একটু গভীর অভিনিবিষ্ট চিত্তে স্মৃতির আঙ্গিনায় ঘুরে দেখ তো পরিযায়ী পাখি! তুমি কী কিছু ফেলে গেলে অবচেতন ক্ষণে, দখিনার আঁচলের খোঁটে? তোমার গোপন প্রিয়া মধুরিমা এখন কেমন আছে? জান কী? জানবে কেমন করে! সাইবেরিয়ার বরফাচ্ছন্ন অঞ্চলে যার বসবাস, শীতল জলে যার বহে নিশ্বাস।
তোমার আমার পরস্পরের সম্পর্কের ডানা মেলার অনেক আগেই পুবাল পাথারে এলোপাতাড়ি হাঁটা বন্ধ হলো। তার কিছু নিরালম্ব স্মৃতি, শীত রাতের বরফগলা কান্না আজো কী তোমার কর্ণকুহরে প্রবেশ করে? বন্ধু, মনে পড়ে আউশের ক্ষেতের কচি পাতা সরিয়ে সরিয়ে দুজন হেঁটেছিলুম সূক্ষ্ম সংলগ্নতায়, কল্পনার অলীক ধারাপাতে, অদৃশ্য কুয়াশা ভেদ করে করে।
অনাগত ভবিষ্যতের সঙ্গী ভেবেছিলুম দুজন মনে মনে, নিতান্ত গোপনে, কত সহজে। তোমার হরিণ চোখের মুগ্ধ অনিমেষ দৃষ্টি ও চাঁদ বদনের হাসিখানি দেখে মনটা সঞ্চালিত হতো, কী এক হৃদয় বেদ্য মায়ায়! ওহে মায়াবী! মায়াবতী মনের অজান্তে তখনই অসহায় অন্তরটিকে নৈবেদ্য রূপে সঁপেছিলুম তোমার হৃদয় অলিন্দে।
রৌদ্রময় দিনের গুঞ্জনে দুটি ময়না যেন কুঞ্জবনে নবকিশলয়ের গোপনে নিঃশব্দে কত আলাপনে মেতেছি নিভৃতে নিরজনে।কতো যে মিষ্টিমধুর হাসি বিনিময়।কতো লগ্ন কেটে গেছে তন্দ্রাহীনতায় ; দুজনের তর্জনীর ছোঁয়ায় ছোঁয়ায়। অন্তহীন অপলক মুগ্ধতায়। সেসব সময়গুলো কী করে ভোলা যায়!গাছ,পাখি, নদী, বন, তরুলতা, তৃণ ও সূর্য জেগে ওঠে। ঝরনার উচ্ছলনে হেসে হয় লীন। হঠাৎ কাঁচের নির্মম পতন শব্দ। আমাদের অমীমাংসিত অনুভূতির অকাল প্রয়াণ। স্থবির হয়ে গেলো দুটি পাষাণ।
নাইট কুইন,
মাইজদী,
নোয়াখালী।
১৭.০১.২০২১.