সোজা কথা ডটকম
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার
No Result
View All Result
সোজা কথা ডটকম
No Result
View All Result

লুণ্ঠন ঢাকতে বারো মাসে তেরো পার্বণ

- মাসকাওয়াথ আহসান

ডেস্ক রিপোর্ট by ডেস্ক রিপোর্ট
রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ | ৬:০০ অপরাহ্ণ
in বাংলাদেশ, মতামত, লিড নিউজ, সংবাদ শিরোনাম
0
লুণ্ঠন ঢাকতে বারো মাসে তেরো পার্বণ

স্কুলে শিক্ষা নেই, হাসপাতালে চিকিৎসা নেই, নরভোজিদের নড়াচড়ায় জীবনের নিরাপত্তা নেই, সমাজে শৃংখলা নেই, সড়কে নিরাপত্তা নেই, শুধু ফেসবুক জুড়ে আছে দেশপ্রেমের আহাজারি।

সুশৃংখল রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা ও কল্যাণমূলক সুশাসন দিতে না পারলেও; বারো মাসে তেরো দেশপ্রেম-পার্বণ সাজিয়ে কী ভাবে আপনি জনগণকে ব্যস্ত রাখতে পারেন ভাটের আলাপে; অথচ অব্যাহত রাখতে পারেন দুর্নীতি বসন্ত; সেই ধামাচাপা ক্যালেন্ডারটি দেখতে কেমন; চলুন আজ একটু নেড়েচেড়ে দেখা যাক।

অনেক যুবককে দেখতাম যুবতীর কোন সাড়া ছাড়াই; একপক্ষীয় প্রেম চালিয়ে যেতে। তাদের মতোই পাগল-প্রেমিক ফেসবুকের দেশপ্রেম পাগলেরা। মোড়ের দোকানে বসে দিনমান দেশ দেশ করে পড়ালেখাটা না শিখে; সারা জীবন জীবনের বোঝা বয়ে বেড়ায় এই প্রেমিকেরা।

পড়ালেখা করে না বলে ছাত্র পরিচয় দিতে পারেনি; তাই কী করো জিজ্ঞাসিলে উত্তর পাওয়া যায়; ছাত্রলীগ করি। (ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের টাইম মেশিন এই আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক)। তার মানে পেশাটাই ছাত্রলীগ করা। দেশপ্রেমকে পেশায় রূপান্তরের এই আত্মনির্ভরকৌশল পৃথিবীর আর কোন দেশে নেই। দক্ষিণ এশিয়ার ভারত-পাকিস্তান নামের দুটি ব্যর্থ দেশে দেশপ্রেমকে পেশায় রূপান্তরের চেষ্টা থাকলেও; রাষ্ট্রগুলোর আয়তন ও জনমিতিক বৈচিত্র্যের কারণে এতো ঘন গভীরতার দেশপ্রেম করার সুযোগ অবারিত নয়। বাংলাদেশের আয়তনের ক্ষুদ্রতা ও জনমিতিক একঘেয়েমির কারণে; একে একই রঙের ফুলের বাগান বাগানোর প্রচেষ্টায় দেশপ্রেম সারাক্ষণ ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকে বুকে।

সম্প্রতি ১৪-১৫ অগাস্ট; দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশই যথারীতি স্বাধীনতা ও শোক দিবস পালন করেছে। এসময় ভারত-পাকিস্তানের ফেসবুকে পতাকা হাতে দুটি হতদরিদ্র শিশু’র ছবি ভাইরাল হওয়াতে; দেশপ্রেমের তাজিয়া মিছিলে কিছুটা ভাটা লক্ষ্য করা গেছে। আর বাংলাদেশের ফেসবুকে ছিলো শোক প্রকাশের কনুইবাজির ভাইরাল ভিডিও।

এ থেকে বোঝা যায়; ভারত-পাকিস্তানে ৭৪ বছরে কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না পেয়ে বরং সেগুলো অকল্যাণরাষ্ট্রের রূপ নেয়ায়; জনগণের একটা আত্মোপলব্ধি ঘটেছে। দুঃস্থ শিশুকে সাহায্য করতে স্বাধীনতা দিবসে পতাকা কেনা ছাড়া সত্যিকার অর্থে পতাকা ওড়ানোর ইচ্ছা খুঁজে পাওয়া যায়নি সবার মাঝে। তারমানে এবার দেশপ্রেমের পূজা ও নফল নামাজে লোক হয়নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এই ভারত-পাকিস্তানের লোকের মধ্যে পতাকা জড়িয়ে ছবি তোলা ও বাচ্চার গালে পতাকার ছবি আঁকতে দেখলেই জনগণের আতংক হয়; নিশ্চয়ই এটা দুর্নীতিবাজ; তাই পবিত্র পতাকায় পাপ লুকাতে চাইছে। নামাজ পড়ার সময় কাউকে কাঁদতে দেখলে যেমন ভয় লাগে; নিশ্চয়ই অপরাধী; আল্লাহ’র সামনে স্বীকারোক্তি দিয়ে কাঁদছে। নইলে এতো ভেউ ভেউ করে কাঁদবে কেন! সৎ জীবন যাপন করলে, কারো ক্ষতি না করলে এতো কান্নাকাটি কখনোই ভেতর থেকে আসবে না।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র এর ব্যবস্থাপনা-প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতায় ন্যায়বিচারহীনতার বেদনায় ধুঁকছে। কিন্তু সেখানে বারোমাসে দেশপ্রেমের তেরো পার্বণ সাজিয়ে এতো ভক্তিমূলক সমাজ-ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটি; যে এখন একে দেখলে মনে হয়, জিকিরে ফিকিরে বুঁদ এক লাল সালুর মাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন।

বাংলাদেশের মানুষ পৃথিবীর সব দেশে ছড়িয়ে আছে; এমনকী অন্যগ্রহেও কেউ কেউ আছে বলে সন্দেহ করি। পৃথিবীর আর কোন দেশে রাজনীতির এমন বারো মাসে তেরো পার্বণের ঘনঘটা কী চোখে পড়েছে। অন্য কোন দেশের ছাত্রকে যদি জিজ্ঞেস করেন, কী করো; এর উত্তরে পড়াশুনা করি; এমন উত্তরই তো আসবে।

পৃথিবীর অন্য কোন দেশের মানুষের মুখে তার নিজের দেশের একটি প্রশংসা শুনিনি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নানান বয়সের মানুষকে বলে দেখেছি, তোমার দেশটা কিন্তু ভালোই। আমাকে অবাক করে দিয়ে সবাই তখন লেগে পড়েছে দেশের ব্যবস্থাপনার সমালোচনায়। ক্রিটিক্যাল সোসাইটি সবখানে; সুশাসনের জন্য সক্রিয় নাগরিক সবাই।

জার্মানি-ইতালি-ফ্রান্সের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বা সবে পাশ করা কোন ছাত্রকে দেশ নিয়ে গদ গদ হতে দেখবেন না। কল্যাণ রাষ্ট্রেও সারাক্ষণ তারা অসন্তুষ্ট সরকারের নানা পলিসি নিয়ে।

অথচ দক্ষিণ এশিয়া থেকে নরভোজির কামড়ে জার্মানি-ইতালি-ফ্রান্সে পালিয়ে আসা ভারতীয়-পাকিস্তানি বা বাংলাদেশীকে তাদের ফেলে আসা দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে; তারা পকেট থেকে পতাকা বের করে মাথায় শিখদের মতো বেঁধে দেশ-প্রশস্তির নফল নামাজ ও শিবপূজা সম্পন্ন করবে।

স্বাধীনতা দিবসে লন্ডনে ভারতীয় ও পাকিস্তানী বংশোদ্ভুতরা ১৪ ও ১৫ তারিখে দেশপ্রেমের তাজিয়া মিছিল বের করেছে; বাংলাদেশ বংশোদ্ভুতরা শোক দিবসে কনুইবাজি করেছে। এদের কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কী হয়েছিলো এই দিনে যে এমন করছো! ফেল করা ছাত্র বলে নিজেরা কিছুই বলতে পারবে না; তাদের নিজ নিজ দেশের দেশপ্রেম মামাদের ফেসবুক পোস্ট দেখিয়ে দেবে। দেড় ইটের মসজিদ-মন্দির বানিয়ে ফেসবুকের কিছু দেশপ্রেম পূজক তৈরি হয়েছে। আগে শাসকেরা যেরকম মসজিদে ইমাম নিয়োগ দিতো, বা মন্দিরে; এখন ফেসবুকের দেশপ্রেম মাজারের জন্য তেমন খাস-খাদেম নিয়োগ দেয়। সাধারণত ছাত্রজীবনে ড্রপ আউট হয়ে যাওয়া বা টেনেটুনে পাশকরা লোকেরা; রবীন্দ্রনাথ-নজরুল স্কুল পালিয়েছিলেন এই উদাহরণ তুলে কয়েকদিন কটা মোটা মোটা বই নিয়ে ঘুরে, ইনডেক্স মুখস্থ করে; দেশপ্রেম পণ্ডিত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইমাম সাহেব, পুরোহিত মহাশয় আর দেশপ্রেমের খাস খাদেম; একই ব্যাপার; যার নাই কোন গতি; সেই ধর্ম-দেশপ্রেমের দোকানি।

দেশ একটি মৃত্যু উপত্যকা; চারিদিকে অনিশ্চয়তা; অনাচার; কিন্তু বারো মাসের তেরো পার্বণে জিকিরে ফিকিরে বেঁচে থাকে জীবন্মৃত মানুষেরা।

জানুয়ারী মাসে দেশপ্রেমের প্রথম পার্বণ ১০ জানুয়ারী; বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এই মাসটিকে কাজে লাগাতে হয়; একাত্তরের ইতিহাস আলোচনা আর বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মহিমা নিয়ে। ফেসবুকের খাস খাদেমদের স্টক ফটো; আর একই গল্প ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলার প্রাবল্যে; এ মাসে জনগুরুত্বপূর্ণ কোন ইস্যুর কথা ফেসবুকের টেবিলে তুলতে পারবেন না। তুললে, খাস খাদেম, একাত্তরের পরাজিত শক্তি বলে কপালে ছ্যাঁকা দিয়ে দেবে। এইভয়ে চুপ করে থেকে জানুয়ারী মাস শেষ হলে এসে পড়বে ফেব্রুয়ারী।

ফেব্রুয়ারী মাস ভাষা-পূজার মাস। এসময় আপনার বাচ্চার মুখে অ আ ক খ আঁকিয়ে নিতে হবে; তা সে যতই ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুক না কেন। কত কষ্টে আছেন ভাষা সৈনিক অমুক বলে জীবিত ভাষা সৈনিক মুখের কাছে মাইক্রোফোন ধরে আপনাকে শুনতে হবে, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। এতোবার এই ইতিহাস বলার পরেও রাস্তায় কোন বাচ্চাকে যদি জিজ্ঞেস করা যায়, একুশে ফেব্রুয়ারীতে কী হয়েছিলো। বাচ্চাটা কী উত্তর দেবে তা অনিশ্চিত। ইতিহাসান মামারা অত্যন্ত খারাপ ছাত্র থেকে রাজনীতির খাস খাদেম হওয়ায় আজ পর্যন্ত তারা সামান্য একটু তথ্যও জাতির মনে গেঁথে দিতে পারেনি। শুধু সুরা বা শ্লোকের মতো অর্থ না বুঝে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী গানটা দুকলি গেয়ে দিতে পারবে কেউ কেউ। বাচ্চাকাচ্চাকে লাঠি পেটা করে এই গান শিখিয়ে; মেহমান আসলে গাও গাও বাবু করে সে গান গাওয়ায় ভাবীরা। ইংলিশ মিডিয়াম বাবুর কন্ঠে এই গান ভাইরাল হলে ভাবী প্রোপিক বদলে জানান দেয় আমি গায়ক বাবুর মা। ওরস বা রথের মেলার মতো বইমেলার মাঝে একুশে পার্বণের আনুষ্ঠানিকতা আর একুশে এলে শহীদ মিনারে গভীরভাবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নামাজ পড়তে হয়। এটা শোকের বিষয়; সুতরাং শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার সময় ভাব গাম্ভীর্য বজায় রাখতে হয়। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে পালন করতে হয় ফেব্রুয়ারী মাস। এই মাসে জনগুরুত্বপূর্ণ কথা উত্থাপন করলে, আপনার ল্যাঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড।

মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস। একাত্তরের ১লা মার্চ কী হয়েছিলো এরকম করে দিনওয়ারী তথ্যের ডালি নিয়ে হাজির হন ইতিহাসান ইমাম ও পুরোহিতেরা। ৭ মার্চ আপনাকে সারাদিন শুনতে হবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ। ভাষণ শুনলে মনে হবে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের অতীতের ঔপনিবেশিক শাসক নয়; ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ ঔপনিবেশিক স্বদেশী শাসকের উদ্দেশ্যে ঐ ভাষণ দিচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু এটা দেশপ্রেম কৃত্য সবসময় পাকিস্তানের মরে ভুত হয়ে যাওয়া শাসকের প্ল্যানচেট করে কাটাতে হবে আপনাকে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু’র জন্মদিন। এই দিন আপনি হাসবেন না কাঁদবেন! এর মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে সভা পুরোহিত হাসছেন না কাঁদছেন তা দেখে। ইমাম সাহেবকে দেখে নামাজ পড়ার মতো ব্যাপারটা। বঙ্গবন্ধু’র অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি এইদিন আলোচনার বিষয়, জনজীবনে মুসলীম লীগের সহমত ভাইয়েরা কীভাবেওপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিলেন সারাক্ষণ শাসকের স্তুতি, গুণ্ডামি আর উন্নয়নের বেহুদা ঢোল বাজিয়ে; এসব শোনার সময় আবারো কনফিউশন হবে, বঙ্গবন্ধু মুসলিম লীগের ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলছেন; নাকি আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে বলছেন। ধ্রুপদী গ্রন্থের ঐ এক মুশকিল মুসলিম লীগের মরে ভুত হয়ে যাওয়াদের সঙ্গে একীভূত হয়ে যায় আওয়ামী লীগের জ্যান্ত ভুতেরা।
২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এই দিন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের কনুইবাজি। ঠেলাঠেলি করে ছবিতে থাকতে হবে। দেশপ্রেমে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য এরকম ছবি আপনার অবশ্যই লাগবে। এরকম ছবির ফ্রেমে থাকতে পারলে সেকেন্ড হোম সুনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

১৭ এপ্রিল মুজিব নগর দিবস পালনের আরেকটি ভাবগম্ভীর দিন। জাতির জীবনে যেহেতু সারাবছর “৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি দোলা দিতে হবে”; তাই সারাবছরই ফেসবুকে দেশপ্রেম পুরোহিতরা একাত্তরের বিভীষিকার ছবি দেখাতে থাকে। ছবি দেখে সংশয় জাগতে পারে, এগুলো একাত্তরের ছবি নাকি এ বছরের ছবি; ধ্রুপদী ছবি হলে যা হয়; ধ্রুপদী উপনিবেশের আবহ বজায় থাকে জাতির অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতে।

মে-জুন-জুলাই মাসগুলো থাকে জাতীয় ঘৃণাস্তম্ভে থুথু দেবার জন্য। এই ঘৃণা পরাজিত শক্তির উদ্দেশ্যে। কিন্তু ঘৃণাস্তম্ভ দেখলে মানুষের মনে হয় থুথুও ধ্রুপদী থুথু, অতীত-বর্তমান-আগামীর শাসকের উদ্দেশ্যে ঘৃণার থুথু মিলে-মিশে একাকার যেন ঘৃণা পার্বণে। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মাঝে ঘৃণার কারখানা খুব প্রবল। যে পরিবেশে দেখবেন ইউরোপের মানুষ কাজ করছে অনায়াসে; সেইখানে দক্ষিণ এশিয়ার লোকের নাসিকা কুঞ্চিত হয়েছে। অত্যন্ত স্টেটাস সচেতন বলে ‘থুথু’ ফেলে নিজেকে সুপিরিয়র দেখাতে হয় দক্ষিণ এশীয়কে। যার বসবাস “লা গোবরিনা ফেস্টে” সে দুর্গন্ধ একদম সহ্য করতে পারিনা বলে; ইউরোপীয়দের চেয়ে নিজেকে বড্ড ফ্রেশ সৌরভের পরিবেশ থেকে আসা এমন ভাটের আলাপ করতে হয়। গোয়াল ঘরে বেড়ে ওঠা বলদা রায় ফেসবুকে ঘৃণাস্তম্ভ প্রতিষ্ঠার পুরোহিত। তাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

অগাস্ট এলে আবার শোকের মাস। “কাঁদো বাঙালি কাঁদো”। আমার আব্বা মারা গেলেন মাস পাঁচেক হলো; ভালোবাসায় স্মরণে থাকেন তিনি; কিন্তু এতো ভেউ ভেউ করে কাঁদতে হয়না। অথচ ফেসবুক লাইভে বঙ্গবন্ধু স্মরণে এসে কাঁদতে না পারলেও কাঁদো কাঁদো মুখ করে থাকতে হয়। ওবায়দুল কাদেরের মতো সামান্য হাসির রেখা মুখে থাকলে; কান্না দেবতার অভিশাপ পড়বে যে। ১৫ অগাস্ট রিচুয়ালে আপনাকে প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করতে হবে। কাঁদলে হার্ট কান্ডিশান ভালো থাকে; হাসলেও থাকে। ছোট বেলায় মিলাদে বসে ইমাম সাহেব কেঁদে ফেললে; মুখটা গম্ভীর করার অভিনয় করতাম। এখনো তাই করি। কালচারাল এডজাস্টমেন্টের জন্য কতো কিছুই করতে হয়। অবশ্য আমি “প্যাসেজ টু হেভেন” নামে একটি রম্য উপন্যাস লিখে ফেলেছি। সেখানে বঙ্গবন্ধু আছেন একজন আমুদে অভিভাবক হিসেবে; আত্মবিশ্বাসের বাতিঘর হিসেবে। তাই পূজাঘন সমাজের বঙ্গবন্ধুকৃত্যে আর কোন আগ্রহ বোধ করিনা।

পল্লী কবি জসিমউদ্দীনের মতো দুই নয়নের জলে দাদীর কবর ভিজিয়ে রাখা সম্ভব হলো না আমার পক্ষে। নাগরিক জীবন ভালো লাগে ‘কান্দন’-এর রিচুয়াল না থাকায়।

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নিষ্কৃতি নেই; এগুলো উন্নয়ন পূজার মাস। ইউটিউবে পদ্মাসেতুর প্রশস্তির গান কিংবা বি কেয়ার বি কেয়ার ফুল ‘নুকা’ ‘নুকা’ জিকিরে ফিকিরে ঐ ইতিহাসান পুরোহিতই ধ্রুপদী আইয়ুব ভক্তের উন্নয়ন ঢোল বাজানোর মতো করে প্রতিদিন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার দিন। গোটা পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু আপনাকে পড়ে থাকতে হচ্ছে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ; এশিয়ার বৃহত্তম ইত্যাদি পালক পরা হুতু কিংবা তুতসি ম্যানের মতো ট্রাইবাল গৌরবের হারেরেরেরে-তে।

ডিসেম্বরে বিজয় দিবস; আবার দেশপ্রেমের মাতম; গালে পতাকার উল্কি; ভাবীর কন্ঠে দেশাত্মবোধক গান। “সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি।” কত রসিক এই গীতিকার; কতটা রম্য তিনি করতে পারতেন সিরিয়াস মুখে।

এর মধ্যে ঈদ আছে, পূজো আছে; আর আছে ফেসবুকে কাদা মেখে কাবাডি খেলা ও শংখ বাজানো। যেই কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে কাল্পনিক দুটো পক্ষ বানিয়ে হাডুডুডু ডু ডু টিক টিক টিক; জাপটাইয়ে ধরার লোকজ বিহবলতা। জাতীয় খেলা কাবাডির মাঝ দিয়ে সমাজ-মানসের বিনোদন যে প্রত্ন ডানা মেলে; অপার সে আনন্দ।

এই যে বারো মাসে তেরো পার্বণ; এ আসলে জুয়াঘরের হৈ চৈ; এর মাঝে ঠিকই দাঁও মেরে দিচ্ছে দেশপ্রেমের বলীবর্দ মোষেরা। ভিক্ষুক থেকে সম্পদশালী হয়ে ওঠার ঠগ ও প্রতারকের সমাজে তাই যখন কাউকে দেশ দেশ করে হাপুস নয়নে কাঁদতে দেখি; সেই যে ঈদগাহে মুনাজাতের মতো ক্রন্দনরত লোকেদের দেখে যে ভয় লাগতো; সেই ভয় ঠেলে আসে। দেশলুন্ঠনের এইসব শাসক-শোষক-পরিতোষক-পরজীবী লোমওঠা নেকড়েগুলো কাঁদতে থাকে; আর তাদের লুন্ঠিত সম্পদের কুকুর দাঁতগুলো হাসতে থাকে বারো মাসের তেরো পার্বণে।

– মাসকাওয়াথ আহসান

সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষক

এডিটর-ইন-চীফ

ই-সাউথ এশিয়া

Tags: বাংলাদেশমাসকাওয়াথ আহসান
Previous Post

ইতালী আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবস পালন

Next Post

যশোরে তিন বন্দী খুন: ৮ কিশোরকে গ্রেফতার দেখালো পুলিশ

Next Post
যশোরে তিন বন্দী খুন:  ৮ কিশোরকে গ্রেফতার দেখালো পুলিশ

যশোরে তিন বন্দী খুন: ৮ কিশোরকে গ্রেফতার দেখালো পুলিশ

লিখুন - বলুন - তথ্য দিন।।

দেশে বিদেশে যেখানে থাকুন আপনি হ্যাঁ আপনি যুক্ত হতে পারেন সোজাকথা ডটকম পরিবারের সাথে। রিপোর্টার, লেখক কিংবা তথ্যদাতা হিসেবে থাকুন! যুক্ত হতে লিখুন/ লেখা পাঠান। লেখা পাঠানোর ঠিকানা sojakotha.com@gmail.com

সম্পাদক ও প্রকাশক (অবৈতনিক):

ব্যারিস্টার শাহ আলম ফারুক

Contact Us

221 Whitechapel Road London E1 1DE
Email : sojakotha.com@gmail.com

অনুসরণ করুন

Browse by Category

  • ENGLISH SECTION
  • কলাম
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • নারী
  • নির্বাচিত
  • প্রবাস
  • বাংলাদেশ
  • বিনোদন
  • বিবিধ
  • বিশ্ব
  • ভিডিও
  • মতামত
  • মন্তব্য প্রতিবেদন
  • মানবাধিকার
  • যুক্তরাজ্য
  • লাইফস্টাইল
  • লিড নিউজ
  • সংবাদ শিরোনাম
  • সম্পাদকীয়
  • সাক্ষাৎকার
  • সাহিত্য
  • সোশ্যাল মিডিয়া
  • স্বাস্থ্য

Recent News

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

মেঘনা আলমকে আটকের ঘটনা ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণের প্রকাশ

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ
নির্বাচনী অনিয়মের কারণে স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে

সরকারের মধ্যে অস্থিরতা : প্রেস উইংয়ের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ
  • About
  • Advertise
  • Privacy & Policy
  • Contact

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • মানবাধিকার
  • খেলাধুলা
  • তথ্যপ্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • প্রবাস
  • মতামত
  • যুক্তরাজ্য
  • স্বাস্থ্য
  • বিবিধ
    • কলাম
    • ভিডিও
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • লাইফস্টাইল
    • সাক্ষাৎকার

স্বত্ব © 2025 সোজা কথা | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed and Maintained by Team MediaTix.