সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনী রাতের অন্ধকারে বাসার ভেতরে ঢুকে এক নারীকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে ভিডিওচিত্র ধারণ করে এবং তা সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়ার ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশপাশি নারীর প্রতি বর্বরোচিত এ ঘটনাটির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরমাধ্যমে অনতিবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে।
গণমাধ্যম সুত্রে জানা যায়, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাতে দোলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও আবদুর রহিমসহ পাঁচজন যুবক উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়ন এলাকায় নারীটির বাড়িতে যায়। তাঁর স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করা এবং সম্প্রতি তাঁর স্বামী তাঁর কাছে আসা–যাওয়া করতে শুরু করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে নারীটিকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করে। পরে ভিডিওচিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারা টাকা দাবি করে এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। নারীটি তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি ০৪ অক্টোরব, ২০২০ তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। নারী নির্যাতনের চিত্রভাইরালের বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারের নজরে এলে তিনিবেগমগঞ্জ থানাকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। সন্ধ্যায়পুলিশ নির্যাতিতা নারীটিকে তাঁর বাবার বাসা থেকে উদ্ধার করে এবং অভিযান চালিয়ে চার অভিযুক্তকে আটক করে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে বেগমগঞ্জে নারীটির ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংসতা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা অব্যহতভাবে বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে যে চলে যাচ্ছে এটিতারই প্রমাণ। নিঃসন্দেহে নারীদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে জীবন যাপন ও চলাফেরার মত সহায়ক উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা রাষ্ট্রের চরম দূর্বলতা। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ঘটনার সাথে ক্ষমতাসীন দলীয় সমর্থক ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা থাকে। এক মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও ঘটনাটি সম্পর্কে না জানায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও জনমনেপ্রশ্ন উঠেছে। পাশfপাশি এমন নৃশংসতার ঘটনা সভ্য দেশ হিসেবে আমাদের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এমএসএফ সমাজে নারীদের প্রতি সহিংসতার এ ভয়াবহতা প্রতিরোধে জরুরী ভিত্তিতে সামাজিক সচেতনতা তৈরী এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুততার সাথে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যকীয় বলে দৃঢ়ভাবে মনে করে। এমএসএফ, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির পাশাপাশি নৃশংস এ ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে সর্ব্বোচ্চ পর্যায় থেকে জরুরি ভিত্তিতে জড়িতদেরবিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।