নিজস্ব প্রতিবেদক
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের বিশ্বরেকর্ড আগেই গড়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান আম্পায়ার আলিম দার। তার নামের পাশে রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ পরিচালনার রেকর্ডও। তবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আলাদা আলাদাভাবে সর্বোচ্চ ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের রেকর্ড ছিল না তার।
আজ (রোববার) পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের মাধ্যমে সেই রেকর্ডও নিজের করে নিলেন ৫২ বছর বয়সী আলিম দার। প্রায় ২০ বছরের আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ২১০তম ওয়ানডে ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ওয়ানডেতে সর্বোচ ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের রেকর্ড গড়ার পথে তিনি পেছনে ফেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক আম্পায়ার রুডি কোর্জেনকে। যিনি ১৯৯২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ১৮ বছরে পরিচালনা করেছেন ২০৯টি ওয়ানডে ম্যাচ। টেস্টেও যে তিন আম্পায়ার সেঞ্চুরি করেছেন, তার মধ্যে একজন এই রুডি কোর্জেন।
এদিকে আজকের ম্যাচসহ মোট ৩৮৮ ম্যাচে আম্পায়ারিং করছেন আলিম দার। এটিও একটি বিশ্বরেকর্ড। গতবছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার পার্থ টেস্টে স্টিভ বাকনরের গড়া ১২৮ টেস্টের রেকর্ড ভেঙেছেন আলিম দার। এখন তার নামের পাশে রয়েছে ১৩২ টেস্টে আম্পায়িংয়ের রেকর্ড।
টেস্টের পর আজ পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে ম্যাচের টসের মাধ্যমে ওয়ানডের রেকর্ডটাও নিজের করে নিলেন দার। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে তিনি এখনও পিছিয়ে রয়েছেন তিন ম্যাচ। সর্বোচ্চ ৪৯ ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন আলিম দারের স্বদেশি আহসান রাজা। আলিম দার দাঁড়িয়েছেন ৪৬টি ম্যাচে।
আম্পায়ারিংয়ের এই রেকর্ডকে সামনে রেখে আলিম দার বলেছেন, ‘টেস্টের পর ওয়ানডেতেও সবার ওপরে থাকতে পারা আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। আমি যখন এই পেশায় নাম লেখাই, তখন এত বেশির কথা কল্পনাও করিনি। কখনও ভাবিনি যে এতদূর আসতে পারব। শুধু এটুকুই বলবো যে, মাঠের প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করেছি।’
খেলোয়াড়ি জীবনে মূলত একজন লেগস্পিনার ছিলেন আলিম দার। যিনি ১৯৮৬-৮৭ থেকে ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম পর্যন্ত ১৭ প্রথম শ্রেণি ও ১৮ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন। পরে ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
গত ১৬ বছর ধরে আইসিসির এলিট প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার তিনি। এই কীর্তিকে নজিরবিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছে আইসিসি। এছাড়া ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালে টানা তিনবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আলিম দার।
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আম্পায়ারিংয়ের রেকর্ড:
১. আলিম দার (পাকিস্তান) – ১২৯ ম্যাচ
২. স্টিভ বাকনার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ১২৮ ম্যাচ
৩. রুডি কুর্টজেন (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ১০৮ ম্যাচ
৪. ড্যারেল হার্পার (অস্ট্রেলিয়া) – ৯৫ ম্যাচ
৫. ডেভিড শেফার্ড (ইংল্যান্ড) – ৯২ ম্যাচ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আম্পায়ারিংয়ের রেকর্ড:
১. আলিম দার (পাকিস্তান) – ৩৮২ ম্যাচ
২. রুডি কুর্টজেন (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ৩৩১ ম্যাচ
৩. স্টিভ বাকনার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ৩০৯ ম্যাচ
৪. বিলি বাউডেন (নিউজিল্যান্ড) – ৩০৮ ম্যাচ
৫. সাইমন টোফেল (অস্ট্রেলিয়া) – ২৮২ ম্যাচ।