স্ট্রেইট ডায়ালগ প্রতিবেদন: দেশে যখনই করোনা পরিক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আক্রাণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তখনই খুলে দেয়া হলো পোশাক কারখানা । প্রথমে বলা হলো নিরাপদ পরিবেশে কারখানা গুলোতে কাজ করবে কর্মীরা। কিন্তু সেটা শুধুই কথার কথা ছাড়া আর কিছুই না। এদিকে পোশাক শ্রমিকদের একটি বড় অংশ শনিবারই (২ মে) কাজে যোগ দিয়েছেন। দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে নতুন করে আরও ৬১টি পোশাক কারখানায় প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিলেন।
এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫০টি এবং বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত ১১টি পোশাক কারখানা রয়েছে। তবে এসব কারখানায় স্বাভাবিক সময়ের এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। এ তিন ভাগের এক ভাগ শ্রমিকও ৫০ হাজারের কম হবে না বলে জানিয়েছেন পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) কর্মকর্তারা।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পোশাক কারখানা পরিচালনা করা যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার (৩ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা পরিস্থিতিতে শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে চালু রাখা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
চট্টগ্রামের বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ২৮০ কারখানার মধ্যে ১৯০টি কারখানা চালু রয়েছে। বাকি কারখানাগুলো বিভিন্ন সময় থেকে বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত (বিকেএমইএ) ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির আগে ১০০টি কারখানা চালু ছিল। এর মধ্যে শনিবার চালু হওয়া ১১টিসহ ৫৭টি কারখানা চালু হয়ে গেল পুরোদমে।
শিল্প পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের তিনটি ইপিজেডসহ বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠান রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার মধ্যে ২৬ এপ্রিল চট্টগ্রামে ৪১২টি কারখানা চালু হয়। এর মধ্যে ২৫৫টি পোশাক কারখানা। এর পরের সপ্তাহে ২ মে শনিবার পর্যন্ত খোলা কারখানার সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮১টি। এর মধ্যে ৩৭৯টিই পোশাক কারখানা। যদিও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেন সীমিত পরিসরে এসব কারখানা কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে বিকেএমইএ সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বিকেএমইএ সদস্য প্রতিষ্ঠানের ১১টি কারখানা শনিবার খোলা হয়েছে। এখানে শ্রমিকের সংখ্যা হতে পারে ৬-৭ হাজার। কারণ সব শ্রমিক কাজে যোগ দেয়নি।’
বিজিএমইএ চট্টগ্রামের পরিচালক মোহাম্মদ আতিক বলেন, ‘অনেক শ্রমিক বাড়িতে চলে গেছেন। তাই কাজে যোগ দিতে পারছেন না। আবার মালিকপক্ষও তাদের জোরাজুরি করছে না কাজে আসার জন্য। কারণ সরকারি নির্দেশনা হচ্ছে যত কম সংখ্যক শ্রমিকের উপস্থিতিতে পারা যায় তা দিয়ে কারখানা চালাতে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির আগে যেসব কারখানা চালু থাকা অবস্থায় বন্ধ রাখতে হয়েছে সেগুলো সবই খোলা রয়েছে। সুতরাং বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত কোন গার্মেন্টস করোনা পরিস্থিতির জন্য আর বন্ধ নেই।’
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আরও দুজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭৭ জনে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৬৫ জন। এতে দেশে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল নয় হাজার ৪৫৫ জনে।
রোববার (৩ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।