বিগত ১০ দিনে এই প্রশ্ন সবার মাথায় খুব ঘুরপাক খাচ্ছে অনবরত ৷ দলকানা দুধেল গাভী আর পুলিশের সাথে সুবিধাভোগী গোষ্ঠী ছাড়া সবাই ত্যাক্ত বিরক্ত ৷ তাহলে পুলিশ কেন সবার কাছে ভিলেন হয়ে গেল, তার কারনটি সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দেশ কাঁপানো মেজর সিনহার নির্মম হত্যাকান্ড ৷
১৮৬০ দশকের প্রণয়নকৃত পুলিশ আইন তৈরী হয়েছিল এই উপমহাদেশকে শাসন ও শোষন করার জন্য ৷ এখন পর্যন্ত আমাদের পরিচয় বদল হয়েছে দুইবার ৷ অন্যান্য দেশ স্বাধীন হয়েছে আলোচনার টেবিলে আর আমাদের আরও একটি রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ৷ আমাদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও ঘোষনায় মানবিক রাষ্ট্রের কথা থাকলেও রাজনৈতিক অদূরদর্শীতা সে আশা পূর্ণ হওয়া ত দূরের কথা, পুলিশ আইনের কালো দিকের সবগুলো ধারার নির্যাতন সহ্য করতে হয় অহরহ I
আপনি কি তাহলে পুলিশ রাখবেননা ?
পৃথিবীতে যেখানে যত মতের রাষ্ট্র আছে তার সব জায়গাতে পুলিশ আছে ৷ তাদের নামের ভিন্নতা কিন্তু ভাষাগত কারনে ৷ পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করবে কি করবেনা, সেটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ৷ রাষ্ট্র যদি কর্তৃত্ববাদী , স্বৈরাচারী হয় সেই রাষ্ট্রের পুলিশ খুব স্বাভাবিক নিয়মেই অত্যাচারী শাসকের সহযোগী হবে ৷ জবাবদিহীতা, স্বচ্ছতা গণতন্ত্রের মূল সূত্র হলে পুলিশ কখনই সীমারেখার বাইরে যেতে পারবেনা ৷
চোর,ডাকাত, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের পুলিশ ধরে আনবে, আর রাজনৈতিক নেতাদের আদেশে ছেড়ে দিতে হবে এই ঘটনা পুলিশের মরালিটির জায়গায় ধ্বস নামে ৷ স্বভাবতই সেই পুলিশ কেনদিনই আর তাদের কাজে উৎসাহ পায়না ৷ ক্রমাগত সে আপোষ করতে থাকে সমাজের কীটদের সাথে ৷ প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে দমনের রাজনৈতিক সহযোগী সে ভাল করেই জানে যে ,তার কিছু হবেনা ৷
কোন আমলে নিয়োগ হয়েছে ,আর কোন আমলে অপরাধ করেছে তা নিয়ে বাহাস করে আত্মতৃপ্তি খোঁজার অভ্যাসটি আমাদের পুরানো এবং মজ্জাগত রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ ৷ শাসন ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন না করে পুলিশকে অবতারের দূত ভাবেন কেন ? আমাদের পুলিশ সদস্যরা ত কোন ভিনগ্রহ থেকে নাজেল হয়নি, ওরা আমাদেরই ভাই, বন্ধু, প্রতিবেশী ৷ এক ভাষাতেই কথা বলি,এক দেশেই বাসকরি ৷
পরিবর্তন চাইলে আমাদেরই করতে হবে। কোন প্রতিবেশী, বন্ধুর ছদ্মাবরনে শত্রুরা চাইবেনা আমরা উন্নত হই ৷ আমাদের রাষ্ট্রকে ঠিক করার জন্য সংগ্রাম, জনগনের শক্তির উপর ভর করেই করা দরকার ৷ একমাত্র গণতান্ত্রিক কাঠামোই নিশ্চিত করতে পারে, পুলিশ সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবিক আচরণ ও শৃঙ্খলার নিশ্চয়তা ৷
– ইফতেখার আহমেদ বাবু, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট