চিকিৎসকরা মানবিকভাবে পরিষেবা দিলেও অনেক ক্ষেেত্রে পরিচালক গোষ্ঠীর নীতির ফলে ভুল বার্তা পৌঁছায়। চিকিৎসক-রোগী সম্পর্ক তখন তিক্ত হয়ে ওঠে। ‘এই অনাচার’ বন্ধের আশু প্রয়োজন। এই অভিমত ব্যক্ত করেন ডাঃ মালতী টুডু। এ জন্য জনমত তৈরির প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি করেন। ড. অনাদি কুণ্ডু তাঁর বক্তব্যে বলেন, বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় চিকিৎসকদের মালিকপক্ষ টার্গেট বেঁধে দিয়ে থাকেন। আর সেই টার্গেট-এর লক্ষ্য নিয়ে চলে চিকিৎসা তার ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল বেসরকারি হাসপাতালে তৈরি হয়। মৃতদেহ আটকে বিল আদায় করা হয়। এছাড়া পিআইডি সাহস, অন্তর্লীনা চাইল্ড কেয়ারের পক্ষ থেকে স্বপন মণ্ডল গোটা বিশ্বে টেলিমেডিসিন পরিষেবা কিভাবে মানুষকে চিকিৎসা পৌঁছে দিচ্ছে তার পরিসংখ্যান তুলে বলেন, আমরা আমাদের স্বল্প সামর্থ্য নিয়ে সেই পরিষেবা পৌঁছে দেবার জন্য ২২ জন চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা চালু করেছি। এর প্রসার ঘটাতে পারলে বহু সাধারণ মানুষ উপকৃত হতে পারেন। লন্ডন থেকে সাংবাদিক ও মনোবিদ নাজমূল হোসেন নাজমূল আবেগমথিত কণ্ঠে চিকিৎসার অনাচারের এক করুণ চিত্র তুলে ধরেন। করোনা আবহে তথাকথিত উন্নত দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন খোদ লন্ডন শহরে অ্যাম্বুলেন্স ফোন করলে আসতে সময় লাগে ৩-৪ ঘন্টা। চিকিৎসা ব্যবস্থা বলতে যা রয়েছে তা একটি কংকালসার চেহারা।
বনগাঁ থেকে বিশিষ্ট সমাজকর্মী পঙ্কজ রায় বাইপাসের জন্য রুবি হাসপাতাল ৪ লক্ষ টাকার প্যাকেজ বলে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা আদায় করে ভুল চিকিৎসায় তাঁর বোনের মৃত্যুর করুণ কাহিনী তথ্যসমৃদ্ধ ভাষায় ব্যক্ত করেন। তিনি ১৩ জন চিকিৎসক ও ৭ জন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেষর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন। এছাড়া চিকিৎসায় অনাচার বন্ধে আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বরূপ চক্রবর্তী, অনিন্দ্য বিশ্বাস, অচিন্ত্য ঘোষ, শেলি বাগ, প্রিয়াঙ্কা গোস্বামী, বির্বতন ভট্টাচার্য, তহমীনা খাতুনরা। সভার শেষলগ্নে পিআইডি সাহস ও জনস্বাস্থ্য স্বাধিকার মঞ্চের পক্ষে সভাপতি ডাঃ দেবপ্রিয় মল্লিক বলেন, চিকিৎসক হল রোগির জন্য। বেসরকারি হাসপাতালের তাবেদার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বলেন জনস্বাস্থ্য আন্দোলনকে প্রসারিত করতে না পারলে রোগীর স্বার্থ রক্ষা হবে না। তিনি স্পষ্টভাষায় বলেন, আমরা রোগির পক্ষেে, চিকিৎসক শপথ নিয়ে থাকেন রোগির স্বার্থ দেখার জন্য। রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে চিকিৎসার অধিকার দেওয়ার জন্য। সংবিধানে স্বাস্থ্যের অধিকারকে মৌলিক অধিকার দেওয়ার জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।.
সঞ্চালক সাংবাদিক সুকুমার মিত্র বলেন, সমাজ ব্যবস্থা পাল্টানোর আগে দেশটাকে কু-সংস্কারের দিকে মোড় ঘোরানোর জন্য যে চেষ্টা চলেছে তার বিরুদ্ধে আশু আন্দোলন প্রয়োজন। কুসংস্কারমুক্ত সমাজই পারে মানুষের অধিকার আন্দোলনকে জোরদার করতে। আগামী দিনে পিআইডি সাহস ও জনস্বাস্থ্য স্বাধিকার মঞ্চের কর্মসূচিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।