আ ফ ম রুহুল হকের নাম শুনেছেন? প্রখ্যাত চিকিৎসক। লীগপন্থী চিকিৎসক সংগঠন স্বাচিপের সভাপতি ছিলেন প্রায় এক দশক। ২০০৮এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি পান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। তারপর? তারপরের বিস্তারিত উত্তর না দিয়ে ৩টি তথ্য দেই- ১. মন্ত্রীত্বের পাঁচ বছরে তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছিলো ৭৮২শতাংশ, ২. তার পুত্র পরিণত হন বড় ব্যবসায়ীতে, মালিক হন ওষুধ কোম্পানির, ৩. সরকারপন্থী স্বাচিপ-এর নেতারাই তার বিরুদ্ধে ব্যপক দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। তার মন্ত্রীত্ব বাতিল হলেও তাকে আজও মাথায় তুলে রেখেছে আওয়ামী লীগ। তাই তিনি এখনও সংসদ সদস্য।
মোহম্মদ নাসিমকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। ৯৬-২০০১পর্যন্ত লীগের শাসনামনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডাক তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন এবং ব্যপক দুর্নীতির জন্য সমালোচিত হন। ২০১৪সালে তিনি পান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পাওয়ার পরই তিনি সরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিদর্শন শুরু করেন। ওইসব হাসপাতালে গিয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের আশ্বাস দেন। এরপর সরবরাহকারীর মর্জিমাফিক মেডিক্যাল যন্ত্রপাতির তালিকা নিয়ে হাজির হত সরবরাহকারীর প্রতিনিধি। আর নাসিম সাহেবের পিএস ফোন করে হাসপাতালের তত্ববধায়ককে বলে দিতেন স্বাক্ষর করে দিতে, ওই চাহিদাপত্র পাশ করানোর দায়িত্ব তার। কয়েক’ শো গুণ বেশী দামে মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি কেনার সূচনা হয় মোহম্মদ নাসিমের মন্ত্রীত্বের সময়। তার পিএস হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করে নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে গেছে। খুব বেশী দিন আগের কথা নয়, যুক্তরাষ্ট্রে নাসিমের এক ছেলের বিপুল সম্পত্তির তথ্য নিয়ে সরগরম ছিলো সোশ্যাল মিডিয়া। এদিকে মন্ত্রীত্ব গেলেও নিষ্পাপ নিষ্কলুষ নাসিম সাহেবকে মাথায় তুলে রেখেছে আওয়ামী লীগ।
নাসিমের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান জাহিদ মালেক। ২০১৯ সালে দায়িত্ব পাওয়া এই মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের নমুনা জাতি এখন দেখছে। স্বাস্থ্যখাতের ব্যপক দুর্নীতি পুরোদস্তুর শিল্প হয়ে উঠেছে। দায়িত্বশীলদের কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেই নেমে আসছে হয়রানি। সম্প্রতি নকল এন-৯৫ মাস্ক কাণ্ডে আলোচনায় এসেছেন এই মন্ত্রীর পুত্র।
এই তিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীই এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ্যখাতের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন, আসছেন। অন্য সকল মন্ত্রীর মত এই তিন মন্ত্রীকেও কিন্তু নেতৃত্ব দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
– আবু সাঈদ আহমেদ, লেখক ও সাংবাদিক