সোজা কথা ডটকম
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
সোজা কথা ডটকম
No Result
View All Result

করোনা: জনপ্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও বাস্তবতা

- মুশতাক আহমেদ

ডেস্ক রিপোর্ট by ডেস্ক রিপোর্ট
শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ | ৬:১৫ অপরাহ্ণ
in কলাম, নির্বাচিত, বাংলাদেশ, মতামত, সংবাদ শিরোনাম
0
করোনা: জনপ্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও বাস্তবতা

মুশতাক আহমেদ

আলু ভর্তা, মানে শুকনা মরিচ বাইট্যা আলু ভর্তা কইরা খাইয়া যহন সাধারণ মানুষ ক্ষেতের ধান কাটতে নাইমা পরবে, শইলের মইধ্যে থিকা যে ঘাম বাইর হবে এই ঘামের মধ্যে দিয়া করোনা একদম বাংলাদেশ ছাইড়া পালাবে। শেরপুরের ১ আসনের চারবারের এমপি আতিউর রহমান আতিক এই চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে। এই বক্তব্য শোনার পরে ওই এলাকায় লকডাউন বা সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে সচেতন হবে বলে আপনি আশা করেন? আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কিভাবে জনগণকে বোঝাবে যে এই মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার এক মাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা?

১৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের মহাসচিব ডঃ আহমেদুর কবির আরটিভিতে ডঃ ইকবাল আরসালান এবং ডঃ রুহুল হকের সামনে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন বাংলাদেশে করোনা আসবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক করার পর তিনি কিসের ভিত্তিতে এই বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা কেউ বলতে পারবে না। পেশার প্রতি ন্যুনতম দায়িত্ববোধ থাকলে এই ভদ্রলোকের পদত্যাগ করা উচিৎ, জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। চাটুকারিতা না করলে তিনি আজকে যেই পদে বসে আছেন, তার ধারে কাছেও যেতে পারতেন না। এই ধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্য মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজকে আরো কঠিন করে তুলেছে। তৃণ মুল পর্যায়ে গ্রাম পুলিশ যখন মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করে চলেছে, তারা বিফল হচ্ছে। এর দায়ভার উচ্চ পর্যায়ের গণ্ডমূর্খ নেতাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্যের, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনগণের না।

১১ই মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করার পর মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে জনাব ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিলেন “আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী”। তাতে করে জনগণের কাছে কি বার্তা গেল? এরপর অবশ্য এই শক্তিশালী নেতাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায় নাই। তিনি নিরাপদে অবস্থান থেকে নিয়মিত বিরতিতে ভিডিও বার্তা দিয়ে চলেছেন যা মূলত বিএনপি জামাত নিয়ে তার বিশ্লেষণ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই বলে আসছেন, এখনো বলে চলেছেন আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি আছে এই মহামারি মোকাবেলা করার জন্য। বাস্তবতা কি বলে? দেশের ১২টি কভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালের একটিতেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই এর ব্যবস্থা নেই। তিন মাস সময় ধরে উনি কিসের প্রস্তুতি নিয়েছেন? তাহলে করোনা আক্রান্ত হোলে একজন রোগী কি কারণে হাসপাতালে যাবে? হাসপাতালে গিয়ে মরার চেয়ে বাসায় থেকে মরাই তো ভালো। হাসপাতালে মারা গেলে লাশ কবে পাওয়া যাবে তার নেই গ্যারান্টি- কি দুর্ভাগ্য।

৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসেবা সচিব অথবা ডিজি মহোদয় এক বারের জন্য কি কোন বিশেষায়িত হাসপাতাল সশরীরে পরিদর্শন করেছেন? দেশের এই ক্রান্তি কালে স্বাস্থ্য কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য আপনারা পিপিই পরে কভিড-১৯ হাসপাতাল গুলো পরিদর্শন করতে পারেন। রোগীদের সাথে কথা বলতে পারেন, স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে দুপুরের বা রাতের খাবার গ্রহণ করেন। তাহলেই ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।

 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কতোটা তৎপরতার সাথে কাজ করছে তা বোঝা যায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন (৪৫.১১০.০২.০০.০০.০১.২০২০-২১০) এর উপরে ০১ মার্চ ২০২০ তারিখ থাকলেও, সেটা অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জনাব মোঃ হাবিবুর রহমান খান সই করেছেন ১৮ মার্চ ২০২০। অর্থাৎ এই কমিটি এর আগে কোন কাজই করে নাই। তবে ৪২ জনের একটা মহামারি নিয়ন্ত্রণকারী কমেটিতে মাত্র ৮ জন ডাক্তার? সত‍্যি বড়ই বিচিত্র এই দেশ!!! কমিটিতে কোন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ নাই।

অবশ্য এই কমিটি গঠনের এক মাস পরে ১৮ এপ্রিল টেকনিকাল পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতেও নাই কোন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ বা পালমোনলজিস্ট বা ক্রিটিকাল কেয়ার স্পেশালিষ্ট। নাম সর্বস্ব এই কমিটি কি কাজ করবে? কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল প্রথম থেকেই কভিড-১৯ এর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। অবাক করার বিষয় এখানে নাই কোন সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই। গুহা বাসী স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিদিন যে বলেন আমাদের প্রস্তুতি অনন্যা দেশের থেকে ভালো, সময় মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন, এই কথা গুলো কিসের ভিত্তিতে বলেন তিনি? শাহাদাত হোসেন বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের একজন সিনিয়র রিপোর্টার। করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানকার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বিবিসি বাংলাকে। শাহাদাত বলেন, ‘দেখতাম চোখের সামনে রোগীরা মারা যাচ্ছে। লাশ ওয়ার্ডেই পড়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।’

 

তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্দিষ্ট ব্যক্তি লাশ দাফন করেন হয়তো তাদের সংখ্যা কম কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, সেকারণে হয়তোবা। কিন্তু এতে একজন অসুস্থ রোগী যে এমনিতেই ভয়ে আছে তার মনের অবস্থা কী হয়?’ অন্যান্য সুবিধাদির বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, তিনি যে ওয়ার্ডে ছিলেন সেখানে একশ’র মতো রোগী ছিল। এতজন রোগীর জন্য মাত্র তিনটি টয়লেট, তিনটি গোসলখানা।

চট্টগ্রামের কভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালে এখনো আই সি ইউ চালু হয় নাই। আশ্চর্য জনক ভাবে এই দুর্যোগের সময় জানা গেছে আটটি আইসিইউ বেড ২০১৬ সালে কেনা হলেও গুদামে পড়ে ছিল। যা এখন স্থাপন করা হচ্ছে। পরিকল্পনাহীন ভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার কেনা কাটা হোলেও- সেগুলো জনগণের কোন কাজে লাগে নাই। ঢাকার বাইরে যে কোন কোন যায়গায় কভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থা নাই, সেটা বোঝা যায়, সিলেট এবং খুলনা থেকে কভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসককে ঢাকায় স্থানান্তরের মধ্যে দিয়েই।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যাক্তি, উচ্চ পদস্থ আমলা এবং ধনী ব্যাবসায়িরা বছরের পর বছর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতেন। আম জনতা এদের ভিআইপি নামেই চিনে। অনেকে জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে চলে যেতেন। যার কারণে এই দেশের স্বাস্থ্য খাতে হাজার কোটি টাকার কেনা কাটা হলেও – স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা দিনে দিনে আরো খারাপ হয়েছে। বর্তমানে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ‘ভিআইপি’দের আলাদা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান।(সূত্রঃ বিবিসি)

 

খবরটা গন মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে এর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বৈষম্যের কারণে যেখানে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশের জন্ম সেখানে প্রজাতন্তের একজন কর্মকর্তার মাথায় এই ধারণা কিভাবে আসে সেটা বোধগম্য না। পরে আবার তথ্য মন্ত্রানলয় থেকে জানানো হয়- এই ধরনের কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই। ভিডিও কনফারন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত হয় নাই। কিন্তু এই ধরনের মানসিকতার একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে জনগণ কি সেবা পাবে- সেটা বোধগম্য না। কিন্তু জনগণের কাছে এটা পরিষ্কার যে সাধারণ জনগণের সেবার চেয়ে মন্ত্রণালয় ভিআইপি দের ব্যাপারে বেশী চিন্তিত।

মার্চের শেষ দিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দেহে করোনা শনাক্ত হয়। অবস্থার অবনতি হলে তিনি যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার (এনএইচএস) অন্তর্ভুক্ত লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১২ এপ্রিল তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর পরেই তিনি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশংসা করেন আলাদা করে। সেই সঙ্গে বিশেষভাবে নাম উল্লেখ করেন জেনি ম্যাকগি নামের এক নার্সের, যিনি আইসিইউ’তে সর্বক্ষণ তার খেয়াল রাখতেন। জেনি টানা তিন রাত জেগেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার কথা জানতে পেরে অবাক হয়েছেন জেনি ম্যাকগি। প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তিনি শুধু তার কর্তব্যটুকুই পালন করেছেন। মানুষের সেবা করাই তার কাজ। এ সময় তিনি কার সেবা করছেন তা আলাদা করে ভাবেন না। অন্য রোগী হলেও তিনি রাত জাগতেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার কাছে শুধু একজন রোগীই ছিলেন, এর বেশি কিছুই না।

বাংলাদেশে নার্সরা তাদের কাজের পরিবেশের দুর্দশার কথা তুলে ধরার পরপর আশ্চর্য জনক ভাবে তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মাস্ক আর পিপিই নিয়ে প্রথম থেকেই ডাক্তাররা সোচ্চার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যিনি পিপিই উচ্চারণই করতে পারেন না, তিনি দুলতে দুলতে আশ্বস্ত করেছেন এগুলোর কোন সংকট নাই। এগুলো নিয়ে কথা বলায় কাউকে বদলি করা হয়েছে, কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। একেবারে মগের মুল্লুক যাকে বলে। শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর, সরকারের টনক নড়ে। এরপর বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ১৭ই এপ্রিল জানানো হোল ভুলক্রমে দুইটি চালানে N-95 মাস্কের জায়গায় সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করেছে। যেই ভুলের কারণে হাজার হাজার স্বাস্থ্য কর্মীর জীবন হুমকির সম্মুখীন হোল, সেটা নিয়ে কিছু লিখলে আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হুমকির দেয়া হয়েছে। এর জন্য সরাসরি একই ওষুধ- তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা এই মাস্ক সরবরাহ করেছে তারাও এখন ভুল স্বীকার করেছে। এটা কোন সাধারণ ভুল না, সরবারহকারি ভুল জিনিষ দিলে, যেই কর্তৃপক্ষ সেটা গ্রহণ করেছে তারা কি না দেখে সেটা গ্রহণ করেছিল? এইখানে কত টাকার লেনদেন হয়েছে সেটা জাতি জানতে চায়। এদের সবার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়া উচিৎ।

সিএমএসডি থেকে বলা হয়েছে ১১ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। দেশের ৮৫,০০০ স্বাস্থ্য কর্মীর তাহলে প্রত্যেকের ১৩টি করে পিপিই পাওয়ার কথা, এই পিপিই তাহলে গেল কোথায়? N-95 মাস্ক দেশে বানানোর কোন রকমের অনুমতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেয় নাই, তাহলে এই মোড়ক বানানো হয়েছিল কিসের উদ্দেশ্যে? পিপিই র মান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডঃ এটিএম মঞ্জুরকে প্রথমে বরিশাল মেডিকেল কলেজে, পরে পাবনা মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। তা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন যায়গায় আরো দশ জন চিকিৎসককে কারণ দর্শানর নোটিস দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সাথে এই ধরনের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণ কি? যেখানে সারা পৃথিবী জুড়ে চিকিৎসকদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, বাংলাদেশে ঠিক তার উল্টা পথে চলছে। এক সাংবাদিক ডিজি হেলথকে প্রশ্ন করেছিলেন, কভিড-১৯ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের আবাসনের বিষয়ে, এতে ডিজি হেলথ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। প্রথম দিকে এক পর্যায়ে ডিজি হেলথ সংবাদ কর্মীদের বলেছিলেন সব স্বাস্থ্য কর্মীদের পিপিই প্রয়োজন নাই। স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিভাবক হিসাবে তিনি কি এই কথা বলতে পারেন?

স্বাস্থ্য মন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব এবং ডিজি হেলথ প্রতিদিন বলে আসছেন আমাদের প্রস্তুতি অন্যান্য উন্নত দেশের থেকে ভালো- তারা কিসের ভিত্তিতে এই কথা বলছেন? মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছেন দিনের পর দিন। ১২ টি বিশেষায়িত হাসপাতালের একটিতেও নাই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা, আইসিইউ বা ভেন্টিলেটর কয়টা আছে, সেইটা কেউ জানে না। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডঃ মইন এর মৃত্যুর পর বের পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সরকারের সক্ষমতা। গতকালও কভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসককে খুলনা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে, যেহেতু খুলনায় চিকিৎসা দেয়ার মতো সক্ষমতা নাই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী আমাদের কে আধা গ্লাস পানি আর আধা খালি গ্লাসের মতোই বিভ্রান্ত করে চলেছেন। টেস্ট না করেই তিনি অন্যান্য দেশের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার সাথে আমাদের দেশের পরিস্থিতি তুলনা করে আসছেন। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯,৭৭৬ জনের, ভারতে ৫,০০,৫৪২ জনের, ইটালিতে ১৫,৭৯,৯০৯ জনের, যুক্তরাজ্যে ৫,৮৩,৪৯৬ জনের আর যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪,৬৬,৭৭১ জনের। পরীক্ষা কম করলে কম সংখ্যক রোগী শনাক্ত হবে- এইটা কি মন্ত্রী জানেন না? কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্তের প্রথম ধাপে সাস্পেক্টেড রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই নমুনা সংগ্রহের কাজটা করে থাকে হেলথ টেকনোলজিস্টরা। সর্বশেষ হেলথ বুলেটিনের (নভেম্বর, ২০১৮) তথ্য বলছে, বিভিন্ন পর্যায়ের হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদ রয়েছে ৭ হাজার ৯২০টি। কিন্তু আছেন ৫ হাজার ১৮৪ জন। ২ হাজার ৭৩৬টি পদে কোনো লোকবল নেই। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি) পদ সবচেয়ে বেশি ফাঁকা রয়েছে। এর পরই রয়েছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) এর পদ। বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, ২ হাজার ২৩৭টি পদের বিপরীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) আছেন ১ হাজার ৪৮৮ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেডিকেল টেকনোলজি বিষয়ে কে পড়াবে— স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে এই টানাপড়েনেই কেটে গেছে ১১ বছর। এর মধ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয়দের দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে, নতুন দুটি আইন হয়েছে, উচ্চ আদালতে মামলা চলেছে, রায়ও হয়েছে সাড়ে তিন বছর আগে— কিন্তু হয়নি শুধু নিয়োগ। ফলে বর্তমানে করোনাভাইরাসের এই সংক্রমণের মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ১৭টি ল্যাবরেটরিতে অধিক সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করার সক্ষমতা থাকলেও করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ল্যাবরেটরির সক্ষমতার বেশিরভাগই অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। শুধু মাত্র আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই আমাদের এই লোকবল সংকট। দেশে বেকার অবস্থায় ২০ থেকে ২৫ হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট রয়েছে, যদেরকে জরুরী ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে কাজে লাগানো সম্ভব।

কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটকে কভিড- ১৯ হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই হিসাবে সেখান থেকে রোগীদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে সরিয়েও ফেলা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ যদি কোন আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটে তখন সেই রোগীরা কোথায় যাবে? সেটাকে সামাল দেয়ার মতো সক্ষম আর কোন হাসপাতাল কি আমাদের আছে? ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ হাসপাতাল, এখানে এমন অনেক বিভাগের চিকিৎসা হয় – যা দেশের অন্য কোথাও হয় না। সাধারণে রোগীদের চিকিৎসার রাস্তা খোলা রাখার স্বার্থে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজকে কভিড-১৯ থেকে দুরে রাখার মত দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। দেশের সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি এখন চরমে, তারা জানে না কোন হাসপাতালে যাবে- কোথায় গেলে চিকিৎসা পাবে। ডিজি হেলথ একটা হট লাইন চালু করতে পারে, যেখানে সাধারণ রোগীরা ফোন করে জেনে নিতে পারবে, তাদের কোন হাসপাতালে যাওয়া লাগবে। যদিও এখন সমস্ত ডাক্তাররাই বিনামূল্যে টেলি মেডিসিন সেবা দিয়ে আসছে। একদিকে যেরকম কভিড-১৯ এর রোগীরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ঠিক একই ভাবে অন্যান্য রোগীরাও আছে চরম অনিশ্চয়তায়। একজন নাগরিক নিজে থেকেই হাসপাতালে যাওয়ার আগে হটলাইনে ফোন করে জেনে নিতে পারবে তার কোন হাসপাতালে যাওয়া লাগবে। হটালাইনে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোনের ব্যাপারে বারা বার বলা হচ্ছে, সেটা শনাক্ত করে যারা এই ধরনের ফোন করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা কঠিন কিছু না।

সরকারী হিসাবে আজকে পর্যন্ত ১৩১ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে কভিড-১৯এ আক্রান্ত হয়ে। অথচ শুধু খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে ২৫ মার্চ থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে মৃত্যু হিসেবে ১৩৮ জনকে দাফন করা হয়েছে গতকাল পর্যন্ত। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যতই বলুক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, জনগণ তাতে স্বস্তি পাচ্ছে না। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিশেনের হিসেবে, নভেল কভিড-১৯ সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে ২১৫ জন চিকিৎসক, ৬৬ জন নার্স এবং ১৮৮ স্বাস্থ্যকর্মী এ রোগে সংক্রমিত হয়েছেন। পুলিশ বাহিনীর ২৩৪ সদস্য করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এত অধিক সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত  হওয়ার মুল কারণ পিপিই, এবং দ্বিতীয় কারণ রোগীদের তথ্য গোপন করা। মান সম্মত পিপিইর ওভাবেই সর্বাধিক সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের মান সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দিয়েছে। যদি এই পিপিইর মান এতোই ভালো হয়ে থাকে তাহলে এতদিনেও স্বাস্থ্য মন্ত্রী বা ডিজি হেলথ কেন কভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালে সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন না? প্রজ্ঞাপন জারি করে মহামারী ঠেকানো অসম্ভব। জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। চাটুকার আর অসৎ ব্যাক্তিরা আর যাই হোক জাতির জরুরি প্রয়োজনে কখনো সামনের কাতারে এসে দাঁড়ানোর কোনো ক্ষমতাই রাখে না| হোম কোয়ারেন্টাইনের সুযোগে জনাব ওবায়দুল কাদের নিয়মিত বিরতিতে ভিডিও বার্তা দিয়ে আসছেন, তিনি কি তার আগের বক্তব্য ভুলে গেছেন?

কভিড-১৯ আমাদের দেখিয়ে দিল ভিক্ষুক তার জমানো টাকা দান করে দেয়, বিত্তবান থাকে প্রণোদনার অপেক্ষায় আর কিছু জনপ্রতিনিধি থাকে ত্রাণ চুরি করার ধান্দায়। মনোবল বৃদ্ধির জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। ভালো কথা। কিন্তু অসুস্থ হলে চিকিৎসা পা্ওয়া তো নাগরিকের অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। চিকিৎসা না পাওয়া নাগরিকদের ক্ষতিপূরণ দেবে কে? স্বাস্থ্য খাতে পচন একদিনে ধরে নাই, এখন এই পচন ধরা স্বাস্থ্য খাত থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

২৪ এপ্রিল ২০২০

– মুশতাক আহমেদ  কুমির চাষি এবং সৌখিন ফটোগ্রাফার

Tags: করোনাগণমাধ্যমপুলিশী নির্যাতনবাংলাদেশমানবাধিকারমুশতাক আহমেদস্বাস্থ্য
Previous Post

করোনা: যুক্তরাষ্ট্রে ১০ দিনে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ

Next Post

করোনাকালের টুকিটাকি

Next Post
করোনাকালের টুকিটাকি

করোনাকালের টুকিটাকি

লিখুন - বলুন - তথ্য দিন।।

দেশে বিদেশে যেখানে থাকুন আপনি হ্যাঁ আপনি যুক্ত হতে পারেন সোজাকথা ডটকম পরিবারের সাথে। রিপোর্টার, লেখক কিংবা তথ্যদাতা হিসেবে থাকুন! যুক্ত হতে লিখুন/ লেখা পাঠান। লেখা পাঠানোর ঠিকানা sojakotha.com@gmail.com

সম্পাদক ও প্রকাশক (অবৈতনিক):

ব্যারিস্টার শাহ আলম ফারুক

Contact Us

221 Whitechapel Road London E1 1DE
Email : sojakotha.com@gmail.com

অনুসরণ করুন

Browse by Category

  • ENGLISH SECTION
  • কলাম
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • নারী
  • নির্বাচিত
  • প্রবাস
  • বাংলাদেশ
  • বিনোদন
  • বিবিধ
  • বিশ্ব
  • ভিডিও
  • মতামত
  • মন্তব্য প্রতিবেদন
  • মানবাধিকার
  • যুক্তরাজ্য
  • লাইফস্টাইল
  • লিড নিউজ
  • সংবাদ শিরোনাম
  • সম্পাদকীয়
  • সাক্ষাৎকার
  • সাহিত্য
  • সোশ্যাল মিডিয়া
  • স্বাস্থ্য

Recent News

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ
নির্বাচনী অনিয়মের কারণে স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে

সরকারের মধ্যে অস্থিরতা : প্রেস উইংয়ের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ
  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.