ঢাকা করেসপনডেন্ট
মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমীর এবং নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলামের ৩৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ ৭ জুন সোমবার ঢাকার খিলগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জিহাদী আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিাটি ঘোষণা করেন। তিনি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন।
সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া মামুনুল হক এবং আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ যারা ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের সাথে জড়িত, তাদের অনেককে এই কমিটিতে রাখা হয়নি। অন্যদিকে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শফীর বড় ছেলে মোঃ ইউসুফকে হেফাজতের নতুন কমিটিতে সহকারি মহাসচিব করা হয়েছে।
তবে আহমদ শফীর মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে আনাস মাদানীর নেতৃত্বে একটি অংশ সংগঠনটির নেতৃত্বে জুনায়েদ বাবুনগরীকে মেনে নেয়নি। এই অংশটিকে হেফাজতের নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি। প্রতিষ্ঠাতা আমির আহমদ শফীর মৃত্যুর পর গত বছরের ২৬শে ডিসেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে সংগঠনটির আমীর করে ১৫১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
কিন্তু এর চার মাস পরই গত এপ্রিল মাসে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে মি. বাবুনগরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয় । এই আহবায়ক কমিটি এমন এক সময় গঠিত হয়েছিল, যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতে অনেক নেতাকে। সেই গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন আবার সংগঠনটির নতুন কমিটি গঠন করা হলো। মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১৬ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গত মার্চ মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনায় সংগঠনটির নেতাদের গ্রেপ্তার অভিযান যখন চলছে, সেই পটভূমিতে সরকারের চাপে, নাকি সমঝোতার ভিত্তিতে রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করা হচ্ছে – হেফাজতের ভেতরেই এ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। হেফাজত কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হলেও এর শুরু থেকেই কমিটিতে আমীর এবং মহাসচিব ছাড়া অন্য পদ এবং সদস্যদের বেশিরভাগই ছিলেন ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বিভিন্ন সময় হেফাজতের কর্মসূচির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছে। যদিও ২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতের অবস্থান কর্মসূচির পর আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে সে সময় আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতের একটা সখ্যতা তৈরি হয়েছিল।
হেফাজত বলেছে, মার্চের সহিংসতার ঘটনায় অব্যাহত গ্রেপ্তার অভিযানে মামুনুল হক এবং আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ তাদের ৫০ জনের বেশি কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগের পেছনে সরকারের চাপ রয়েছে, এমন সন্দেহের কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতের একাধিক নেতা।