চরফ্যাশন(ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনে শাহনাজ আক্তার নামের এক গৃববধু পুলিশের ৯৯৯ নাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে হত্যার চেষ্টা থেকে নিজের জীবন বাঁচালেন । বৃহস্পতিবার রাতে নজরুল নগর ইউনিয়নের দক্ষিণ মঙ্গল গ্রামে যৌতুকের দাবীতে স্বামী, শ্বশুর গৃহবধু শাহনাজ আকতারকে মারধর ও গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টার
করেন। এসময়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ হামলাকারীদের কবল থেকে আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে রাতেই চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে
হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে বলে পুলিশ জানায়। বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের দক্ষিণ মঙ্গল গ্রামে স্বামীর গৃহে এ
ঘটনা ঘটে। এঘটনায় থানায় আজ মামলা দায়ের হয়েছে বলে আহত গৃহবধুর পরিবার সুত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর )হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধু শাহানাজ অভিযোগ করেন, ২০১৪ সনে চরফ্যাশন উপজেলা চরকলমী ইউনিয়নের মাইনউদ্দিনের ছেলে নেয়ামুল কিবরিয়ার সাথে তার প্রেম সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই বছরেই পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি পুত্র
সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক লোভী স্বামী তার পরিবারের কাছে থেকে যৌতুক দাবী করে আসছিলেন। সম্প্রতি মেয়ের সুখের কথা ভেবে
তার পরিবার জামাতা নেয়ামুলকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয়। ফের স্বামী নেয়ামুল বিদেশ যাওয়ার নামে আরোও ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। এনিয়ে তার দাম্পত্য জীবনে কলহ শুরু হয়। যৌতুক লোভী স্বামীর দাবীকৃত টাকা দিতে
অস্বীকার করলে তাকে একাধিকবার মারধর করেন। ইতিমধ্যে স্বামী নেয়ামুল ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার আঁখি নামে এক যুবতীর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে চলতি বছরে গোপনে তাকে বিয়ে করেন। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে
সংসার থেকে বিতারিত করতে স্বামী নেয়ামুল কিবরিয়া ও শ্বশুর মইনউদ্দিন , শ্বাশুরী জাহানারা , ননদ সৌরভী তার ওপরে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে।
বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাঁধে এসময় দ্বিতীয় স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়ার নামে ফের স্বামী তার দাবীকৃত ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বললে তিনি স্বামীর দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এসময় স্বামী পরিবারের সদস্যদের সাথে তার ঝগড়া শুরু হয়।
এর জের ধরে স্বামী পরিবারের সদস্য স্বামী নেয়ামুল কিবরিয়া ও শ্বশুর মইনউদ্দিন , শ্বাশুরী জাহানারা , ননদ সৌরভী মিলে তাকে মারধর করে গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টার করেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলেও তাকে উদ্ধারে ব্যার্থ হন। হামলাকারী স্বামী, শ্বশুরের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে তিনি ৯৯৯ নাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে দক্ষিন আইচা থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করেন। অভিযুক্ত নেয়ামুল কিবরিয়ার পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, এঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।