আরিফুল হক, রোম (ইতালী) থেকে
দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার ব্যাপারে ইতালী নমনীয় ভাব প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশ থেকে ৩০ হাজার ৮৫০ জন মৌসুমী ও স্থায়ী কর্মী নেবে ইতালী। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে আবেদন প্রক্রিয়া।দালালের ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশের প্রশাসন।
যদিও এর মধ্যেই বিভিন্ন দালাল চক্র ইতালী পাঠানোর প্রতিশ্রুতিতে কর্মীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতালী গমনেচ্ছুকদের সতর্ক করে এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতালীস্থ নিয়োগকর্তা সরাসরি কর্মী মনোনীত করবেন। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। তাতে স্পষ্ট কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ইতালী যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকায় কর্মী পাঠানোর বিজ্ঞপ্তিতে দিচ্ছে অনলাইনে, ফেসবুকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতালীস্থ নিয়োগকারী যে কর্মীকে নিতে চান তার নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ ইতালীর স্থানীয় প্রশাসকের কার্যালয়ের অনাপত্তিপত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। নিয়োগকারীর আয় ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হলে তা তিনি বাংলাদেশে থাকা কর্মীর কাছে পাঠাবেন। মনোনীত কর্মীকে এরপর ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করতে হবে। ভিসা পেলে কর্মী ইতালী যেতে পারবেন। এরপর তাকে ও নিয়োগকারীকে স্থানীয় কার্যালয়ে গিয়ে চাকরীর চুক্তিপত্র করতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, ইতালীতে কর্মী হিসেবে যেতে আবেদনের সময় সরকার নির্ধারিত ১৬ ইউরো (এক হাজার ৬০০ টাকা) ফি দিতে হবে। ‘হেল্প ডেস্ক’র সহায়তা নিলে বাড়তি ৫০ থেকে ১০০ ইউরো (পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা) ফি লাগবে। এছাড়া আর খরচ নেই। যোগ্য বিবেচিত কর্মীদের পৃথক অনাপত্তিপত্র দেবে ইতালী।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে নিয়োগকারীকে কিভাবে চিনবে কর্মী?
নিয়োগকারী কিভাবে কার সাথে যোগাযোগ করবে কর্মী নিয়োগের জন্য?
ইতালী আসার পর যদি কোন কারণে কর্মী নিয়োগকারীকে খুঁজে না পায় অথবা নিয়োগকারী কোন দূর্ঘটনায় পতিত হলে তাহলে কর্মীর দায়ভার কে নিবে?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য কতজন শ্রমিকের “কোটা” বরাদ্দ করা হয়েছে?
এক্ষেত্রে প্রশাসন কতজনের আবেদন পত্র গ্রহণ করবে। আবেদনপত্র গ্রহণ করার পর ইতালীর নিয়োগকারী যদি ঐ সমস্ত আবেদনকারীকে মনোনয়ন না করে তবে সে ক্ষেত্রে কি সরকার নির্ধারিত ১৬ ইউরো (এক হাজার ৬০০ টাকা) ফি ফেরতযোগ্য।
কারণ এখানে শুধু বাংলাদেশ নয় ৩০টি দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হবে।
করোনা পরবর্তী অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখতে ইতালি ৩০ হাজার ৮৫০ জন বিদেশি কর্মী নেবে। তাদের মধ্যে ১২ হাজার ৮৫০ জনকে স্থায়ীভাবে বাকি ১৮ হাজারকে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। খণ্ডকালীন নিয়োগপ্রাপ্তদেরকে নির্ধারিত সময় শেষে দেশে ফিরতে হবে।