স্ট্রেইট ডায়ালগ প্রতিবেদন: নিহত স্বাস্থ্য সেবা সহ ফ্রন্টলাইন হিরোদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য মংগলবার সকাল ১১ টায় ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।করোনা থেকে সেরে উঠে সোমবার কাজে যোগ দেয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও স্থানীয় সময় বেলা এগারোটায় এই শ্রদ্ধা প্রদর্শনে যোগ দেন । একই সময়ে দেশ জুড়ে হাজার হাজার মানুষ এই নীরবতায় যোগ দেন। মানুষের অংশগ্রহণ দেখে আপ্লুত হওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব নার্সিং এর প্রধান ডেম ডোনা কিন্নাইর। খবর বিবিসির।
এ পর্যন্ত মোট ৮২ জন এনএইচএস এবং ১৬ জন কেয়ার ওয়ার্কার জীবন দিয়েছেন। এছাড়াও মারা গেছেন বহু পরিবহন কর্মী ও অন্য ধরনের ফ্রন্টলাইন কর্মীরা।
এদিকে করোনায় মারা যাওয়া এক চিকিৎসকের ছেলে ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) অভাবের কারণে সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। ১৮ বছর বয়সী ইনতিসার চৌধুরী বিবিসি’র রেডিও ফোর’র টুডে প্রোগ্রামে বলেন, তিনি চান মন্ত্রীরা তাদের ভুল স্বীকার করে নিক আর এড়িয়ে যাওয়ার বদলে ভুলগুলোকে উন্নতির সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাক। ইনতিসার চৌধুরীর বাবা ডা. আবদুল মাবুদ চৌধুরী (৫৩) এই মাসের শুরুর দিকে মারা যান। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পাঁচ দিন আগে পিপিই সংকট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সতর্ক করে চিঠি লিখেছিলেন তিনি।
সোমবার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে গত এক দনে ৩৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হজার ৯২ জনে। এর মধ্যে ৮২ জন জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের (এনএইচএস) কর্মী ও ১৬ জন কেয়ার ওয়ার্কার রয়েছেন। তবে বিবিসির পৃথক এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ভাইরাসে যুক্তরাজ্যে অন্তত ১১৪ জন স্বাস্থ্য কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিটের নীরবতায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইয়র্কের আর্চবিশপ জন সেনটানু। সামনের সারিতে কাজ করা সকলের জন্য নিরাপত্তা সামগ্রী প্রদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সঠিক পিপিই ছাড়া কর্মীদের বিপদের মধ্যে ঠেলে দেওয়া উচিত নয়।’
এনএইচএস ইংল্যান্ডের মেডিক্যাল ডিরেক্টর স্টিফেন পোয়িস বলেছেন, নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের নিশ্চিত করা হয়েছে যে তাদের অবদান স্মরণ করা হবে আর প্রশংসা পাবে। চিফ নার্সিং অফিসার রুথ মে বলেছেন, ‘প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখের কিন্তু স্বাস্থ্য ও কেয়ার কর্মীদের মারা যাওয়ার ক্ষতি আরও তীব্রভাবে অনুভব করি।’
যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কেউ স্টারমারও নীরবতা পালনে যোগ দেন। তিনি বলন, সামনের সারির বহু কর্মী তাদের প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের সঠিক যন্ত্রপাতি, সঠিক জায়গায়, সঠিক সময়ে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে গত সোমবার ব্রিটিশ সরকারের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের মহামারিতে মারা যাওয়া স্বাস্থ্য ও কেয়ার কর্মীদের পরিবার ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ পাবে।