সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী ওমর চাঁন ওরফে সাচ্চু হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-মামুনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। হত্যার ঘটনার তিন বছর পর এই গ্রেফতারের ঘটনা ঘটলো।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাজিতপুর পৌর শহরের আলোছায়া সিনেমা হল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনকে কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। ২নং জিআর আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-মামুন তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
পিবিআই কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, ২০১৭ সালের ২৮ জুন বাজিতপুর উপজেলা সদরের পশ্চিম বসন্তপুর এলাকায় নিজের ভাড়া বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় ওমর চান ওরফে সাচ্চুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। চলতি বছরের ২৩ মে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
আর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে নান্টু মিয়া ও আল-আমিন নামে দু’জনকে আটক করা হলে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা আদালতে দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল-মামুনের নাম বলেন। এ দুই ঘাতকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয় বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে।
কিশোরগঞ্জ পিবিআই এর এসপি মো. শাহাদাৎ হোসেন আরও জানান, ভিকটিম সাচ্চুর ভাই লায়েস মিয়ার সঙ্গে আসামিদের ব্যবসায়িক বিরোধ চলছিল।
এ বিরোধের জের ধরে লায়েস মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ভাড়াটে ঘাতকরা ভুলক্রমে লায়েস মিয়ার পরিবর্তে তার বড় ভাই সাচ্চুকে খুন করে ফেলে। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব-বিরোধের জের ধরে সাচ্চুর বড় ভাই লায়েস মিয়াকে হত্যার জন্য ২ লাখ টাকার চুক্তিতে চার জনকে ভাড়া করেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
আর এ পরিকল্পনামাফিক উপজেলার পশ্চিম বসন্তপুরের ভাড়া বাসায় ঘুমন্ত লায়েস মিয়াকে হত্যার জন্য হামলা চালায় চার সদস্যের ঘাতকরা। কিন্তু ঘটনার রাতে লায়েস মিয়া গ্রামের বাড়িতে ছিলেন এবং এ বাসায় তার বড়ভাই ওমর চান ওরফে সাচ্চু ঘুমিয়েছিলেন।
ঘাতকরা লায়েস মিয়া ভেবে মশারির ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা বড় ভাই সাচ্চুকে খুন করার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু হয়েছে ভেবে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর মুমূর্ষু অবস্থায় সাচ্চু তার ছোট ভাই লায়েসকে ফোন করে শুধু হাসপাতাল শব্দ উচ্চারণ করে বাকরুদ্ধ ও নিস্তেজ হয়ে পড়েন।
পরিবারের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে সাচ্চুকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন সাচ্চুর মৃত্যু হয়। নিহতের বড় ভাই মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।