নিজস্ব প্রতিবেদক
সে এক অবর্ননীয় ঘটনা। নিখোঁজের চারদিন পর চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারের খোঁজ মিলেছে। রোববার (১ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বড় কুমিরা এলাকায় রাস্তার পাশে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তার পাশে গোলাম সরোয়ারকে পাওয়ার পর স্থানীয়রা কুমিরার একটি দোকানে নিয়ে যায়।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক জানান, ‘কুমিরায় একটা লেকের পাশে উনাকে পাওয়া গেছে অক্ষত অবস্থায়। স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি থানাকে জানিয়েছেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে নিয়ে আসে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উদ্ধারের সময় গোলাম সরোয়ারের গায়ে সেন্ডো গেঞ্জি ও পরনে ছিল শুধু আন্ডারওয়্যার। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে নিয়ে যান একটি ডেকোরেটরে। সেখানে তাকে দোকানের ফ্লোরে অচেতন অবস্থায় শুইয়ে রাখা হয়। সেখানে জড়ো হন অনেক লোক। হাজির হন পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মীসহ অনেকে। এক পর্যায়ে গোলাম সরোয়ারকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার জন্য চেষ্টা করছিল স্থানীয় লোকজন। এ সময় সরোয়ার সবার পা জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে শুধু বলতে থাকেন, ‘ভাই, আমারে মাইরেন না। আমি আর নিউজ করব না।’
এ সময় লোকজন তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, তারা তাকে বাঁচাতে সহায়তা করছে।
পরিদর্শক সুমন বণিক জানান, বর্তমানে সরোয়ার অসুস্থ আছেন। তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তার জ্ঞান ফেরার পর কথা বলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
৭নং কুমিরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে খাল পাড়ে ফেলে দিতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে রাস্তার পাশে নূরুল আলমের ডেকোরেটর দোকানে রাখেন। তখন তিনি কিছুটা কথা বলতে পারছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ব্যাটারি গলির বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন সাপ্তাহিক আজকের সূর্যোদয়ের চট্টগ্রামের স্টাফ রিপোর্টার গোলাম সরোয়ার।
কোনো খোঁজ না মেলায় ওই দিন কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন সাপ্তাহিকটির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জোবায়ের সিদ্দিকী।
সরোয়ারকে উদ্ধারে সমাবেশ, পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাওসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন। এদিকে সরোয়ারকে কারা অপহরণ করেছে সে ব্যাপারে পুলিশ তাকে উদ্ধার করা পর্যন্ত কিছু জানাতে পারেনি। তবে এখন তাঁর অবস্থা ও কথোপকথনে এটা পরিষ্কার তাকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়েছে।