিয়ত তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং আশা করি আপনারাও সবাই অনুপ্রাণিত হবেন।”
পুরষ্কার ঘোষণার পরে ডাঃ এহসান হক বলেন, “আমি এই সম্মান পাওয়ার জন্য সত্যিই কৃতজ্ঞ এবং গর্বিত। এই স্বীকৃতি অবশ্যই আমাদের পুরো দলকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং মিশন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার শক্তি ও অনুপ্রেরণা দেবে। যতদিন না সমস্ত শিশু নিরাপদ, স্বাস্থ্যবান এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ লাভ করবে ততদিন পর্যন্ত আমি শিশুদের পক্ষে কাজ করা বন্ধ করব না। যেসব ডোনার, স্পন্সর, ভলান্টিয়ার এবং মহান ব্যক্তিগণ বছরের পর বছর ধরে আমাদের মিশনকে সমর্থন করেছেন এবং বাংলাদেশে ডিসিআই-এর কাজকে সম্ভব করে তুলেছেন, ডিসিআই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
ডাঃ এহসান হক দারিদ্র্য, ক্ষুধা, শিশুশ্রম এবং প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মিশনে ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিসিআই প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটি শিশু অধিকার রক্ষা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বাস্থ্য ও বিবিধ কল্যাণে নিবেদিত। ডিসিআই-এর দু’টি লক্ষ্য রয়েছে: প্রথমত, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকারের জন্য কাজ করা; এবং দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এবং ভারতে সংগঠনের কার্যক্রমগুলিতে যুবসম্প্রদায়কে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সংযুক্ত করা। ডাঃ হক-এর অসামান্য নেতৃত্বে ডিসিআই বিগত ১৭ বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসার লাভ করেছে এবং হাজার হাজার শিশুর বিকাশের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং নিকারাগুয়া-এই চারটি দেশের বিভিন্ন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সাথে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
ডিসট্রেসড চিলড্রেন এ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই)
ডিসট্রেসড চিলড্রেন এ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই) একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক শিশু অধিকার সংস্থা যা ২০০৩ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে এর সদর দফতর ক্যামব্রিজের হার্ভার্ড স্কয়্যারে অবস্থিত। ডিসিআই শিশুদের অধিকার রক্ষায় শিশুশ্রম ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, চক্ষুসেবা প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রতিশ্রূতিবদ্ধ।