কারাবন্দী, কারাগার বাড়তে থাকা মানে সমাজে অপরাধ বাড়ছে। বিশ্বের ৫% জনসংখ্যার দেশ যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের ২৫% কারাবন্দী আছে। সর্বাধিক কারাবন্দী। আরো যেমন যুদ্ধে, করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র সবার শীর্ষে অবস্থান করছে।
বিশ্বের সর্বাধিক বেসরকারি কারাগারও যুক্তরাষ্ট্রে। প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে।বেসরকারি কারাগারের উদ্দেশ্য স্বাভাবিকভাবেই মুনাফা অর্জন। কারাগার ব্যবসাতে মুনাফা বাড়তে হলে কারাগার বন্দীপূর্ণ থাকতে হবে। সব সময়। তার মানে সমাজে সব সময় অপরাধ তৈরী হতে হবে। অপরাধী বানানোর উপযোগী পরিবেশ তৈরী করতে হবে। প্রয়োজনে সামান্য অপরাধে বা বিনা অপরাধে কারাগারের জন্য বন্দী সংগ্রহ করতে হবে। নতুবা কারাগার ব্যবসাতে লোকসান হবে। তাহলে, অপরাধ হয়ে উঠছে একটি ব্যবসায়িক পণ্য।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন দাসপ্রথার বিলোপ সাধন করা হয়েছিল তখন মালিকরা তুলা ইত্যাদি চাষে দাস শ্রমিকের অভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হলো। কিন্তু উপায় বের হলো। ১৩তম সংশোধনীতে দাস বিলুপ্তি আইনের এক জায়গায় লিখিত ছিলঃ ব্যতিক্রম হলো তাদের জন্য যারা ক্রিমিনাল আইনে বন্দী হবে। অর্থাৎ ক্রিমিনাল আইনে বন্দী হলে তাকে দাসের মর্যাদায় থাকতে হবে। এরপর শুরু হলো, সামান্য কারণে বা বিনা কারণে বৈষম্যমূলক ভিত্তিতে প্রচুর কৃষ্ণাংগদের ক্রিমিনাল আইনের আওতায় গ্রেফতার করা। মালিকেরা ভায়া-কারাগার দাস শ্রমিক সরবরাহ পেতে লাগলো। মুনাফার ক্ষতি থেকে তারা রক্ষা পেলো। এই মুহূর্ত্যেও প্রথম সারির সুপরিচিত বেশ কিছু কর্পোরেট কারাবন্দীদের দিয়ে নাম মাত্র মজুরীর বিনিময়ে তাদের কাজ করায়।
তাই, কারাগার নিজে ব্যবসা বা ব্যবসায়ের সহযোগী।
যারা যুক্তরাষ্ট্রকে আদর্শ মডেল মনে করে তারাও সমাজে অপরাধের প্রকৃত এবং কৃত্তিম উভয় ধরণের চাষাবাদে অত্যন্ত আগ্রহী থাকবে।
অপরাধ, নিরাপত্তাহীনতা হলো ব্যবসায়িক এবং বানিজ্যিক পণ্য। নানা ভাবে। নানা হিসাবে।
– ফাতেমা বেগম