এক ।।………
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই গর্ব করার মতো উদ্ভাবন কে গলা টিপে মেরে ফেলার জন্য শুরু থেকেই তাঁদের পায়ে শিকল লাগানোর চেষ্টা চলছিল। দরখাস্ত জমা দেয়ার দশদিন পর উত্তর না পেয়ে গণস্বাস্থ্যের একজন কর্মী খোঁজ নিতে গেলে তাঁকে সারাদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বসিয়ে রেখে বিকাল চারটায় বলা হয় ” আপনারা কি দরখাস্ত দিয়েছিলেন ? কাগজটা তো দেখছিনা আজ চলে যান পরে যদি খুঁজে পাই তাহলে আসবেন ‘।
একই ভাবে বিদেশ থেকে কাঁচা মাল আমদানি করতে গিয়ে নানান উছিলায় দেরি করিয়ে দেয়া হয় । ল্যাবে যখন কিট বানানো হচ্ছিল তখন বৈদ্যুতিক গোলযোগ সৃষ্টি করে ভোল্টেজ উঠানামা করিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে প্রচুর কাচামাল নষ্ট করে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয় ।
এ ছাড়াও প্রকাশিতব্য নয় এমন আরো অনেক ঘটনা ঘটিয়ে
জাফর উল্লাহ কে দমানোর চেষ্টা করা হয় এবং হচ্ছে ।
সেই পরিস্থিতিতে ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী দেশবাসীকে জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিট হস্তান্তর করার আয়োজন করে সঠিক কাজটি ই করেছেন । এতে অন্তত এখন দেশবাসী জানতে পারছেন যে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা সনাক্তকরণ কিট নিয়ে সরকার তথা ওষুধ প্রশাসনের ভুমিকা কি ।
দুই।। অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কেউ আসেনি । বলা হচ্ছে এটা তো অনুমোদিত নয় । তাই আমরা যেতে পারছিনা । প্রস্ন হচ্ছে তা কিন্তু অনুষ্ঠানের আগেই জানিয়ে দেয়া যেতো । কিন্তু তা বলা হয়নাই।একবার ভেবে বলুন তো এই ধরনের বৈশ্বিক বিপদজনক পরিস্থিতিতে জরুরী বিবেচনায় যা অন্য দেশ গুলো করে সেই রকম ভাবে যদি সরকার প্রশাসন শুরু থেকেই নিজেরা উদ্যোগী হয়ে এই কিট আরো দ্রুত গতিতে বানিয়ে সরবরাহ করতে পারতো তাতে কি সাত আসমান জমিন মাথার উপড়ে ভেঙ্গে পড়তো ? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি কি ধ্বংস হয়ে যেতো ? নাকি দেশের মুখ উজ্জল হতো ? ভাবুন এবং বিবেচনায় রাখুন ।
তিন ।। এই রকম নিজস্ব উদ্ভাবন কিন্তু দুনিয়াতে এটাই প্রথমনয় । ইরানও তাঁদের মতো করে কিট উদ্ভাবন করে নিজ দেশে করোনা পরীক্ষা করছে । তবে আমাদের গণস্বাস্থ্যের এটা ওদেরটার চেয়েও খরচ কম এবং কম সময় লাগে । ফলে এক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে ।
চার ।। আজ রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন অধিদদপ্তরের কার্যালয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীলসহ তিনজন এটি জমা দিতে যান। তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর তা গ্রহণ করেনি’।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিনজনের একজনকে ওষুধ প্রশাসনের অফিসেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি । সরাসরি ঘুষ চাওয়া না হলেও করোনা পরীক্ষার কিট নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে নানা অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে বিষয়ে ডাঃ জাফর উল্লাহ বলেন, ‘গত ৪৮ বছরে গণস্বাস্থ্য কাউকে ঘুষ দেয়নি, দেবে না। গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কিট (ব্যবহারযোগ্য হয়ে) আসুক আর না আসুক, কাউকে ঘুষ দেব না।
আপনার আল্লার দোয়াই লাগে আপনার যদি দেশের জন্যে বিন্দুমাত্র ভালবাসা থাকে তাহলে এইবার বলুন জাফর উল্লাহ চৌধুরী কোথায় ভুল করেছে ? দেশবাসীকে জানিয়ে হস্তান্তর অনুষ্ঠান কি ভুল হয়েছিল ?
পাঁচ ।। তাহলে একাত্তর টিভি সহ একশ্রেণীর মুখচেনা বর্ণচোরা গোষ্ঠী কেন তাঁর পেছনে লেগেছে ?
এর কারন স্পষ্ট । এরা হচ্ছে শাসক গোষ্ঠীর কাছ থেকে নানা ভাবে সুবিধা গ্রহণ কারী একশ্রেণীর নিকৃষ্ট দালাল । নিজেদেরকে পণ্ডিত সাজিয়ে মিডিয়া এবং ফেসবুকে একধরনের ফালতু পাঠশালা খুলে বসেছে। এরা সাধারনত সরাসরি সরকারের সমর্থনে কথা বলেনা । বলে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে । আর মওকা মতো গণতন্ত্র মানবাধিকার গুম জুলুম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইলেকশন এবং মধ্যরাতের ইলেকশনের যারা বিরোধিতা করেন তাঁদেরকে টার্গেট বানিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করে । এটাই এদের কাজ ।
জাফর উল্লাহ চৌধুরীও সেই কারনেই এদের টার্গেট । তাই আমাদের উচিত হবে ওই দালাল গোষ্ঠীর পাঠশালায় গিয়ে অহেতুক তর্কাতর্কি না করে দেশপ্রেমের ঐতিহাসিক ঝাণ্ডা ঊর্ধ্বে তুলে ধরা । সত্যের পক্ষে অবিচল থাকা ।
এই সংকট একদিন কেটে যাবে । গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের জাণ্ডা উড়িয়ে আমরা এক নতুন পৃথিবীতে নতুন ভাবে জেগে উঠবো । প্রিয় বাংলাদেশ আমাদেরই থাকবে । জাফর উল্লাহ্রা সেই ঝাণ্ডাই বহন করছেন । আমরাও সেখানেই থাকবো ।
আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি মানুষ কখনো পরাজিত হয়না ।। ভাল থাকবেন ।।
(২৬.০৪.২০২০ ফেইসবুক পোস্ট)
– আনোয়ার হোসেন মুকুল, সদস্য নাগরিক ঐক্য জাতীয় কমিটি।