সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট : যে প্রবাসীদের কল্যাণে দেশে রেমিট্যান্স আসে, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে রিজার্ভ সমৃদ্ধ হয় বলে গর্ব করা হয়, সে প্রবাসী শ্রমিক বিশেষত: ভিয়েতনাম ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরত আসা শ্রমিকদের সাথে রাষ্ট্র ও সরকার অমানবিক আচরণ করছে। চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচারের শিকার করে কম বেশি ১ হাজার জনকে ভিয়েতনামে পাঠানো হয়েছিল। যারা ম্যানপাওয়ারের ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় একজন বৈধ শ্রমিকের মত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ভিয়েতনাম গিয়েছিল। তারা সেখানে গিয়ে দালাল চক্রের হাতে নির্যাতিত হয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিল। সেই সব প্রবাসীরা দেশে আসার পর কোয়ারেন্টাইন শেষে তাদের ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরত আসাদের অনেকের করোনার কারণে চাকুরীচ্যুতি হয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে এরা সবাই সে দেশে অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল। যা সত্য নয়।
সোজা কথা ডটকম লাইভের ৪৪ তম পর্বে ২৫৫+ ৮৩ প্রবাসী শ্রমিকের মুক্তির বিষয়ে রুল,শেষ পর্যন্ত সমাধান কি আদালতে??- শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা একথা বলেন। ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা লন্ডন সময় বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত লাইভে অতিথি হিসেবে মালয়েশিয়া থেকে যোগ দেন মাইগ্রেন্ট রাইটস এক্টিভিস্ট হারুন আল রশীদ, সম্প্রতি হাইকোর্টে জেলে আটক ২৫৫+ ৮৩ শ্রমিকের বিষয়ে রীট আবেদনকারী হাইকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান, ব্র্যাক মাইগ্রেশন হেড শরিফুল হাসান, বর্তমানে জেলে থাকা ভিয়েতনাম ফেরত আনোয়ারের মা আমেনা বেগম, সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ। মিজান ফরহাদী, রুমা আহমেদ, ভিয়েতনামে প্রতারিত শেখ রিয়াজ প্রমুখ দর্শকের মন্তব্য ও প্রশ্ন নিয়ে লাইভে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন মানবধিকার কর্মী ও আইনজীবী, সোজা কথা ডটকম-এর সম্পাদক
এডভোকেট শাহ আলম ফারুক।
লাইভে ২৫৫+ ৮৩ প্রবাসীর মুক্তির বিষয়ে রীট আবেদনকারী এডভোকেট সালাহউদ্দিন রিগ্যানকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানানো হয়। এড. সালাহ উদ্দিন রীট আবেদনের পটভূমি তুলে ধরে বলেন- করোনাকালে গৃহে অবস্থানের সময় তিনি এ নিয়ে রীট আবেদনের কাজ শুরু করেন এবং তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত রীট আবেদনটি দাখিলের পর মাননীয় হাইকোর্ট জেলে থাকা ঐ প্রবাসীদের কেন মুক্তি দেয়া হবে না তা দু সপ্তাহের মধ্যে জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর উপর রুল জারি করেছে।
বক্তারা বলেন, যেখানে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভিকটিমদের সাহায্য ও ভিয়েতনামে লোক পাচারের জন্য দায়ী দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা, সেখানে উল্টো ভিকটিমদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে হয়রানি করছে। কিন্তু কুয়েতে মানবপাচার কারী এমপি পাপুল চাইলে কনস্যুলার সুবিধা পাবেন এ ঘোষণা দিতে পররাস্ট্রমন্ত্রী বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ করেননি।
বক্তারা বলেন- ভিয়েতনামে কাজের নামে পাচার চক্রের সাথে বিএমইটি সহ অন্যান্য যে সব দফতরের লোক জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত বা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন কিছু আমরা জানতে পারিনি। তাঁরা বলেন- যেখানে দালালদের বিরুদ্ধে জুলাই মাসে RAB-3 যে অভিযান করেছে তার ধারাবাহিকতায় সব দায়ী রিক্রুটিং এজেন্সীকে আইনের আওতায় আনার কথা, সেখানে ভিকটিমদের বিরুদ্ধে দালালরা উল্টো মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করার অপচেষ্টা করছে, এমন লজ্জাস্কর তথ্য জানা যায়। তারা রীটের দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা, দালাল ও অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্টসহ এদের সহযোগী বিএমইটিসহ অন্যান্য সরকারী দফতরের সংশিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের আইনের আওতায় আনা এবং এই ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
লাইভ প্রচার হয় সোজা কথা ডটকম-এর ফেইসবুক পেজ ও Bangla Talks এর ইউটিউব চ্যানেলে।