নিজস্ব প্রতিবেদক
রেলওয়ে, সিআরবিসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর কয়েকটি কলেজকেন্দ্রিক ‘গ্যাং লিডার’ সাইফুল আলম লিমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে চট্টগ্রামের মেহেদীবাগ এলাকার বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী লিমন।
লিমন চট্টগ্রামের সিআরবির জোড়া খুন মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাও রয়েছে। এসব মামলায় জামিনে থাকলেও সজল দাশ নামে লিমনের এক সহযোগীর কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের প্রেক্ষিতে দায়ের করা অস্ত্র মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ডিবি।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি মোক্তারকে আদালতে বিচারকের কক্ষের সামনে মারধরের ঘটনায় আবারও আলোচনায় আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বহিস্কৃত এই সাবেক ‘লিডার’।
গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নতুন আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতের সামনে ঘটা ওই হামলার তদন্ত করতে গিয়ে হামলার সাথে লিমনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার আলী হোসাইন বলেন, আদালতে ওই হামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও চাঁদাবাজি ও গ্যাং নিয়ন্ত্রণেরও নানা অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। তার সাথে সজল দাশ (২৩) নামের আরও এক সহযোগীও ছিল। যার কাছে একটি বিদেশি পিস্তল পাওয়া গেছে।জিজ্ঞাসাবাদে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার সহযোগী সজলের কাছে অস্ত্র পাওয়া গেছে। সেটি লিমন তাকে দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে সে। তাই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
জানা গেছে, ক্যাসিনো কান্ডের পর কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবে পরিচিত হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও সাইফুল আলম লিমন গা ঢাকা দেন। কয়েক মাস আগে প্রকাশ্যে আসেন লিমন। কিন্তু দুবাইতে অবস্থান করছিলেন বাবর। সম্প্রতি বাবর দুবাই থেকে চট্টগ্রামে আসেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করবে বুঝতে পেরে তিনি দ্রুত ঢাকায় চলে যান। লিমন তার অসুস্থ মাকে দেখতে বৃহস্পতিবার বাসায় এসেছিলেন। আর এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি প্রশাসন। কারণ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফলে লিমনের জন্য তদবির করার খুব বেশি সুযোগ নেই তার। ফলে সুযোগটি কাজে লগিয়েছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি সাত রাস্তার সামনে যুবলীগের বিকর্কিত নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু আরমান (৮) নিহত হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় লিমনকে দ্বিতীয় প্রধান আসামি করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সেসময়ও গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন লিমন। এরপর ২০১৫ সালের নভেম্বরে অস্ত্রগুলিসহ লিমনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব-৭।