মাননীয় সাংসদ আপনি জানেন? আপনার এলাকা কুমিল্লার চান্দিনা থানায়,মাদক আসক্তের সংখ্যা কতো??? ইয়াবার টাকা সংগ্রহে একটা শ্রেনী পরিবহন সেক্টরে ব্যাপক চাঁদাবাজী চালাচ্ছে। আমি গত ০৬ আগস্ট দুপুরে, চান্দিনা থানার গল্লাই, হোসেনপুর মোড় থেকে চান্দিনা যাবার উদ্দেশ্যে, একটি সি এন জি ভাড়া করি। প্রায় পৌঁনে এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মহিচাইল বাজারে পৌঁছাতেই একদল তরুণ আমায় বহন করা সি এন জিটি আটকে দেয়। ড্রাইভার চাঁদাবাজদের নির্ধারিত চাঁদা দিয়ে পথ চলতে শুরু করে।দের দুই কিলোমিটার অতিক্রম করে বারোরা এলাকায় পৌঁছলে, সেখানে আবার চাঁদাবাজরা আটকে দেয়,সেখানেও চাঁদা দিয়ে পথ চলতে থাকলে চান্দিনা পৌর সীমানা মুখে আটকে দেয়।পাঁচ / সাত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সি এন জি চালককে মোট চারবার চাঁদা দিতে হয়।
আমি চান্দিনা পৌঁছে, ড্রাইভারের কাছে জানতে চাইলাম,চারবার কিসের টাকা দিলেন? উত্তরে ড্রাইভার বললেন,বিট! আবারও জানতে চাইলাম, বিট কি? তিনি বললেন,পুলিশ আর নেতাগো চান্দা।আমি বললাম,আপনাদের এম পি সাহেব, না-কি খুব ভালো মানুষ। তিনি চাঁদাবাজ পছন্দ করেন না! ড্রাইভার অনেকটা আশ্চর্য হয়ে, ভ্রু কুচকে বললেন,আ রে! কি কয়!!! হের বারির ঘাডায় কাল্যার চর দেওন লাগে চল্লিশ টাহা।( বাড়ির ঘাডা বলতে স্হানীয় ভাষায়,বাড়ির কাছে)মাধাইয়া,নবাবপুর, চান্দিনা সদরে দিতে হয়,ষাট টাকা করে।ড্রাইভার জানালেন,শুধু চান্দিনা থানার মধ্যেই তাঁকে প্রতিদিন তিন শ’ টাকার উপরে চাঁদা দিতে হয়।ব্যাটারি চালিত রিক্সা থেকেও চাঁদা নেয়া হয়।
জানাযায়,পুরো চান্দিনায় অটো রিক্সা, সি এন জি আছে, কয়েক হাজার।চাঁদা তোলা হয় মোটা অংকের।
প্রতিদিন, চাঁদার ভাগ হয় তিনটি।একটি পুলিশ প্রশাসন, একটি উপজেলা প্রশাসন অপরটি দলীয় নেতাদের।
এ টাকা পরিবহন শ্রমিকরা দিতে বাধ্য হন।তবে সেটা আবার যাত্রীর পকেট থেকেই দিতে হয়।ফলে দু’ শ টাকার ভাড়া এখন চার ‘ শ টাকা।
ড্রাইভার জানালেন,এতো টাহা চান্দা কোনো সরকারের আমলে দেই নাই।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ এখন টেকনাফ থানায়।তিনি দক্ষ অফিসার বলেই টেকনাফ থানায় দেয়া হয়েছে।
আমি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় এবং মাননীয় আই জি পি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ জানাই, চান্দিনায় চাঁদাবাজী এবং মাদক সেবীদের উপরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর জন্য।
সমগ্র দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে ইয়াবার মরন থাবা।এ ভাবে চলতে থাকলে,আগামী পনেরো বছরে জাতি হবে মেরুদণ্ড হীন। কক্সবাজারের সমগ্র এলাকা, বিষেশ করে টেকনাফ সীমান্ত থেকে দেশে ইয়াবা ঢুকতে না পারলে এবং প্রতিটি ঝুঁকি পূর্ণ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো সম্ভব হলে, দেশে একটি ইয়াবাও ঢুকতে পারবে না।
অপরদিকে দেশে সুবিধা ভোগীদের চলছে গভীর ষড়যন্ত্র। দুর্নীতিবাজরা আসলেই কোনো দলের নয়।এরা যুগে যুগে সুবিধাবাদী।
সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, মানুষ। ওনারা ফেরেস্তা নন।ফেরেস্তা হলে গায়েবি সব খবর পেয়ে যেতেন। কাকে পদক দেবেন,কাকে ব্যাজ পরাবেন,সেটা প্রধান মন্ত্রী মহোদয়ের জানার কথা নয়।সেটা নির্ধারণ করবেন।প্রজাতন্ত্রের বিভাগীয় প্রধান বা শীর্ষ কর্তার।
ইদানীং কতিপয় সাংবাদিক বিতর্কিত প্রদীপ বাবুকে দুই প্রধান মন্ত্রীর পদকদেয়া ব্যাজ পরানো নিয়ে মজাকরে সোসাল মিডিয়ায় পোস্ট দিচ্ছেন। দেশের এতো বড় বড় ক্রাইম রিপোর্টার। ক্রাইম রিপোর্টার এসোসিয়েশন, গোয়েন্দা সংস্থা গুলো, বিষয়টি সরকার কে কেনো অবহিত করলেন না! এ কোন খেলায় মেতে উঠেছেন ওনারা? বাঘা বাঘা সাংবাদিকদের কাছে আগে এ ছবি ছিলো না?
– নাসিম আনোয়ার, সাংবাদিক, লেখক
(বানানরীতি ও মতামত লেখকের নিজস্ব, সোজা কথা ডটকমের এ ক্ষেত্রে দায় নেই)