স্ট্রেইট ডায়লগ প্রতিবেদক:
চট্রগ্রামে এই পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯২০ জন আর মৃত্যু বরণ করেছেন৪ ১ জনে সুস্থ হয়েছেন ১২০ জন। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন চট্রগ্রামে করোনায় আক্রাণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে? এর উওরে ডাক্তাররা জানাচ্ছেন ভয়ংকর তথ্যা। চিকিৎসকরা বলছেন, শনাক্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি প্রথম দিকে শনাক্ত হওয়া রোগীদের বেশিরভাগের মধ্যেই কোনও উপসর্গ না থাকলেও এখন দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। প্রথম এক মাসে যেখানে ৮১ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে গত ১৫ দিনে শনাক্তের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়ে হয়েছে ৮৪৫ জন। এর মধ্যেই চিকিৎসকরা আভাস দিচ্ছেন, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস তার চরিত্র বদলাচ্ছে। তারা বলছেন, প্রথম দিকে শনাক্ত হওয়া রোগীদের বেশিরভাগের মধ্যেই কোনো উপসর্গ না থাকলেও এখন দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।
এদিকে মঙ্গলবার একদিনেই ৫ শিশু ৪ ডাক্তারসহ চট্টগ্রাম আরও ৭৫ করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব সূত্র।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস শনাক্তের প্রথম ৩০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ১৫ দিনে সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন আরও ৩২ জন। তাছাড়া গত কয়েক দিনে নতুন শনাক্তদের মধ্যে প্রতিদিন প্রচুর শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশিসহ নানান দৃশ্যমান উপসর্গ নিয়ে হাসপাতাল এসেছেন। এসব কারণে চিকিৎসকরা আশংকা করছেন চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে হয়তো করোনা জিন পরিবর্তন হয়েছে। প্রথমদিকে অনেকটা সাদামাটা থাকলেও এই পর্যায়ে এসে আগের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে উঠছে ভাইরাসটি।
চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস তার চরিত্র বদলেছে। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে যারা আসছেন, তাদের মধ্যে মোটামুটি ২০ শতাংশ রোগীর মধ্যে শ্বাসকষ্ট রয়েছে। প্রথম এক মাসে এটি ২-৩ শতাংশের মত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে মৃত্যু সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। এদের মধ্যে বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণও আছেন কয়েকজন। প্রথম দিকে পজিটিভ হওয়া রোগীদের চেয়ে এখন যারা পজিটিভ হচ্ছেন তাদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে খারাপ। তাই ধারণা করছি এর মধ্যে হয়তো ভাইরাসটির জিন পরিবর্তন হয়েছে। ফলে রোগীদের শরীরে তার প্রভাবেও পরিবর্তন এসেছে। তবে এটি এখনই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা আরও সপ্তাহখানেক সময় নিতে চাই।’
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয় ২৫ মার্চ। প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৩ এপ্রিল।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের করোনা পরীক্ষা শুরু
চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যৌথ উদ্যোগে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়।
এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।
উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব আজ আক্রান্ত। এই মহামারিতে চট্টগ্রামসহ দেশেরসাংবাদিকরা সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত নিয়মাবলী পালন করে কঠোর সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান গণমাধ্যমকর্মীদের।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে ছয়জন গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।