নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা থেকে
ঢাকাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) বলেছে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে, সহিংসতার ঘটনা ঘটলেই রাজনৈতিক দলগুলোর একে অন্যকে দোষারোপ করার মনোবৃত্তির ফলে প্রকৃত অপরাধীরা প্রকারান্তরে দৃষ্টির বাইরে চলে যায়, যার ফলে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করা যায় না। পরস্পরের দোষারোপের রাজনৈতিক সংস্কৃতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১(১) এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে সুষ্পষ্টভাবে নির্দেশ রয়েছে। হিন্দু জনগোষ্ঠীর শারদীয় দূর্গাপূজায় হামলার অর্থ হচ্ছে রাষ্ট প্রদত্ত অধিকার পালনে রাষ্ট নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমএসএফ মনে করে, এখন পর্যন্ত কোন সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার শেষ না হওয়া, হামলা প্রতিরোধ, হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ তাঁদের পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা, জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, দোষারোপের রাজনীতি এবং প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত না করে ঢালাওভাবে গ্রেফতার দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার প্রক্রিয়া জটিল করা হচ্ছে যা অগ্রহণযোগ্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।
এমএসএফ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের মাসিক মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদনে আরো বলেছে, অক্টোবর মাসে সবচাইতে উদ্বেগজনক যে ঘটনা ঘটেছে তা হলো সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব দূর্গাপূজা পালনকালে তাদের উপর সুপরিকল্পিত নিরবিচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। হিন্দু সম্প্রদায়ের সার্বজনীন দূর্গোৎসব চলাকালে কুমিল্লায় অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এবং তার জের ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদী ও সুবিধাভোগী গোষ্ঠী দেশের ১৯টি জেলার বিভিন্ন স্থানে পুজামন্ডপ মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতা ঘটিয়েছে। অপরদিকে পুলিশ-হামলাকারীদের মধ্যেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী অক্টোবর, ২০২১ মাসে পূজামন্ডপ ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ৫৩টি ঘটনা ঘটেছে, ৪১টি ঘরবাড়ি ও বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে। ১৩ থেকে ২০ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ৯ জন নিহত ও কমপক্ষে দুইশতাধিক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতরা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জন মুসলমান ও ৩ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
হামলা চলাকালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া যায় নাই বলে অভিযোগের বিষয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- ঘটনা শুরুর পর প্রশাসনকে উদ্বেগের কথা প্রকাশ করলে হিন্দু সম্প্রদায়কে জানানো হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। দ্রুত প্রতিমা বিসর্জনের জন্য তাগাদা দেয়া হয়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দশমীর দিন বিসর্জন দিতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কায় অষ্টমীর দিনই বিসর্জন দিয়ে সেখানকার দূর্গাপূজা শেষ করা হয়। প্রতিমা বিসর্জনের পরপরই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মন্দির স্থান ত্যাগ করলে হামলাগুলো সংঘটিত হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্যের বরাত দিয়ে রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়- অক্টোবর মাসের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড অব্যাহত রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের উপর সহিংসতার ঘটনা এই সময়ে কমেনি বরং অধিক সংখ্যায় ঘটেছে। সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা ও নির্বাচনী সহিংসতা ব্যাপকভাবে ঘটেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন চিন্তা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মতামত প্রকাশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করার মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি ও হামলা, কারা হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হতাহতের মতো ঘটনাও বন্ধ হয়নি। অপরদিকে গণপিটুনির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানবাধিকার লংঘনের এই ঘটনাগুলো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২১ টি মামলায় দুইজন নারীসহ শিক্ষক, সাংবাদিক, বাউল শিল্পী, একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ গ্রেফতার হয়েছেন ২১ জন। ফেইসবুকে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র ও কটূক্তির দশটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ১০ জন।
এ মাসে ৩৪৬টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৭৪টি, গণধর্ষণ ১৮টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৩টি, প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধষর্ণের শিকার হয়েছে ৭ জন। উল্লেখ্য যে ধর্ষণের শিকার ৭৭ জনের মধ্যে ৫২ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছে, অপরদিকে গণধর্ষণ এবং ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ৭ জনই শিশু ও কিশোরী রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা ২৬টি, যৌন হয়রানি ১৯টি ও শারীরিক নির্যাতনের ৪১টি ঘটনা ঘটেছে। এসময়ে ২১ জন কিশোরীসহ মোট ৮৩ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন, যা গত মাসের তুলনায় ১৯ জন বেশী। অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছে ১ জন কিশোরী। অপহরণের শিকার হয়েছে ১ জন শিশু ও ৩ জন কিশোরী অপরদিকে ৯ জন শিশু, কিশোরী ও নারী নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়াও আগষ্ট মাসে ৬ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৬৫ জন শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ১০ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছেন।
কারা হেফাজতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে চলেছে। একটি ঘটনায় এক জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। ১৩ অক্টোবর, ২০২১ তারিখে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারা গ্রামে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. আলমগীর (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। র্যাবের দাবি মো. আলমগীর ওরফে আলম, ডাকাত দলের সদস্য ছিল।
এ মাসে নির্বাচন-পূর্ব ও রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৭জন নিহত ও ৬৮ জন কর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অক্টোবর, ২০২১ মাসে সীমান্তে তিনটি হত্যাকান্ড, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাংলাদেশী সীমান্তবর্তী বাড়িতে হামলা ও দেশের তিন জেলাতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) কর্তৃক আটকের ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়-রাজশাহী সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে ধরা পড়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে ভরতমণ্ডল(৩৩) নামে ভারতীয় এক চোরাকারবারি। তার মরদেহ বিজিবির রাজশাহীর ১০ নম্বর পদ্মার চর সীমান্ত ফাঁড়িরএকটি পিলারের কাছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ’র) হাতে হস্তান্তর করা হয়। রাজশাহী সীমান্তে একবাংলাদেশি যুবক মো. মিঠুনের(২৫) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাজশাহীর-১ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয় মিঠুন চরে মোটরসাইকেলের রাইডার ছিলেন। ভারতীয় সীমান্ত থেকে প্রায়২০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মিঠুনের লাশ পড়ে ছিল। ২৬ অক্টোবর, ২০২১ তারিখ লালমনিরহাটের পাটগ্রামজগতবেড় সীমান্তে ভারতী সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলিতে রিফাত হোসেন (৩২) নামে এক বাংলাদেশি যুবকনিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে জগতবেড় সীমান্তে বিএসএফের কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।পরে সকালে সংলী নদীর লাভলুর ব্রিজের কাছ থেকে রিফাতের মরদেহ ভারতী সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নিয়েযায়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের সীমান্তে উত্তর কুটিচন্দ্রখানা নাখারজান গ্রামে আন্তর্জাতিক আইন অমান্যকরে ভারতীয় বিএসএফের সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশী বাড়িতে হামলা চালিয়ে অশালীনভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ির মালিক ও ২জন নারীসহ এক কিশোরকে লাঞ্ছিত করে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) জানায়, চোরাকারবারীদেরকে ধাওয়া করতে গিয়ে ভুলবশত তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এলাকাবাসী বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অবগত করলে বিজিবি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদজানায় এবং পরদিন সকাল ১০টা সীমান্তে পতাকা বৈঠকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ভুল স্বীকার করে। এছাড়া সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অনুপ্রবেশকালে ৭ জন ভারতীয় নাগরিকসহ ২২ জন বাংলাদেশী নাগরিককে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আটক করে। সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্তে অনাকাঙ্খিত ঘটনাসমূহের বন্ধে দৃশ্যমান কোন প্রকার তৎপরতা এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এমএসএফ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের মাসিক মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদনে আরো বলেছে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছয়টি ঘটনায় নয়জন সাংবাদিককে নানাভাবে হুমকি, একটি পত্রিকা অফিসে হামলা ও একজন নারী সংবাদিকসহ ছয়জন সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে যা ছিল উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। প্রতিবেদনে বলা হয়-ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে অবৈধ কিছু সংখ্যক বিড়ির বস্তা জব্দ করার বিষয় নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অস্বচ্ছতার বিষয়ে সংবাদের তথ্য সংগ্রহের পর রাতে দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, রাইজিং বিডির প্রতিনিধি মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল ও স্থানীয় পত্রিকা লোকায়নের নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানাকে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর জামিরুল ইসলাম গায়ের চামড়া তুলে ফেলার হুমকি দেন এবং সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।
প্রান্তিক চাষীদের গমের টাকা বিতরণে ব্যাংকে দূর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য চাইতে গেলে বাংলাদেশ প্রতিদিনের পঞ্চগড় প্রতিনিধি সরকার হায়দার, বাংলাভিশনের পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, ভোরের দর্পন ও দীপ্ত টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি গোফরান বিপ্লব, আমাদের সময়ের তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি এস কে দোয়েল, সকালের সময়ের তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি আতিকুজ্জামান শাকিলকে পঞ্চগড়ের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনই হাট শাখার এক কর্মকর্তা হেনস্থা ও হুমকি প্রদান করেন। গত ২৩ অক্টোবর ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হামলার শিকার হন সাংবাদিক মনি ইসলাম। হামলাকারীরা ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিকের মোবাইলফোন, মাইক্রোফোন ও হ্যান্ডি ক্যামেরা কেড়ে নেয়। হামলার শিকার হওয়া আহত নারী সাংবাদিক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান খান শনিবার বিকালে নলগাঁও নয়াপাড়া এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবাইয়া ইয়াসমিন তমা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সাংবাদিক খোরশেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার দৃশ্য ধারণ করতে থাকলে মিজানুর রহমানের নির্দেশে তার কর্মী-সমর্থকরা তার ওপর হামলা করে। এ সময় তাকে কিল-ঘুষি লাথি মেরে ভিডিও ক্যামেরা, দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন এবং পকেটে থাকা প্রায় চার হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
অপরদিকে বরিশাল নগরীর বটতলা এলাকায় অবস্থিত জেলা পরিষদের মার্কেটের পেছনে ‘দৈনিক দখিনের সময়’ পত্রিকা কার্যালয়ে ২ অক্টোবর সন্ধ্যারাতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে সম্পাদক আলম রায়হানসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে। আহত আলম রায়হানকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যান্য আহত সাংবাদিকেরা ছিলেন দৈনিক দখিনের সময়ের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার হাফিজ উদ্দিন ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ প্রতিনিধি মশিউর রহমান।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আলোচিত বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা ঢাকা প্রতিদিন ও নোয়াখালী প্রতিদিন পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জের প্রতিনিধি সাংবাদিক মো. নাসির উদ্দিনকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন। হামলার পর স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় নাসির উদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এমএসএফ মনে করে- জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার রক্ষায় সাংবাদিকেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন কিন্তু সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে যেভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে এবং তাঁদের যেভাবে হুমকি, হয়রানি ও শারীরিকভাবে আক্রমন করা হচ্ছে তা অগ্রহণযোগ্য এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য অশনিসংকেত।