থানায় একটা অভিযোগ করতে গেলাম। মেয়ের প্রবাসী জামাই মেয়েকে ডিভোর্স না দিয়ে এবং মেয়ের অনুমতি না নিয়ে পুনরায় দেশে এসে চোরের মত বিয়ে করে বাইরে চলে গেছে। ডিউটি অফিসার পাঠালেন তদন্ত অফিসারের কাছে।তার দয়ার শরীর। অফিসার পড়ে দেখলেন দয়া করে। তারপর তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। এটা একটা অভিযোগ হলো! একটা পুরুষ সামর্থ্য থাকলে চারটা বিয়ে তো করতেই পারে। তদন্ত অফিসার এর বয়স আমার মেয়ের বয়সের চাইতে খুব একটা বেশি নয়। তাকে আমি পুরনো প্রজন্মের মানুষ বলে মনে করি না। এই প্রজন্মের মানুষ না ঠিক মানুষ না বলে বলতে হবে, দেখতে মানুষের মতোই। আমাকে বলল এটা একটা অভিযোগ হোলো! আমি বললাম সে তো আমার মেয়েকে ডিভোর্স দেয়নি, সে আমার মেয়ের অনুমতিও নেয়নি। তবুও বললো এটাও অভিযোগের কোনো বিষয় না। পুনরায় ডিউটি অফিসারের কাছে এলাম। বললাম তিনি অভিযোগ নিলেন না। ডিউটি অফিসার বললেন, আপনি সৎ মানুষ। তাই মিথ্যা বলেননি। আপনি যদি বলতেন, আপনি ওদের অনেক যৌতুক দিয়েছেন, সোনা গয়না দিয়েছেন তাহলে হয়তো এখন এটা অভিযোগ হতে পারতো। আমি বললাম, না আমি মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে আসব না। অফিসার বললেন, সত্য কথা দিয়ে অভিযোগ হয় না। আমি বললাম আমি মিথ্যা কথা দিয়ে অভিযোগও করতে রাজি না। তারপর চলে এলাম। কথাটা বলতাম না। লেখার খাতায় পড়েই থাকতো। পড়ে থাকত। পড়েই থাকতো। মামুনুল হক নিয়ে সবার মাতামাতি দেখে না বলে পারলাম কই! পুলিশকে দুষ্টের দমন করবে। পুলিশের চিন্তা-চেতনা যেখানে এইরকম সেইরকম ক্ষেত্রে মামুনুল হকের দোষ তো এমন বেশি কিছু না। তাছাড়া টাকা-পয়সা ওয়ালারা এসব বিনোদন হরহামেশা করেই থাকেন। তারা আবার ধর্মের কথাও বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। টাকার বিনিময়ে হজ করে এসে সদ্যপ্রসূত নবজাতকের মত নিষ্পাপ হয়ে যান। এরকমই যখন চিন্তাভাবনা তখন মামুনুল হক নিয়ে এত মাতামাতি আমার কাছে স্রেফ ন্যাকামিই মনে হচ্ছে। সময়ের অপচয় মনে হচ্ছে। যে সময় আমি মামুনুল হককে নিয়ে মাতামাতি করব সে সময় না হয় একটা কবিতা শুনবো। “তোমার চোখ এতো লাল কেন!” কিংবা “পরানের গহীন ভিতর” অথবা লিখব দু-চারটি লাইন। আমার কাছে যেটার মূল্য অনেক বেশি।
আমি হুজুগে মাতার আগে ভাবতে শিখেছি।