চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥
নিষিদ্ধ চরঘেরা জাল,পাই জাল,বেহুন্দি জালসহ মশারি জালে চরফ্যাশনের মেঘনা ও সাগর উপকূলের প্রাণবৈচিত্র্য রয়েছে হুমকিতে। কারেন্ট জাল বেহুন্দি জাল ও চরঘেরা জালে ভরসা করেই মাছ শিকারে চর চরাঞ্চলসহ নদী ও সমুদ্রে যাচ্ছে জেলেরা। আর এ নিষিদ্ধ জালেই লাখলাখ মিটার জাল পেতে নদীতে অবাধে মৎস্য শিকার করছে হাজার,হাজার জেলে। প্রশাসন কর্তৃক প্রতি সপ্তাহে নিষিদ্ধ এ জালসহ ট্রলার আটক করলেও নিষিদ্ধ এ জালে মৎস্য শিকার থামছেনা কিছুতেই। ফলে এ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও বেহুন্দি জালসহ চরঘেরা জালে প্রতিদিন আটকা পড়ছে হাজার হাজার মন জাটকা ইলিশসহ নানান ধরনের ছোটবড় মাছ। এছাড়াও পোয়া মাছ, কোড়াল মাছ,ছুররা ও পাঙ্গাশ মাছের পোনাও ধরছে এসব অবৈধ জাল ব্যবহারকারী জেলেরা। পাই জাল ও চরঘেরা মশারী জালের ফাঁদে নির্বিচারে মারা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের কোটি কোটি রেনুপোণাসহ জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ। পরিবেশবিদরা বলছেন এমন অবস্থা চলতে থাকলে হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র। অভিযোগ রয়েছে স্থানিয় প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়িদের মদদে এসব অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ কারেন্ট ও বেহুন্দি জাল এবং চরঘেরা জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করছে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে চরফ্যাশনের চরমানিকা কোস্টগার্ডের ট্রলারের মাঝি হেলালের নেতৃত্বে প্রত্যেক ট্রলার ও জেলেদের কাছ থেকে সাপ্তাহীক ও মাসিক চাঁদা কালেকশনের ভাগবাটোয়ারায় জেলেরা নদী ও চর চরাঞ্চলে এসব অবৈধ জাল ব্যবহার করছে। তার ইশারায় ইলিশ মৌসুম ছাড়াই ইলিশের জাটকা অবাধে শিকার করছে জেলেরা। এছাড়াও কোস্টগার্ডের ট্রলারের মাঝি হেলাল কে চাঁদা না দিলে জেলে ও মাঝিমাল্লাদের নানান হুমকি ধামকি দেয় বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা অভিযোগ করেন। চরফ্যাশন কোস্টগার্ড অফিস সংলগ্ন চর কচ্ছইপ্পা মৎস্যঘাটেও প্রশাসনের সম্মুখেই নিষিদ্ধ এ জাল বোনাসহ ট্রলারে জাল বহন করে নদী,সমুদ্রসহ চর চরাঞ্চলেও যাচ্ছে জেলেরা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, মাঝি হেলালের বিরুদ্ধে মাসিক আইন শৃঙ্খলার মিটিংএ অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করবে। কোস্টগার্ড চরমানিকা ষ্টেশন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবদুল মজিদ বলেন, জেলেদের সচেতন হওয়া জরুরী তা না হলে কোস্টগার্ডের একার পক্ষে নদী থেকে নিষিদ্ধ এ জাল মুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়বে। কোস্টগার্ড প্রতিদিন এসব নিষিদ্ধ কারেন্ট জালসহ বেহুন্দি ও চরঘেরা জাল লাখলাখ মিটার আটক করে পুড়িয়ে ফেলছে। সেই সাথে আটক করা হচ্ছে ট্রলার। তবুও এ নিষিদ্ধ জাল মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছেনা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, সোমবারে অভিযান চালিয়ে চর হাসিনায় ২১টি বেহুন্দি জাল আটক করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে ১২০টি বেহুন্দি জাল, ২টি পাই জাল, ৪ হাজারমিটার চর ঘেরা জাল এবং ১৯টি মশারি জাল আটক করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত এসব জাল ব্যবহারের আধিক্য বেশি থাকায় এ অভিযান চলমান থাকবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।