প্রফেসর আনু মুহাম্মদ বলেছেন, জনবৈধতাহীন দুর্বল সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য রামপালে ভারত, মাতারবাড়ীতে জাপান, পায়রাতে চীনকে কয়লা বিদ্যুৎও রূপপুরে রাশিয়াকে পরিমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে দিচ্ছে, যার উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক কয়লা উত্তোলন কোম্পানি গ্লোবালকোল ম্যানেজমেন্টের (সাবেক এশিয়া এনার্জি) ভার্চুয়াল রুদ্ধ (virtual closed meeting) সাধারণসভার বিরুদ্ধে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার উদ্যোগে ২৫ ফেব্রুয়ারী ( যুক্তরাজ্য সময় বিকেল ৪টা, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়) ডা. মুখলিছুর রহমানের সভাপতিত্বে এক অনলাইন প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংগঠনের সদস্য সচিব ড. আখতার সোবহান মাসরুর বলেন, প্রতারক কোম্পানি জিসিএম কোভিড–১৯ কে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ভার্চুয়াল রুদ্ধ সভার নামে শেয়ার হোল্ডারদের অংশ গ্রহণ করতে না দিয়ে তাদের অধিকার হরণ ও জবাবদিহিতাকে এড়িয়ে গিয়েছে। জিসিএমের আজকের সাধারণ সভা থেকে শেয়ার মূল্যের ব্যাপক হ্রাসের ঘোষণা প্রমাণ করে কোম্পানি দেউলিয় হয়ে পড়েছে এবং বাজারে ফুলবাড়ী প্রকল্প বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে সভায় অংশ নিয়ে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা প্রফেসর আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে কোন চুক্তি ছাড়াই প্রতারক কোম্পানি জিসিএম লন্ডন শেয়ার বাজারেফুলবাড়ী প্রকল্পের নামে শেয়ার বিক্রি করছে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে নিশ্চুপ থেকে তাদের কাজে প্রকারান্তরে সহায়তাই করছে। জনবৈধতাহীন দুর্বল সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য রামপালে ভারত, মাতারবাড়ীতে জাপান, পায়রাতে চীনকে কয়লা বিদ্যুৎও রূপপুরে রাশিয়াকে পরিমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে দিচ্ছে, যার উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
সভায় ফুলবাড়ী প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতাসুজিত প্রসাদ গুপ্ত অংশ নিয়ে বলেন, ফুলবাড়ীতেজিসিএমের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ অব্যাহত আছে ওথাকবে। তিনি অবিলম্বে জিসিএমকে বাংলাদেশেনিষিদ্ধ ও আন্দোনের নেতাদের নামে জিসিএমের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
মোস্তফা ফারুক বলেন, ফুলবাড়ীতে ২ লক্ষ মানুষকেভূমি থেকে উচ্ছেদ করে, ১৪ হাজার একর উর্বর কৃষিজমি এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশের ধ্বংস করে উন্মুক্তপদ্ধতিতে কয়লা উত্তেলন করতে দেয়া হবে না। তিনিকয়লার পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি গ্রহণকরার আহবান জানান।
সভায় ডা. রফিকুল হাসান জিন্নাহ সরকারের কয়লাভিত্তিক জ্বালানি নীতির সমালোচনা করে বলেন, দুনিয়া যখন পরিবেশর জন্য ক্ষতিকর কয়লা পরিত্যাগ করছে, বাংলাদেশ তখন উল্টো পথে হাটছে।
নিসার আহমদ জানান, ২০১৯ সালে তেল গ্যাস রক্ষাকমিটি, যুক্তরাজ্য শাখা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ ও ফাইনানসিয়াল কনডাক্ট অথরিটিকে জিসিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিবেদন না দেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তা প্রকাশের দাবি করেন।
সোস্যালিস্ট পার্টি যুক্তরাজ্যের নেতা পিট মেসন বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতি বাচাতে হলে জ্বালানি খাতকে জনমালিকানায় আনতে হবে এবং ব্যক্তি খাতকে তাড়াতে হবে।
যুক্তরাজ্যের এক্সটিংসন রেবেলিয়নের পারুস সাহাজলবায়ু পরিবর্তন রোধে মুনাফার আগে প্রকৃতিকে স্থান দেবার জন্য বলেন।
বাংলাদেশ থেকে তেল গ্যাস আন্দোলনের নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স সভায় অংশ নিয়ে বলেন, জিসিএমলন্ডন শেয়ার বাজার লুট করার কৌশল হিসেবে পাওয়ার চায়নার সাথে ভুয়া চুক্তি করেছে।
বাসদের (মার্কসবাদী) জহিরুল ইসলাম বলেন, এপ্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মাটি ও পানি সালফারে বিষাক্ত হবে এবং পানির স্তর নীচে নেমে যাবে।
কানাডা থেকে অংশ নিয়ে মাহবুব আলম বলেন, প্রাণ, প্রকৃতি ও সম্পদ রক্ষায় সাম্রাজ্যবাদীদের লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গোলাম কবির বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বতিল করতে হবে।
গোলাম মোস্তফা, পরিবেশ আন্দোলনকে বৈশ্বিক রূপ দেবার আহবান রাখেন।
সভায় যুক্তরাজ্য থেকে আরো অংশ নিয়ে সংহতিজানান, এ্যানজেলা ডিচফিল্ড, সোস্যালিস্ট পার্টির হেলেন পেটিসন, স্যাম স্যান্ডার, আনছার আহমেদউল্লাহ, নাজমা কামালী, খন্দকার মিজানুর রহমান বাবলু ,শেফা বেগম প্রমুখ।
সভা থেকে সদ্য প্রয়াত তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয়কমিটির সদস্য ও ২০০৬ সালের ফুলবাড়ী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী লেখক সাংবাদিক আবুল মকসুদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।