আমি তখন কেবলই কুড়িগ্রামে এসেছি। ২০০৬ কি ০৭ হবে। এতদিন রংপুর-ঢাকা করেছি। তো আমি তেল-গ্যাস কমিটির ‘জাতীয় সম্পদ’ বুলেটিনটা বিক্রি করছি। একা পত্রিকা বিক্রি করার অভিজ্ঞতা ছিল। কতজন হকার মনে করে তুই-তোকারি করেছে। তাই কুড়িগ্রামের উকিল পাড়ায় গেছি। মানে কোর্ট এলাকায়।
কয়েকজন তরুণ উকিল। পত্রিকা সামনে বাড়িয়ে দিয়েছি। তারা পত্রিকাটি হাতে নিয়েছে কি নেয়নি মনে নাই। আমাকে জেরা শুরু করল। তখন আমি একটা সরকারি চাকুরি করি। ছুটি নিয়ে কাজটি করছিলাম। সেই পয়েন্ট ধরে শুরু করল। খোঁচাতে খোঁচাতে এক পর্যায়ে ঠাট্টা শুরু করল। যত্তসব বলে বিদায় করল। অথচ ওরা বয়সে আমার ছোটই হবে। সেদিন মনে হয়েছিল, ধরণি দ্বিধা হও!
জাফর উল্লাহ চৌধুরীর চুলগুলো দেখেছেন? কথা বলার সময় মুখের কোনায় থুথু দেখা যায়। কথাই কইতে পারে না। তোতলায়। ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের মত তোতলায়। শার্টের হাতা দুইটা কেমন আউলা-ঝাউলাভাবে গোটানো। আনস্মার্ট। আউলা-ঝাউলা সোনার টুকরা ছেলে আমাদের। ৭১’এ চলে যান। রৌমারীর ক্যাম্পের লুঙ্গিপরা মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি ভেসে উঠবে!
আর এই ছবির লোক কয়টাকে দেখেন কী স্মার্ট! স্যুটেড-ব্যুটেড আর পালিশড। ঠিক রাজার লোক।
জাফর উল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে ট্রল করা এই কয়জনকে দেখে আমার সেদিনের কথা মনে পড়ল। আনোয়ার হোসেন অভিনিত সিরাজউদ্দৌলা সিনেমার বীর সিরাজকে হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় ঠাট্টাকারীদের মনে পড়ল। এরা হল সেই নিকৃষ্ট নরাধম, যারা ক্ষমতাবানের জুতা চাটে।
এরাও হাসছে পলাশীর প্রান্তরে।
– নাহিদ হাসান
সভাপতি, নির্বাহী পরিষদ, রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ ও উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রাম