যারা লেখে সবাই লেখক হয় না, নিয়মিত সংবাদ লিখেও অনেকের সাংবাদিক হয়ে উঠা হয় না। সাধারণভাবে সহজে অবোধগম্য আইন সংবিধান অধিকার ভিত্তিক বিষয়ে তিনি আকর্ষণীয় ও সহজ ভাষায় লিখতেন। সহজে বলা গেলেও এরকম লেখালেখি সহজ নয় মোটেও।
এতে নিরন্তর অধ্যবসায়, আত্নপ্রত্যয়, বিষয়ের গুরুত্ব বিচার করে আন্তরিকভাবে তাতে গভীর মনোনিবেশ করার ব্যাপার ছিল বলে প্রতীয়মান। এবং এমন বিষয়গুলোতে লেখালেখি যা বৈরী সময়ে ছুপছুপা সাংবাদিকতার মধ্যে ক্ষমতাধর অনেকের কাছে অপছন্দনীয়ও ছিল বলে ধরে নেয়া যায়।
যখন আইন সংবিধান আদালতের উপর কর্তৃত্বের এক দৃশ্যমান প্রচেষ্টা নিয়ত চোখে পড়ে কিছু অযৌক্তিক, দাম্ভিকতা আর অপযুক্তি (wrong arguments)র দোহাই দিয়ে, তখন তাঁর লেখা প্রতিবেদন, নেয়া সাক্ষাৎকার অনেক কিছু পরিষ্কার করে দিতে পারতো। মজদার হোসেন মামলার রায় ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়ে যাবার সুযোগ ছিল। এই যে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে জটিলতাগুলো সৃষ্টি করা হলো, যার সূত্র ধরে প্রধান বিচারপতি নামের প্রতিষ্ঠানটি একভাবে ধ্বংস করে দেয়া হলো। জনস্বার্থে র মামলা কেন এগুয় না।এরকম অনেক বিষয়ে তার প্রতিবেদন গবেষক, অধিকারকর্মী এবং সাধারণ পাঠক কে দরকারী ভাবনার খোরাক যোগাতো।
যা প্রকৃত পেশাজীবী সাংবাদিক লেখকের বিশ্লেষকের দায়ও বটে! কিন্তু হররোজ দায় দূরে থাক পেশাজীবী হিসেবে পেশার সাথে সম্পর্কিত সাধারণ ইথিকস থেকে দূরে সরে আত্ননিবেদনে ক্ষমতার অনুগ্রহপ্রার্থী মানুষের ভিড় ই আজকাল যেখানে বেশি চোখে পড়ে সেখানে মিজানুর রহমান খান ছিলেন ব্যতিক্রম। সত্যিকার সাংবাদিকদের একজন।
অধিকারহীনতা ও অগণতন্ত্রের এই নজিরবিহীন ক্রান্তিকালে তাঁর চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি!
– এডভোকেট শাহ আলম ফারুক
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী
সম্পাদক (অবৈতনিক), সোজা কথা ডটকম