সোজা কথা ডেস্ক
লালমণিরহাটে পুলিশ হেফাজতে রবিউল খানের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমএসএফ সংবাদপত্রে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনাটির নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠূ তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমের সূত্র উল্লেখ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যের উল্লেখ করে বলা হয়, সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের হিরামানিক এলাকার বৈশাখী মেলায় জুয়া খেলা চলছিলো, এমন খবরে পুলিশ মেলায় অভিযান চালালে জুয়াড়িরা দিকবিদিক পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মেলায় ঘুরতে আসা শ্রী পোল্লাদ মেকার ও রবিউল ইসলাম নামে দুই যুবককে আটক করে। এ সময় পুলিশ আটক দুজনকে ভ্যানে উঠানোর চেষ্টা করলে রবিউল ভ্যানে উঠতে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ তাকে বেদম মারপিট ও লাথি মারতে থাকে। এতে রবিউল সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পুলিশ তাকে পাজাকোলা করে তাদের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে আসে। এলাকাবাসী জানান, আটকের পরই পুলিশ রবিউলকে প্রচণ্ড মারপিট করে, এতে সে গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। রবিউলের স্বজনদের অভিযোগ পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনাস্থলেই রবিউলের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে রবিউলের মৃত্যুর খবরে স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠূ তদন্ত করে নির্যাতনকারী পুলিশকে দ্রুত আইনের আশ্রয়ে আনার দাবিতে রাত ২ টার পর থেকে উপজেলার মহেন্দ্রনগরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে। ভোর চারটার দিকে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম অবরোধকারীদের তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালে অবরোধকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, আটকাবস্থায় পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর বিষয়টি অনাকাঙ্খিত ও অপ্রতাশিত যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। হেফাজতে থাকা যে কোন ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিতকরাও পুলিশের আইনি দায়িত্ব। পাশাপাশি পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মানবাধিকার সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা। এমএসএফ আটকাবস্থায় রবিউলের মৃত্যুর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠূ তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।
ছবি: নির্যাতনে অভিযুক্ত এসআই হালিম