সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট: ২০১৯ সালে বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে মারা গেছে প্রায় ৬৭ লাখ মানুষ। বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে একই সময়ে বাংলাদেশে ৭৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ নবজাতকও রয়েছে। সম্প্রতি স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার-২০২০-এর গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করে যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট (এইচইআই), ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস ও ইভালুয়েশনস গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ প্রোজেক্ট। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ২০১৯ সালে বায়ুদূষণে অন্তত ৬৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে মূলত হাই ব্লাডপ্রেসার, ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, তামাকের ব্যবহার ও খাদ্যে সম্পূরক ঝুঁকির কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন শ্বাসের মাধ্যমে দূষিত বাতাস গ্রহণ করছে। আর যাদের মৃত্যু হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই মূলত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের বাসিন্দা।
অপরিকল্পিত শিল্প, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, ইটভাটা ও নির্মাণকাজে দূষণ প্রতিরোধী ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততার কারণে বাতাস দিন দিন ভারি হচ্ছে। বাতাসে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) অর্থাৎ অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি বেড়ে যাচ্ছে। মানবদেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান পিএম২.৫। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মান অনুযায়ী, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রাম পিএম২.৫ থাকলে তাকে সহনীয় বলা যেতে পারে। সেখানে বাংলাদেশে প্রতি ঘনমিটারে পিএম২.৫-এ আছে ৬৩ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম। ফলে ফুসফুস ক্যান্সার ও কিডনি বিকলের মতো রোগ ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। রাজধানী ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে। শুধু ঢাকা নয়, একই চিত্র দেশের অধিকাংশ শহরের। স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার-২০২০-এর প্রতিবেদনের এই তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ভারত, তাদের পিএম২.৫-এ আছে ৮৩ দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম।
২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ২০টি দেশের মধ্যে গত দশকের তুলনায় বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত মৃত্যু বেড়েছে ৩১ হাজার ৩০০। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারত, সেখানে মৃত্যু বেড়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন, তৃতীয় পাকিস্তান আর চতুর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ।