ডেস্ক রিপোর্ট: ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রেখে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকালে সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে।যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য রেকর্ড জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অনুদান ব্যতীত ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি জিডিপির ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই ঘাটতি ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকাল সোয়া ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট বক্তব্য শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ এক বৈঠকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর আগামী অর্থবছরের এই প্রস্তাবিত বাজেটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করেন।
বাজেটের প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। ২০২০-২১ অর্থবছরের মোট জাতীয় বাজেট বরাদ্দের ১১.২৩ শতাংশ সরকারের সুদের অর্থ পরিশোধে ব্যয় করতে হবে। যার পরিমাণ ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের মোট জাতীয় বাজেট বরাদ্দের ১১.২৩ শতাংশ সরকারের সুদের অর্থ পরিশোধে ব্যয় করতে হবে। যার পরিমাণ ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৭.৯ শতাংশ।
পরিচালন ও অন্যান্য ব্যয়ের জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য বরাদ্দ হয়েছে দুই লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ঋণদান এবং অন্যান্য ব্যয়ের জন্য দিতে হবে চার হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ০.৮৪ শতাংশ।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক অবকাঠামোগত কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ প্রস্তাবিত ব্যয় এক লাখ ৫৫ হাজার ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৭.৩৮ শতাংশ। এর মধ্যে মানবসম্পদ খাতের (শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সম্পর্কিত খাত) জন্য বরাদ্দ হবে এক লাখ ৪০ হাজার ২২২ কোটি টাকা।
‘ভৌত অবকাঠামো খাতের জন্য এক লাখ ৬৭ হাজার ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২৯.৪০ শতাংশ। এর মধ্যে সামগ্রিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে ৬৯ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা, সামগ্রিক যোগাযোগের জন্য ৬১ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা এবং বিদ্যুত খাতে ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে,’ বলেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সাধারণ পরিষেবাগুলোর জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২৪.৬৯ শতাংশ। এছাড়া, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) প্রকল্প, বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি ও ইক্যুইটি বিনিয়োগ বাবদ ৩৬ হাজার ৬১০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ৬.৪৫ শতাংশ।
এই বাজেটের মাধ্যমে ভবিষ্যতের কাঙ্ক্ষিত অর্থনেতিক ভিত রচনার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।