ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীন থেকে শুরু হলেও জানুয়ারির শেষে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে করোনাভাইরাস। তিন মাসের মাথায় গত ২ এপ্রিল ১০ লাখ ছাড়ায় করোনা শনাক্ত। ১৫ এপ্রিল এটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
গত রোববার জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় তাদের হালনাগাদ তথ্যে এ কথা জানিয়েছে। এ সময় পর্যন্ত করোনায় বিশ্বজুড়ে প্রাণ গেছে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৬ জনের। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২৫ দিনে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ১৫ এপ্রিল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ছুঁয়েছিল। এই হিসাবে দিনে গড়ে রোগী শনাক্ত হচ্ছে ৮০ হাজার করে। গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষদিকে চীনের উহানে এই ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি শনাক্ত হয়।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সিস্টেম সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (সিএসএসই) তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪০ লাখ ২৪ হাজার ৯ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩১১ জনের। আর ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৪ জন।
সিএসএসই’র তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ৭৮ হাজার ৭৯৫ জন। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বিশ্বে সর্বোচ্চ ১৩ লাখ ৯ হাজার ৫৫০ জন। মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩১ হাজার ৬৬২ জন। আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৫২৫ জন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইতালিতেও মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৯৫ জন। আর মোট আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ২৬৮ জন।
ইউরোপেরই অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে মৃতের সংখ্যা যুক্তরাজ্য ও ইতালির চেয়ে কম হলেও আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। স্পেনে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৮ জন। অন্যদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা স্পেনের কাছাকাছি। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৩১৩ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮২ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়া নভেল করোনাভাইরাস এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৮৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যে চীন থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি সেই চীনে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক হিসাবে মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ তুলনায় বেশ কম। এমনকি গত বেশ কয়েকদিনের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে মৃত্যুর কোনো তথ্য নেই। রোববার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা আগের মতো ৪ হাজার ৬৩৭ জনেই স্থির রয়েছে। তবে দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে দেশটিতে শনাক্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৯৯০ জন।
বিশ্বজুড়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা এখন ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৫৩। হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হালনাগাদ তথ্য বলছে,সবচেয়ে বেশি সুস্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—দুই লাখ ১২ হাজার ৫৩৪ জন। সুস্থ হয়ে ওঠার তালিকায় প্রথম দিকে থাকা অন্য দেশগুলো হলো: জার্মানি (১,৪৩,৩০০), স্পেন (১,৩৩,৯৫২), ইতালি (১,০৩,০৩১) ও তুরস্ক (৮৯,৪৮০)।