বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ‘স্বাধীনতা মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত পাকিস্তানের বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট জাফর মালিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনের এক শোক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের বিশিষ্ট মানবাধিকার নেতা অ্যাডভোকেট জাফর মালিক ২ মার্চ গভীর রাতে লাহোরের একটি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম সুহৃদ জাফর মালিকের আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাভিভূত।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে লাহোরের তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাফর মালিক বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছেন। ষাটের দশকে তিনি পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির লাহোর শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ’৭১-এ গণহত্যার প্রতিবাদের জন্য যে স্বল্প সংখ্যক পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীকে জেনারেল ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তা গ্রেফতার করেছিল অ্যাডভোকেট জাফর মালিক তাদের পক্ষে আদালতে আইনি লড়াই করেছেন। তার এই ভূমিকার কারণে তাদের গোটা পরিবারকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে কার্যত একঘরে করে রাখা হয়েছিল এবং একই সঙ্গে সামাজিক লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছিল।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘২০১৩ সালে পাকিস্তানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহযোগী সংগঠন ‘ফোরাম ফর সেকুলার পাকিস্তান’ গঠনের সময় থেকে তিনি আমৃত্যু এই সংগঠনের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য অ্যাডভোকেট জাফর মালিককে ‘স্বাধীনতা মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করেছে।
তারা বলেন ‘অ্যাডভোকেট জাফর মালিকের আকস্মিক মৃত্যুতে পাকিস্তানে মুক্তচিন্তার জগতে এবং মানবাধিকার আন্দোলনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবে না। আমরা অ্যাডভোকেট জাফর মালিকের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং সহযোদ্ধা ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা হলেন, বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, লেখক সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, জননেতা ঊষাতন তালুকদার, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, চলচ্চিত্রনির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, অধ্যাপক ডাঃ কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অবঃ) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অবঃ) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশীদ (অবঃ), মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন, ড. নূরন নবী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক আয়েশ উদ্দিন, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ডাঃ শেখ বাহারুল আলম, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ডাঃ ইকবাল কবীর, মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ, এডভোকেট আবদুস সালাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, মুক্তিযোদ্ধা কাজী লুৎফর রহমান, সাবেক জাতীয় ফুটবলার শামসুল আলম মঞ্জু, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, এডভোকেট আজাহার উল্লাহ্ ভূইয়া, অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বড়ুয়া, সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই ফেরদৌসী লাকী, অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ডাঃ নুজহাত চৌধুরী শম্পা, লেখক আলী আকবর টাবী, সমাজকর্মী চন্দন শীল, এডভোকেট কাজী মানছুরুল হক খসরু, এডভোকেট দীপক ঘোষ, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন, শহীদ সন্তান তৌহিদ রেজা নূর, শহীদসন্তান শমী কায়সার, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদ সন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন ও লেখক সাংবাদিক সাব্বির খান প্রমুখ।