স্ট্রেইট ডায়লাগ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের আক্রমণ যখন দেশের ভিআইপিদেরকেও আমজনতার কাতারে নিয়ে এসেছে বিশেষত চিকিৎসার ক্ষেত্রে। সে সময়ে খবর আসছে দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন কিছু ভিআইপি। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার (২৮ মে) ভাড়া করা একটি উড়োজাহাজে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন সস্ত্রীক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, একটি চার্টার (ভাড়া করা) ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়েছেন মোরশেদ খান। তাঁর সঙ্গে স্ত্রী নাসরিন খানও ছিলেন। ভাড়া করা ওই ফ্লাইটে যাত্রী হিসেবে শুধু তারা দুজনই ছিলেন। ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে।
মোরশেদ খানের লন্ডন যাওয়ার বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে এমন একজন বিএনপি নেতা বলেন, “করোনাভাইরাস আতঙ্কে তিনি দেশ ছেড়েছেন। কারণ এখানে চিকিৎসার কোনো সুব্যবস্থা নেই। সেজন্য বিমান ভাড়া করেই দ্রুত তাকে চলে যেতে হয়েছে চিকিৎসার কথা ভেবে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টার বেয়াই মোরশেদ খান। মোরশেদ খান একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের অন্যতম মালিক এবং এবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে একজন ছিলেন।
সোহেল এফ রহমানও সস্ত্রীক গেলেন লন্ডনে
যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান। শুক্রবার একটি বিশেষ ফ্লাইটে সোহেল এফ রহমান এবং তার স্ত্রী লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হন বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন।
সোহেল এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সালমান রহমানের বড় ভাই।
দেশ ছেড়েছেন মামলার আসামি রন ও দিপু সিকদার
অপহরণ ও হত্যার হুমকির মামলা হওয়ার পর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে চলে গেছেন সিকদার পরিবারের দুই পুত্র রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদার।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন ও দিপুর বিরুদ্ধে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া এবং অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ১৯ মে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়।
এরপর গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাই ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছেন বলে শুক্রবার খবর প্রকাশ করে ডেইলি স্টার।
তাতে বলা হয়, ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সিকদার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাংককে গেছেন রন ও দিপু সিকদার।
বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ৪৭ বছর বয়সী রন এবং তার ছয় বছরের বড় দিপু দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী।
যে ফ্লাইটে তারা ঢাকা ছাড়েন, তার পাইলট ছিলেন একজন ফরাসী নাগরিক, তার সহকারী ছিলেন বাংলাদেশের একজন পাইলট। ক্রু হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন একজন থাই নাগরিক।
উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে যাত্রীবাহী সব উড়োজাহাজ সংস্থার ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক। এরপর আরেকটি আদেশে এই সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়িয়ে চীন বাদে সব দেশের সঙ্গে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা কয়েক দফায় ১৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ৭ মে, ১৬ মে এবং ৩০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
ছবিতে বাম থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান, বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সিকদার পরিবারের দুই পুত্র রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার।