সোজা কথা ডটকম
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
সোজা কথা ডটকম
No Result
View All Result

করোনা বদলাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারা

ইকোনমিস্টের বিশ্লেষণ

ডেস্ক রিপোর্ট by ডেস্ক রিপোর্ট
শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ | ৮:৪৭ অপরাহ্ণ
in বিশ্ব, মতামত, লিড নিউজ, সংবাদ শিরোনাম, স্বাস্থ্য
0
করোনা বদলাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বিশ্বের অর্থব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশ্ব শাসন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এক করোনা সেই পটও পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে বিশ্ব অর্থব্যবস্থার। করোনায় পরিবর্তি অর্থনীতির ইতিহাসে শুরু হতে পারে এক নতুন অধ্যায়ের। করোনা মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দেশের ভেতরের সমস্যাই ঠিকমতো সমাধান করতে পারছে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে তাদের বৈশ্বিক নেতৃত্ব নিয়ে। আর যুক্তরাষ্ট্রের এমন দুর্বলতম অবস্থার সুযোগ নিতে যাচ্ছে চীন। বেইজিং হয়তো রাতারাতি ওয়াল স্ট্রিটের সমকক্ষ হতে পারবে না। তবে এশিয়ার এ পরাশক্তি বিশ্বকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে তারা কী করতে সক্ষম। এসব নিয়ে বিশ্লেষন করেছে ইকোনমিস্ট।

 

বিশ্বে পরিবর্তনের শুরু

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বিশ্ব অর্থব্যবস্থার শাসক। বৈশ্বিক অর্থনীতির চার ভাগের একভাগই তাদের দখলে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হিসাব হয় মার্কিন ডলারে। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার ৮০ শতাংশেই ডলার ব্যবহৃত হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতার বিশাল এক অংশ ধরা রয়েছে ওয়াশিংটনের হাতে। অর্থের প্রবাহ যাদের নিয়ন্ত্রণে, দিন শেষে তারাই রাজা হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে করোনা মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার সিংহাসনে ভাগ বসাতে চলছে চীন।

 

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ভারসাম্য আনা, অর্থাৎযুক্তরাষ্ট্রের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। ধীরে ধীরে সেই জায়গাটাই দখল করতে যাচ্ছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি তাদের। ১০ বছর ধরেই চীনের ব্যাংক খাত এগিয়ে চলেছে স্থিরভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর অবস্থা স্থিতিশীল, ইউরোপের ব্যাংকগুলোর সম্পদ কমছে, সেখানে বিপরীত গতিতে চীনা ব্যাংকগুলো। তাদের সম্পদ এখন ইউরোপ-আমেরিকার ব্যাংকগুলোর চেয়েও বেশি। তবে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এখনও অনেকটাই চীনকেন্দ্রিক। আন্তর্জাতিক লেনদেনের মাত্র ৭ শতাংশ রয়েছে চীনা ব্যাংকের হাতে। ফলে বিপুল সম্পদ সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারায় তাদের ততটা প্রভাব নেই।

তবে এ দৃশ্য পাল্টাতে শুরু করেছে। চীনের ব্যাংকগুলো বাইরের দেশেও কার্য্যক্রম বাড়াতে শুরু করেছে। বিশ্ববাজারে নিজেদের মুদ্রার গুরুত্বও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউয়ানে লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করছে তারা। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মাইনিং কোম্পানি রিও টিন্টো গত বছর প্রথমবারের মতো তাদের চুক্তি ইস্যু করেছে ইউয়ানে।

 

করোনা মহামারির কারণে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব আরও বাড়ছে। বিশ্বের সঙ্গে মহামারি নিয়ন্ত্রণে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছে, বিভিন্ন দেশে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য উপকরণ পাঠাচ্ছে তারা। ইতালিকে ৩০ টন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, স্পেনকে পাঁচ লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক পাঠিয়েছে চীন। উহানে সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে অন্যতম নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে চীন। বেশকিছু দেশকে ঋণের কিস্তি পরিশোধে বাড়তি সময় দিয়েছে তারা। করোনার ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণায়ও বহুদূর এগিয়েছে দেশটি।

মহামারি নিয়ন্ত্রণে চীনের দারুণ সক্ষমতা এবং তাদের অর্থনীতির আকার বৃদ্ধির গতি দেশটিকে নিরাপদক্ষেত্র হিসেবে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করছে। মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে, বন্ডের দরপতন হয়েছে ব্যাপকহারে, সেখানে অনেকটাই স্থিতিশীল চীনের বাজার।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্ড বাজার চীনের। করোনা প্রমাণ করে দিয়েছে, বড় ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা রয়েছে এর, যা উদীয়মান বাজারগুলোতে সম্ভব নয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, চীনা অর্থনীতির এত সহজে পতন হচ্ছে না।

শুধু বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণই নয়, চীন বদলে দিতে শুরু করেছে বৈশ্বিক লেনদেন ব্যবস্থাও। বর্তমান ব্যবস্থায় একচ্ছত্র আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রের। এর পেছনে বড় অবদান সুইফটের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থ ট্রান্সফারিং নেটওয়ার্ক হিসেবে এটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তবে যেহেতু সুইফটের বেশিরভাগ লেনদেনই হয় ডলারে, তাই সেগুলো নিউইয়র্কের ব্যাংক ঘুরে তারপর যায় মূল গন্তেব্যে। বিশ্ব অর্থনীতিতে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে এ পদ্ধতির ফায়দা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্রিমিয়া আক্রমণের পর থেকেই সুইফট সিস্টেম থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় রয়েছে রাশিয়া। ২০১৮ সালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বাদ পড়েছে ইরানি ব্যাংকগুলো।

বেলজিয়ামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুইফট নিরপেক্ষ কাজ করার কথা থাকলেও তাতে বাধ সেধেছে যুক্তরাষ্ট্র। কথামতো না চললে সুইফটের ওপরই নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। এটি মিত্র দেশগুলোর জন্য আপত্তিকর হলেও তাতে থোড়াই কেয়ার যুক্তরাষ্ট্রের।

চীন সুইফটের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাতে না পারলেও বিকল্প লেনদেন পদ্ধতি বের করে নিয়েছে তারা। বেশিরভাগ গ্রাহকই লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন জায়ান্ট ভিসা ও মাস্টারকার্ডের ওপর নির্ভরশীল। তবে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বেশ কয়েকটি অ্যাপ তৈরি করেছে; যা গোটা লেনদেন ব্যবস্থাকেই বদলে দেবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের বদলে গ্রাহকরা ‘ডিজিটাল ওয়ালেট’-এ লেনদেন করতে পারবেন। পার্কিংয়ের জরিমানা থেকে শুরু করে ট্যাক্সির বিল পর্যন্ত যেকোনও কিছুই পরিশোধ করা সম্ভব এর মাধ্যমে। ফলে ব্যাংকিংয়ের বদলে এক বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের বৈশ্বিক গতিবিধি বদলে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে কিছু কোম্পানির হাতে এত বেশি ক্ষমতা চলে যাচ্ছে যে চীন সরকারও তাদের ভয় করছে। গত বছর চীনা ভোক্তারা মোবাইলের মাধ্যমে ৪৯ ট্রিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করেছে। আর প্রধান দু’টি চীনা কোম্পানি- টেনসেন্ট ও অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল তাদের এ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। দু’টি কোম্পানিরই গ্রাহক সংখ্যা শত কোটির বেশি। করোনা মহামারিতে তাদের চাহিদা আরও বেড়েছে। মানুষজন এখন ভিড় এড়িয়ে চলছে। তারা আরও বেশি বেশি অনলঅইনে কেনাকাটা সারছেন। আর এটি সম্ভব হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পেমেন্টে সিস্টেমের কারণেই।

টেনসেন্ট ও অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল ইতোমধ্যে চীনের বাইরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়াতে শুরু করেছে। অ্যান্টের অ্যাপ ‘আলিপে’ অন্তত ৫৬টি দেশ ও অঞ্চল সাদরে গ্রহণ করেছে। অন্যান্য ডিজিটাল ওয়ালেট কোম্পানিগুলোও তাদের প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ছয়টি ইউরোপীয় মোবাইল ওয়ালেট কোম্পানি আলিপে’র কিউআর ফ্যরম্যাট ব্যবহার করছে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন প্রভাববৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট চিন্তার কারণ রয়েছে। তারা দিনে দিনে আরও বড় হচ্ছে। এছাড়া চীন এমন এক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলছে; যা মার্কিন কোম্পানি, মুদ্রা বা ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়। দিনশেষে দেখা যাচ্ছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে দু’টি পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে; যুক্তরাষ্ট্র-শাসিত ও চীন-শাসিত। এ দুই ব্যবস্থাকে সবসময় একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে হবে এমনটা নয়। বরং তারা একে অপরের পরিপূরকও হতে পারে। আর এমনটি হলে তো ভালো, নাহলে বিশ্বে অর্থনৈতিক লেনদেন আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

কমেছে চীনা বিনিয়োগ

যদিও চীনে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ অনেকটাই স্থিতিশীল ছিলো এই বাণিজ্য যুদ্ধের সময়েও, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে চীনা বিনিয়োগ কমেছে ব্যাপকভাবে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা কোম্পানির বিনিয়োগ ২০১৬ সালে ছিলো পাঁচ হাজার চারশ কোটি ডলার আর ২০১৮ সালে এটি হয়েছে নয়শ সাত কোটি ডলার।

 

আর ২০১৯ সালের প্রথম অর্ধেকে এটা ছিলো মাত্র আড়াইশ কোটি ডলার।চীনা কোম্পানিগুলো বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনাকে নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বিনিয়োগে অনিচ্ছা প্রকাশ করে।এছাড়া বিনিয়োগকে কঠোর নিরীক্ষার আওতায় আনার যুক্তরাষ্ট্রর নীতি ও চীনের মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ শক্ত করাও ছিলো এর উল্লেখযোগ্য কারণ। তবে করোনার সময়ে যেভাবে চীনা অর্থনীতি এগোচ্ছে তার ওপর নির্ভর করছে আগামীর দিনে বিশ্ব অর্থব্যবস্থার শীর্ষ আসটি কার দখলে যাচ্ছে।

 

বাণিজ্য সংঘাত কি ক্ষমতা পালাবদলের ইঙ্গিত দেয়?

এথেন্সের ঐতিহাসিক দার্শনিক থুকিডাইডিস  তার বিখ্যাত বই “হিস্ট্রি অব পেলোপনেশিয়ান ওয়ার” বইতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও পরাশক্তির মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন, যা আধুনিক কালেও  প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অন্তত চীন-মার্কিন বা রাশিয়া-মার্কিন দ্বন্দ্ব থেকে তাই প্রমাণিত হচ্ছে।

একটি উঠতি শক্তির প্রতিষ্ঠিত কোনো শক্তির জন্য হুমকি হয়ে ওঠার বিষয়টিকে বলা হয় ‘থুকিডাইডিসের ফাঁদ’। দীর্ঘ ৫০০ বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অন্তত ১৬ বার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে উঠতি শক্তি ও প্রতিষ্ঠিত শক্তি মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ১২ বারই তাদের দ্বন্দ্ব যুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে।

তাই কালে কালে ‘থুকিডাইডিসের তত্ত্ব’ হয়েছে সমাদৃত। চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে বর্তমানের বাণিজ্য সংঘাত সেই ইতিহাসেরই ধারাবাহিকতা  হতে পারে।

থুকিডাইডিস ছিলেন এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে হওয়া পেলোপনেসিয়ান যুদ্ধের সময়কার একজন ইতিহাসবিদ।  তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, ৪৩১ খৃস্টপূর্ব থেকে শুরু করে ৪০৪ খৃস্টপূর্ব পর্যন্ত এক দীর্ঘ যুদ্ধ হয় ততকালীন পরাশক্তি স্পার্টা ও উদিয়মান শক্তি এথেন্সের মধ্যে।

থুকিডাইডিস ছিলেন একজন এথেনিয়ান জেনারেল, যাকে তদানিন্তন থ্রেস রাজ্যের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।  কিন্তু যুদ্ধের অষ্টম বছরে তিনি স্পার্টানদের আক্রমণের হাত থেকে থ্রেস রক্ষা করতে পারেন না। ফলে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়।  নির্বাসিত জীবনেই তিনি এই বইটি লিখেন।

বইটিতে দেখানো হয়েছে, কিভাবে এথেন্সের উদীয়মান ক্ষমতার প্রতি আশঙ্কাগ্রস্থ হয়ে স্পার্টা যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়। অন্যদিকে উদীয়মান স্পার্টাও নিজের শক্তি সম্পর্কে কিছুটা অহংকারী ও দাম্ভিক হয়ে ওঠে। তাই দুই পক্ষই যুদ্ধ মঞ্চে মুখোমুখি হয়ে উদগ্রীব  হয়ে ওঠে। স্পার্টা বন্ধুপ্রতিমদের নিয়ে রাতারাতি গড়ে তোলে পেলোপনেশিয়ান লীগ। অপরদিকে এথেন্স থেকে মোকাবেলা করতে বন্ধুরাষ্ট্র ও পার্শ্ববর্তী ছোট দ্বীপগুলো মিলিয়ে তৈরি করেন দানিয়েল লীগ।

ইতিহাসের আরেকটু পেছনে গেলে দেখা যায়, এই পেলোপনেশিয়ান লীগ আর দানিয়েল লীগ একত্র হয়ে কয়েক বছর আগেই পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এতে এই প্রমাণিত হয় যে, বিশ্ব রাজনীতিতে  গতকালের বন্ধু বলে কিছু নেই। আবার শত্রু হওয়াটাও আপেক্ষিক।

আজ থেকে ২৫ শত বছর আগের সেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির ধারার মূলত কোন পরিবর্তন নেই।  চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব যেন তারই ধারাবাহিক রূপ। ইতিহাসে এরকম আরও ঘটনা আছে যার পুনরাবৃত্তি লক্ষ্যনীয়।

যেমন, অষ্টাবিংশ শতাব্দির কথাই ধরা যাক, যখন ফ্রান্স আর ব্রিটেন ছিল দুই পরাশক্তি।  সেই সময় সম্রাজ্য বিস্তার নিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠে। সপ্তবর্ষী যুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই দুই মোড়লের মধ্যে একই সময়ে তিন মহাদেশে যুদ্ধ চলেছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে মীর কাসিমের বক্সারের যুদ্ধ ছিল এরই অংশবিশেষ।

তবে এই সংঘাতের পারদ সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওঠে নেপোলিয়নের আমলে।  বছরের পর বছর যুদ্ধ বেধে ছিল। আর শেষ পর্যন্ত নেপোলিয়নকে থামাতে বিভিন্ন শক্তির সমন্বয়ে  তৈরি হয় কোয়ালিশন।

 

এরই মধ্যে ব্রিটিশদের কাছ থেকে প্রথম স্বাধীন হওয়া কলোনি যুক্তরাষ্ট্র উদীয়মান পরাশক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। ভয়াবহ প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ের মধ্য দিয়ে দেশটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসাবে বিশ্ব নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করে।  ধীরে ধীরে গড়ে তোলে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক আর আইএমএফ এর মত সংস্থা যা নিজের স্থায়ী মোড়লের পদটা পাকাপোক্ত করতে সাহায্য করেছে।

 

পরবর্তীতে দেখা যায়, মার্কিনিদের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মুখে চলে আসে তার সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ দিয়ে।  শুরু হয় স্নায়ু যুদ্ধ। তবে এ যুদ্ধ দুদেশের বেশি নাগরিকের প্রাণ না কাড়লেও, তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশ, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান এই পরাশক্তির লরাইয়ের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে। এর পরের ইতিহাস তো সবারই জানা।

 

প্রাচীন গ্রিক সাম্রাজ্যে এথেন্স যেমন স্পার্টার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, অষ্টাবিংশ শতাব্দিতে  ফ্রান্স আর ব্রিটেন, দুই পরাশক্তির সম্রাজ্য বিস্তার নিয়ে যেমন দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছিল, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে জার্মানি যেমন ব্রিটেনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল, বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধ যেমন তুঙ্গে উঠেছিল; ঠিক তেমনি চীনও এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।  ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব বর্তমানে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক উপাদান।’

 

অপরদিকে, অর্থনৈতিক শক্তি বা পাওয়ার এমন বড় এক নিয়ামক যার জন্য দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে।  কারণ যুদ্ধ মেশিন চালাতে বা প্রযুক্তির উৎকর্ষসাধনেদরকারটাকা-পয়সার।আবারঅর্থনৈতিকআগ্রাসনএকটাসময়গিয়েসামরিকআগ্রাসনেরদিকেপরিণতহয়।

 

চীন-মার্কিনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা আলাদা নয়।  বিশেষ করে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতির সুবিধা নিয়ে ব্যাপক আয় করে নিয়েছে এবং সেই আয় করা অর্থই দেশটিকে সরাসরি মার্কিনিদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সাহায্য করছে এখন।

 

দক্ষিণ চীন সাগর এর উদাহরণ টানলে ব্যাপারটা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। চীন এখন দক্ষিণ –চীন সাগরের মালিকানা দাবি করছে। কয়েক বছর আগেও চীনের এমন অযৌক্তিক দাবি করার কথা শোনা যায়নি। কিন্তু বুঝতে হবে, চীনের হাতে এখন অনেক টাকা।  আর তাইতো তারা সেখানে কৃত্রিম দ্বীপ বানানোর মত উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা পর্যন্ত হাতে নিয়েছে। মার্কিনিদের হুমকি ধামকিকে কোন কর্ণপাত না করে সেখানে প্রতিনিয়ত সামরিকীকরণ করে যাচ্ছে দেশটি। স্বাভাবিকভাবেই চীনের এমন কর্মকাণ্ডে নাখোশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রও বারবার বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে।  তবে শি জি পিং এর আজীবনের জন্য ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়াটা মার্কিনিদের জন্য গভীর ভাবনার কারণ।

 

বিশ্বযুদ্ধের মত বাণিজ্য সংঘাতে কোন জয়-পরাজয় হয়তো নাই, তবু দুই পক্ষই তাদের কর্তৃত্ব বা পরাশক্তির তকমা  ধরে রাখার জন্য হলেও এই সংঘাতের ঝুঁকি নিয়েছে এবং তা আপাতত থামবার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

 

এখন শুধু অপেক্ষার পালা এটা দেখার জন্য যে, ‘থুকিডাইডিসের ফাঁদ’ বা ‘থুকিডাইডিসের তত্ত্ব’ সত্য প্রমাণিত হবে নাকি দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধ নতুন মাত্রা নিয়ে রূপ নেবে প্রযুক্তিগত কর্তৃত্ব বিস্তারের যুদ্ধে।

 

তথ্যসূত্রঃ এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

Previous Post

করোনায় ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৬ মৃত্যুর রেকর্ড

Next Post

মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা করোনায় আক্রান্ত, আরোগ্য কামনায় দোয়া চেয়েছে পরিবার

Next Post
মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা করোনায় আক্রান্ত, আরোগ্য কামনায় দোয়া চেয়েছে পরিবার

মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা করোনায় আক্রান্ত, আরোগ্য কামনায় দোয়া চেয়েছে পরিবার

লিখুন - বলুন - তথ্য দিন।।

দেশে বিদেশে যেখানে থাকুন আপনি হ্যাঁ আপনি যুক্ত হতে পারেন সোজাকথা ডটকম পরিবারের সাথে। রিপোর্টার, লেখক কিংবা তথ্যদাতা হিসেবে থাকুন! যুক্ত হতে লিখুন/ লেখা পাঠান। লেখা পাঠানোর ঠিকানা sojakotha.com@gmail.com

সম্পাদক ও প্রকাশক (অবৈতনিক):

ব্যারিস্টার শাহ আলম ফারুক

Contact Us

221 Whitechapel Road London E1 1DE
Email : sojakotha.com@gmail.com

অনুসরণ করুন

Browse by Category

  • ENGLISH SECTION
  • কলাম
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • নারী
  • নির্বাচিত
  • প্রবাস
  • বাংলাদেশ
  • বিনোদন
  • বিবিধ
  • বিশ্ব
  • ভিডিও
  • মতামত
  • মন্তব্য প্রতিবেদন
  • মানবাধিকার
  • যুক্তরাজ্য
  • লাইফস্টাইল
  • লিড নিউজ
  • সংবাদ শিরোনাম
  • সম্পাদকীয়
  • সাক্ষাৎকার
  • সাহিত্য
  • সোশ্যাল মিডিয়া
  • স্বাস্থ্য

Recent News

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ
নির্বাচনী অনিয়মের কারণে স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে

সরকারের মধ্যে অস্থিরতা : প্রেস উইংয়ের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ
  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.