ডেস্ক রিপোর্ট : স্বাস্থ্য সচিবের সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নোয়াখালীলী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তাহেরকে শোকজ করা হয়েছে। শনিবার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চলতি দায়িত্বে থাকা ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ শোকজ বা কৈফিত তলব করা হয় এবং আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।গত ১৬ এপ্রিল বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটে ডা. আবু তাহের তার নিজের ফেইসবুক ওয়ালে স্বাস্থ্য সচিবের সমালোচনা করে লেখেন, ‘আমি নোয়াখালী ২৫০শয্যা সদর হাসপাতালে কর্মরত একজন এ্যানেসথেসিওলজিস্ট। রোগীর সবচেয়ে কাছ থেকে আমি চিকিৎসা দেই। গত ১ মাসে প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমিসহ আমার ডিপার্টমেন্ট এর কেউ ১টিও n95/kn95/ffp2 মাস্ক পাইনি। তাহলে স্বাস্থ্য সচিব মিথ্যাচার কেন করলেন উনি n95 ইকোয়িভেলেন্ট মাস্ক দিচ্ছেন? তাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা বলতেছে? এই মিথ্যাচার এর শাস্তি কি হবে?গত ১ মাসে আমার ডিপার্টমেন্টে ৮ জনের জন্য ২টি পিপিই দেওয়া হয়েছে। এই হলো পর্যাপ্ত পিপিই মজুদ। ওহ কি বলবেন আমরা কাজ করি না? গত ১ মাসে ১৫০ এর মত অপারেশন আমি একাই করেছি বাকিদের হিসাব দিলাম না। আপনাদের ওসব পিপিই মাস্ক না পেয়ে আমরা বসে নাই, বসে থাকবোও না কিন্তু জাতির সামনে মিথ্যাচার কেনো করবেন।আমি নিজের বেতনের টাকায় কেনা সার্জিকাল মাস্ক পরে প্রতিদিন অপারেশন করি। পিপিই নিজের টাকায় কেনা আছে, অন্যরা না পরলে একা পরে কি হবে তাই পরি না। ৩ মাস কি প্রস্তুতি নিয়েছেন? এখন বলেন এগুলো পাওয়া যাচ্ছে না?আমাদের অনেকে আজ আপনাদের এসব মিথ্যাচার এর কারণে আক্রান্ত। @মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এরকম অনেক মিথ্যা প্রস্ততির নাটক সাজিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে কিছু লুটেরার দল।’
এই স্ট্যাটাস দেওয়ার জেলে গতকাল শনিবার দুপুরে ডা. আবু তাহেরের কাছে কৈফিয়ত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন নোয়াখালী ২৫০ বেড হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। চিঠিতে হাসপাতালে পিপিইসহ যাবতীয় সুরক্ষা সামগ্রী পর্যাপ্ত থাকা ও সরবরাহ করার পরও এ ধরনের মন্তব্য সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধিমালা পরিপন্থি বলে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন করে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর মতামত জানার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে ডাক্তার আবু তাহের জানান, তিনি যা লিখেছেন তা শতভাগ সত্য। যদি কোন কিছু মিথ্যা প্রমাণ হয় তাহলে তিনি যে কোন ধরনের শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত আছেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং এ সময়ের মধ্যেই জবাব তিনি দেবেন বলে জানিয়েছেন।
নোয়াখালি ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম ডা. আবু তাহেরের শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।