ডেস্ক রিপোর্ট: মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন এমএসএফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে-ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার হচ্ছে।সরকারের সমালোচনা করলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে।
রোববার পাঠানো এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নিবর্তনমূলক নজরদারি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। আর এ নজরদারির প্রচেষ্টায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনটি।এমএসএফ বলেছে, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকের ওপর হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া নাগরিকের মুক্তচিন্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্বের শঙ্কা আরও বৃদ্ধি করবে, যা নিন্দনীয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ০৭ মে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ফেসবুকসহ অন্যান্য
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যসংবলিত কোনো পোষ্ট দেওয়া ও সে ধরনের পোষ্টে লাইক দেওয়া বা শেয়ার করা থেকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ তা না মানলে আইন অনুযায়ী তাঁর বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নোটিশ জারির দিনই বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও লেখককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ নাগরিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। সরকারের সমালোচনা করলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এ আইনে মামলা ও গ্রেফতারের যে সব ঘটনা ঘটছে পরিস্কারভাবে তা গণমাধ্যম ও বাক স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মানবাধিকার, জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকার অধ্যায়ে মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে নাগরিকদের মুক্তচিন্তা ও বাক্স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীন সরকারের সব ধরনের তথ্য অনুসন্ধান, প্রাপ্তি এবং প্রদানের অধিকারসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রক্ষার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে সরকার, জনপ্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করার স্বাধীনতা অর্ন্তভুক্ত।’
এমএসএফের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভয়াবহ করোনার দুর্যোগকালে নাগরিকদের কণ্ঠ রোধ করার অপচেষ্টা সরকারের মধ্যকার চরম অস্থিরতা, অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। সংবাদপত্র, সামাজিক গণমাধ্যমে মতামত দেওয়ার জন্য নাগরিকদের বা সংবাদকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া এবং তাঁদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ কোনো সরকারের নীতি হতে পারে না। দুর্যোগপূর্ণকালীন এ সময়ে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ, সমালোচনা ও সরকারের ভুল ধরিয়ে দেওয়াটাই যেকোনো সচেতন ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব। আর এ ধরনের সমালোচনা সহ্য করাও গণতান্ত্রিক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।’