হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক থেকে
নেশাগ্রস্ত ড্রাইভারের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ট্যাক্সি ড্রাইভার মোহম্মদ হোসেন মাসুদের (৪৭)। সন্দ্বীপের সন্তান এবং নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে বরোপার্ক এলাকায় স্ত্রী এবং তিন শিশু সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। রাতের শিফটে ট্যাক্সি (লিফট) চালিয়ে রোববার ভোর রাত চারটার দিকে শেষ যাত্রী নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে ফেরার পথে কুইন্সের ম্যাসপেথ এলাকায় ফ্রেশপন্ড রোডে এলিয়ট এভিনিউ ইন্টারসেকশনে দ্রুতগামী একটি গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনায় পতিত হন। সংবাদ পেয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ টয়োটা র্যাভ ফোরের ভেতর থেকে মাসুদকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিকটস্থ ওঢাইকফ হেইট মেডিকেল সেন্টারে নেয় নিউইয়র্কের পুলিশের তত্বাবধানে হাসপাতালের কর্মীরা। জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানান মাসুদ আর বেঁচে নেই। তবে তার ২০ বছর বয়সী যাত্রীটি বেঁচে যাবেন বলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান।
মাসুদের ট্যাক্সিতে সজোরে ধাক্কা দিয়ে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ২২ বছর বয়সী ড্রাইভার এরিক সিমবরাজোকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সে গাড়ি চালাচ্ছিল।
পুলিশ আরও জানায়, তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তার বিরুদ্ধে নেশাগ্রস্ত-বল্গাহীন ড্রাইভিং এবং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও গাড়ি চালানোর গুরুতর অভিযোগের সাথে মাসুদকে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে। তদন্ত কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, এরিক যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন সেটির ইন্সপেকশন রিপোর্টও নেই।
১২ বছর আগে অভিবাসনের মর্যাদায় যুক্তরাষ্ট্রে আসা মাসুদের বোন রিফাত রহমান (২৮) বাপসনিউজকে জানান, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই সে স্ত্রীকে টেক্সট মেসেজে জানিয়েছিলেন বাসায় ফেরার কথা, ‘আমি শীঘ্রই বাসায় আসছি’। ১১ এপ্রিল এরিক তার ফেসবুকে এই গাড়ি সম্পর্কে স্প্যানিশ ভাষায় পোস্ট দিয়েছে, ‘মাই বেবি গার্ল’। এরিক ব্রুকলীনের বুশউইকের স্থায়ী বাসিন্দা। তাকে গ্রেফতারের পর এলমহার্স্ট হাসপাতালে নেয়া হয় যাবতীয় পরীক্ষার জন্য।
এদিকে, মাসুদের মৃত্যু সংবাদে ব্যথিত এবং শোকার্ত বন্ধু-স্বজনেরা ( উবার ও লিফট ড্রাইভার) রবিবার সকালেই অকুস্থল এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের পাশে যান। সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
মাসুদের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু রাইফুল সাগর (৪৯) জানান, সামনের সপ্তাহে সকলে সপরিবারে বনভোজনের প্রস্তুতির মধ্যে এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতি সকলকে ব্যথিত করলো।