সোজা কথা ডেস্ক রিসোর্ট: জাতিসংঘের সদস্য ৩৯ দেশ সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের জোর করে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে চীন প্রশিক্ষণ দেয়ার যে কথা বলছে, তা নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য দ্রুত দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াং পরিদর্শনের অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফ হিউসজেন বলেন, চীনের জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের পাশাপাশি হংকংয়ে আন্দোলনকারীদের ওপরও দমন-পীড়ন ও নির্যাতন চালাচ্ছে চীন। খবর আনাদোলুর।
তিনি বলেন, উইঘুর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনসহ নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটিকে চীনে যেতে দেয়ার অনুমতি দাবি করে করেন। চীনের ওই প্রদেশের ৪৫ শতাংশ বাসিন্দা উইঘুর মুসলিম।
জার্মানি ছাড়াও চীনে উইঘুর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, নরওয়ে ও সুইৎজারল্যান্ডসহ আরও ৩৮ দেশ।
এর আগে গত মাসে ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়াও মিংয়ের কাছে উইঘুর মুসলিমদের ওপরে কয়েক দশক ধরে চলা চীনা নির্যাতন-নিপীড়ন অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন ১৩০ ব্রিটিশ এমপি।
চিঠিতে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত’ নিধনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। ব্রিটিশ এমপিরা চিঠিতে লিখেছেন– ‘উইঘুর’ মুসলিমদের প্রতি চীন যে আচরণ করে চলেছে তা অবশ্যই জাতিগত নির্মূলের উদ্দেশে করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবেই এ ধরনের নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
জার্মানিতে নাৎসিরা যে ধরনের অত্যাচার চালিয়েছিল, উইঘুর মুসলিমদের ওপরেও সেই ধরনের অত্যাচার চলছে। জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমরা কীভাবে বসবাস করছেন, সে সম্পর্কে সব কিছু প্রকাশ্যে আনতে হবে। বিশ্ববাসীর উদ্বেগ দূর করতেই এ পদক্ষেপ নিতে হবে বেইজিংকে।’
উইঘুর মুসলিমদের জোর করে বন্ধ্যাকরণ এবং নানা ধরনের নিপীড়নের যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, এটি দীর্ঘ দিন ধরে চলতে দেয়া যায় না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে যুক্তরাজ্য মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করবে।
যদিও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়াওমিং উইঘুরদের ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে’ রাখার খবর ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রচলিত আইন মেনে তার দেশে অন্যান্য আদিবাসীর সঙ্গে যে আচরণ করা হয়, উইঘুরদের সঙ্গেও একই আচরণ করছে সরকার।
সম্প্রতি ড্রোন দিয়ে তোলা কিছু ভিডিওতে উইঘুরদের চোখ বেঁধে ট্রেনে তুলতে দেখা যায়, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হইচই পড়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সিকিউরিটি সার্ভিস ওই ফুটেজ যাচাই করে তা সত্য বলে নিশ্চিত করেছে।
চীন সরকার কর্তৃক এসব অত্যাচার নির্যাতনে এখনও কোনো উইঘুর মুসলিম প্রতিরোধমূলক কিংবা আত্মরক্ষামূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তারপরও দেশটির সরকার উইঘুর মুসলিমদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বর্হিবিশ্বের দৃষ্টি অন্যদিকে প্রবাহিত করছে। অথচ দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি তারা।