জয়পুরহাটের প্রশাসন করোনাভাইরাস মোকাবেলায় রেকর্ড সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।
ঘটনা হইলো, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ প্রশাসনের উদ্যোগে ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটিন’ নামে একটা তামাশা শুরু করেছে। করোনা ভাইরাস চিকিৎসা নিয়ে ফেসবুকে সামান্য কমেন্ট করার কারণে, বেছে বেছে লোকজনদের বাড়ি থেকে পুলিস তুলে নিয়ে আসছে। গত ২ দিনে এরকম ৫ জনকে তুলে নিয়ে গেছে প্রশাসনের লোকজন। এদের বাড়ি আক্কেলপুর, তিলকপুর ও ক্ষেতলাল উপজেলায়। প্রশাসনের অভিযোগ ভূক্তভোগিরা ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় এসেছে।
কয়েকজনের সন্ধান আমি নিশ্চিত জানি, যারা কমপক্ষে ২০ দিন আগে ঢাকা থেকে এলাকায় এসেছে। ৫ জনের মধ্যে ৩ জন এলাকায় এসেছে এক মাসেরও অধিক সময় আগে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নমুনা নিয়ে গেছে আজ, জানানো হয়েছে নমুনায় করোনা পজেটিভ আসলে অন্যত্র স্থানান্তর করবে। আর নেগেটিভ হলে এই কেন্দ্রে আরও ৩ সপ্তাহ আটকে রাখা হবে।
যে কেন্দ্রে ভূক্তভোগিদের আটকে রাখা হয়েছে সে কেন্দ্রে শোবার খাট থাকলেও নেই কোনো মশারি। টয়লেট বেসিনে কোনো সাবান, স্যানিটাইজারও নাই। ময়লা দূর্গন্ধযুক্ত টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য।
কোয়ারেনটিনের নামে আটকে রাখা ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে ল্যাপটপ. সাবান, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, ব্যবহৃত কাপড়চোপড় পর্যন্ত আনতে বাধা দেয়া হচ্ছে। কয়েকজনের পরিবার এসব জিনিশ ওই কেন্দ্রে দেয়ার জন্য আসলেও প্রশাসন তাদের সাথে দূর্বব্যহার করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু দেয়া যাবে না বলে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। ভূক্তভোগীদের পরিবারের সূত্রে জানতে পেরেছি ফেসবুকে বিভিন্নজনের পোস্টে লাইক কমেন্ট দেয়ার অপরাধেই কোয়ারেনটিনের নামে তাদের আটকে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলার নামে আওয়ামী সরকার ও তার প্রশাসন দেখছি বিরুদ্ধমত দমনের উৎসবে নেমেছে। করোনাভাইরাস বহনকারীদের রাস্তাঘাটে ভগবানের ষাঁড়ের মতো ছেড়ে দিয়ে ‘সুস্থ’ (আমার ধারণা) লোকজনদের আটক করে, তাদের সাথে চোর-ডাকাত-খুনিদের মতো, কয়েদিদের মতো আচরণ করা দেখে আমি সত্যিই অবাক ও বিস্মিত। করোনা মহামারীর এই সংকটময় মূহুর্তে জনগণের সাথে কীরকম আচরণ করা উচিত সে ভব্যতাটুকুও প্রশাসনের নাই। জয়পুরহাট প্রশাসনের এরকম আচরণে আমি সত্যিই অবাক।
জয়পুরহাটের যেসব সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বন্ধুরা আছেন, আপনারা বিষয়টি অনেস্টলি ফলোয়াপ করবেন আশাকরি।
জোবায়েন সন্ধি : জার্মান পেনের ফেলো লেখক, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।