সোজা কথা রিপোর্ট: টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন মেজর নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ তল্লাশি চেকপোস্টে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তার নাম সিনহা রাশেদ খান। পুলিশের , ওই ভাষ্য, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অপর একজন সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া তল্লাশি চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা বাধা দেন। এই নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা তাঁর কাছে থাকা পিস্তল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা রাশেদ গুরুতর আহত হন। তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর টিশার্ট–ট্রাউজার পরিহিত ছিলেন।কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শাহীন আব্দুর রহমান সাংবাদিকদেরকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, শামলাপুরের লোকজন ওই গাড়ির আরোহীদের ডাকাত সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেন। এই সময়ে তল্লাশি চেকপোস্টে গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু গাড়ির আরোহী একজন তাঁর পিস্তল বের করে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
এসপি জানান, এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তার পিস্তলটি জব্দ করেছে। এ ছাড়া গাড়িতে তল্লাশি করে ৫০টি ইয়াবা বড়ি, কিছু গাজা এবং দুটি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। এসপি আরও বলেন, অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা রাশেদ একটি তথ্যচিত্র ধারণের কাজে আরও চারজন সঙ্গীসহ গত এক মাস ধরে হিমছড়ির একটি রেস্টহাউসে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শনিবার সন্ধ্যায় এই কমিটি গঠন করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক নির্দেশনায় বলা হয়, তিন সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি। অন্য দুই সদস্য হলেন, কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন করে প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের ভেতরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, কমিটি ঘটনার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ, উৎস অনুসন্ধান করবেন। একই সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত দেবেন।