সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট : যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকায় অবস্থিত শিশু উন্নয়ন (বালক) কেন্দ্রে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত কিশোরদের এখানে রাখা হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন রাত সাড়ে আটটার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন অপরাধে জড়িত দেশের বিভিন্ন জেলার ২৮০ কিশোর আদালতের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রে এসেছে। তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
যশোর কোতয়ালি থানার এসআই সেকেন্দার আবু জাফর জানান, নিহতরা হচ্ছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ছোলিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে ধর্ষণ মামলায় আটক নাইম হাসান (১৭), খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা দক্ষিণপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে হত্যা মামলায় আটক পারভেজ হাসান (১৮) ও বগুড়ার শেরপুর থানার মহিপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, সেখানে আটকদের মধ্যে দুই দল রয়েছে। এরা হচ্ছে পাভেল গ্রুপ ও রবিউল গ্রুপ। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রের ভেতরে সংশোধনের জন্য থাকা কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অতর্কিত সংঘর্ষ হয়। এ সময় তারা খাটের মশারি টাঙানোর লাঠি ও চেয়ারের হাতল ভেঙে মারামারি শুরু করে। এতে অন্তত আট কিশোর আহত হয়। এর মধ্যে তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের মনঃসামাজিক পরামর্শক (সাইকো সোশ্যাল কনসালট্যান্ট) মুশফিকুর রহমান বলেন, ৩ আগস্ট কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। তখন দুই কিশোর আহত হয়। মারামারি ঠেকাতে গিয়ে কেন্দ্রের প্রধান প্রহরী নুর ইসলাম আহত হন। এরপর দুই পক্ষকে দুটি পৃথক ভবনে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখা হয়। ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য দুই ভবনের তালা খুলে কিশোরদের বাইরে আনা হয়। তখন অতর্কিত দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিন কিশোর মারা যায়। আরও চারজন আহত হয়েছে।
৩ আগস্টের ঘটনা তদন্তের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত থাকার মধ্যে সর্বশেষ তিন জন নিহত হবার ঘটনা ঘটলো।