কোনো কারখানায় আক্রান্ত বেশি হলে সেটি কিছুদিন বন্ধ থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
মন্ত্রীর এ বক্তব্যের মানে আমরা ধরে নিতে পারি আক্রান্ত হবে ধরে নিয়েই কারখানাগুলো খোলা হয়েছে। শুধু আক্রান্ত বেশি হলে সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হবে। অবশ্য কতোদূর আক্রান্ত হলে বেশি আক্রান্ত বলে গণ্য হবে এটি উনি পরিস্কার করে বলেননি।
এটাই যদি সরকারের পলিসি হয় তাহলে সরকারি বেসরকারি অফিসসহ সকল বন্ধ প্রতিষ্ঠান খুলে দিন। কোন অফিসে বা প্রতিষ্ঠানে করোনার সংক্রমণ বেশি হলে সেটি কিছুদিন বন্ধ রাখা হবে। একদম সহজ সমাধান !
ঘরে থাকুন, সামজিক দূরত্ব মেনে চলুন এই আহবানের বিপরীতে এই হোল সরকারের আসল পলিসি। শ্রমঘন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলি একবার বন্ধ একবার খুলে দেবার সিদ্ধান্ত করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গিয়েছে যে কারণে সরকারি ছুটির মেয়াদ বেড়েই চলেছে। একমাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় খোলার পর করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আবারো পোশাক কারখানা বন্ধের দাবি উঠেছে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে গত বৃহস্পতিবার পাঠানো এক চিঠিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব সায়েমুল হুদা সামজিক সংক্রমণ ঠেকাতে কারখানা বন্ধের পাশাপাশি উপজেলার প্রবেশপথগুলো বন্ধ করার অনুরোধ জানান। চিঠির অনুলিপি তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন পোশাক কারখানা বন্ধ থাকা অবস্থায় সাভারে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কম ছিল। কারখানা খোলার পর থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিলো যেখানে ৮ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। এর মধ্যে ৬ জনই সাভার পৌর এলাকার উলাইল মহল্লার বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক।
দেশের অধিকাংশ গার্মেন্টসের পরিবেশ এমনিতেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি মুক্ত নয়। করোনার মহামারীর মধ্যে শর্ত মেনে সেটি নিশ্চিত করা যে সম্ভবপর নয়, তা স্বাস্থ্যমন্ত্রী না জানলেও উপজেলা কর্মকর্তার লেখা চিঠি থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে।
‘করোনা পরিস্থিতিতে শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে চালু রাখা’ বিষয়ে গতকাল রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন
“যেসব শ্রমিক এসে গেছেন, তাঁদের ‘লকডাউন’ সময়ে অবশ্যই এসব এলাকায় থাকতে হবে। কেউ যদি কোনো কারণে চলেও যান, তাহলে তাঁকে এলাকায় গিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।” – অর্থাৎ ঢিলেঢালা লকডাউনের মতই সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাব! নিয়ম-কানুন মানলে ভাল, না মানলেও কোন ক্ষতি নাই…….. সাবাস বাংলাদেশ! এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়……
এন আফরোজ রোজী: লেখক