মাননীয় মেয়র সাহেব এই করোনাকালীন সময়ে আপনাকে বলছি,আল্লাহর দোহাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের মুক্তি দিন। আপনার লালিত পালিত লোকজনের অত্যাচারে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা অতিষ্ঠ।
অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন বা নতুন ট্রেড লাইসেন্স করা থেকে বিরত রয়েছেন। অনেকেই আবার নতুন লাইসেন্স করতে অনীহা প্রকাশ করছেন ঝক্কি ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য।
সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকতা কর্মচারী এবং তাদের নিয়োগক ত দালাল লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িদের হয়রানি করছে।
সিটি করপোরেশন থেকে নোটিশ করে নানা প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধ টাকা লুটে নিচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের অভিযোগ নোটিশ পাঠাবার পর পরই শুরু হয় দালালদের তান্ডব। অনেকেই নিরুপায় হয়ে দালালের খপ্পরে পড়েন। আবার অনেকে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করেন।
সিটি করপোরেশনের দপ্তরে সিসি টিভি থাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের নানান তালবাহানা। টেবিলের ফাঁক দিয়ে অথবা মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে বা তাদের নিয়োগকৃত লোকের মাধ্যমে সুবিধা মতো স্থানে চাহিদা মতো অবৈধ টাকা আদায় করে।এ সব বিড়ম্বনার শিকার হয়ে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন নতুন লাইসেন্স করতে বা নবায়ন করতে ফলে মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার তথা সিটি করপোরেশন।
ব্যবসায়িদের অভিযোগ সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ফি জমা দেয়ার আগেই কর্মকর্তা কর্মচারী ও দালালদের টাকা আগে দিয়ে দিতে হয়।যদিও ব্যবসার ধরন অনুযায়ী ফি নির্ধারিত। তবে ক্ষুদ্র একজন ব্যবসায়িকে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।নির্ধারিত ফি এর তিন চার গুন টাকা দিতে হয়।
লাইসেন্স করতে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ফরম কিনতে হয়,সেখানেও রয়েছে অনিয়ম পঞ্চাশ টাকার ফরম কিনতে হচ্ছে তিন চার গুন বেশি টাকা দিয়ে। এক কথায় শুরু থেকে শেষ অনিয়ম আর দুর্নীতি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড শুরু খিলগাঁও তিলপাপাড়া থেকে
০ ১ নং ওয়ার্ড।শেষ খিলগাঁও এর নাসিরাবাদ ত্রিমুহনী ৭৫ নং ওয়ার্ড। ৭৩,৭৪ নং ওয়ার্ড নন্দীপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা হতাশ। প্রতিটি ওয়ার্ডে একই অবস্হা বিরাজ করছে।এ সব ওয়ার্ড থেকে একটি অসাধু চক্র অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা ট্রেড লাইসেন্সের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ ছাড়া ফুটপাথে চাঁদাবাজী তো চলছেই। বিশ টাকা ভাগায় গুড়া চিংড়ি মাছ বিক্রেতাও এদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না।প্রতিনিয়ত মাস্তান পুলিশের চাঁদাবাজী।হতদরিদ্র ক্ষুদ্র ফুটপাতের ব্যবসায়িরাও সরকারকে ট্যাক্স দিতে আগ্রহী।তাঁদের বক্তব্য আমাদের রক্ত আর ঘামে ভেজা টাকা প্রয়োজনে সরকারকে দেবো,দেশের কাজের জন্য। সরকার বা সিটি করপোরেশন আমাদের কাছ থেকে বৈধভাবে গ্রহন করুক।আমরা পুলিশ আর দলীয় মাস্তানের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাই।
রাজধানী ঢাকার প্রত্যেক থানা এবং ওয়ার্ডে চাঁদা আদায়ের জন্য পুলিশের নিয়োজিত লোক আছে।তাদের এলাকা ভাগ করা বিট। প্রত্যেক বিটে লাইনম্যান আছে।স্হানীয় ভাষায় বিট বলে খ্যাত। এটা মূলত এলাকা ভিত্তিক পুলিশ আর মাস্তানের চাঁদাবাজীর নির্ধারিত স্হান।
বিট থেকে চাঁদা তুলে থানায় পৌঁছে দেয়া হয়।
ঢাকার ফুটপাথ থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার চাঁদা নেয়া হচ্ছে।এ টাকার শতকরা পাঁচ % টাকা রাস্ট্রীয় কোষাগারে জমা হলে, প্রতিমাসে এর পরিমান দাঁড়াবে কয়েক কোটি টাকা।
শুধুমাত্র দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫ টি ওয়ার্ডে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে জরিপ চালিয়ে এ কথার শতভাগ সত্য প্রমাণিত হবে।
মাননীয় মেয়র মহোদয়, আমাদের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন সাহেব নগরবাসীর পাশেই ছিলেন।তিনি ফিট ফাট হয়ে, স্যুট টাই পরিধান করে মশা মারতেন, রাস্তা পরিস্কার করতেন। মশার গোষ্ঠী মরুক বা নাই মরুক,নগরবাসী দেখেছেন তিনি কতো পরিশ্রম করতেন।
নিজের নাম লেখা হাজার হাজার ডাস্টবিন বসিয়ে ছিলেন,রাস্তায় রাস্তায়। এতে নগরবাসিদের কোনো উপকারে না আসলেও, মানুষের চোখে ধূলো দিয়ে ইচ্ছেমতো হাতিয়ে নিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের টাকা
আপনি তো মশাও মারেন না,আমাদের খবরও রাখেন না ।আমরা খিওগাও বাসী,বিশেষ করে ১,৭৩,৭৪,৭৫ নং ওয়ার্ডে যাঁরা বসবাস করছি,তাঁদের সমস্যার শেষ নেই, করোনাকালীন সময়ে এমনেতেই আমাদের রক্ত শূণ্যতা,যে টুকু আছে তা-ও আবার মশায় খেয়ে ফেলছে।
আপনি শেখ পরিবারের সদস্য। তাই আপনাকে জানাতে চাই, আপনার পালিত লোকজনের অত্যাচারেও আমরা অতিষ্ঠ।
– নাসিম আনোয়ার: লেখক
(বানান রীতি ও মতামত লেখকের নিজস্ব। এসবের জন্য সোজা কথা ডটকম-এর দায় নেই।)