সিরাজগঞ্জে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ ছাত্রকে গুলি করার বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করে দাবি করেছেন, গুলি করার ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃত ছিল।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রায়হান তদন্ত কমিটির কাছে এসব কথা বলেন। খবর সোজাকথা ডেস্কের।
মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সাবেক ছা্ত্রলীগ নেতা রায়হান শরীফ জানান, তার কাছে দুটি পিস্তল রয়েছে; দুটিই লাইসেন্সবিহীন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছেন শরীফ।
রাতে শিক্ষার্থীদের ফোনে কল করার কারণ জানতে চাইলে রায়হান বলেন, তিনি ‘তাদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করার জন্য’ ফোন করতেন।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আবির তমালকে ডান পায়ে গুলি করার অভিযোগে রায়হানকে গ্রেফতার করা হয়।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর ওই দিনই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক বায়জীদ খুরশীদ রিয়াদ।
এদিকে বিচারের দাবিতে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (৫ মার্চ) কলেজের সামনে সিরাজগঞ্জ-নলকা সড়ক অবরোধ করে। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া বিক্ষোভে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
মেডিকেল কলেজটির অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন।
রায়হান শরীফ পুলিশকে জানিয়েছেন, তার আগ্নেয়াস্ত্রের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জুলহাজ উদ্দীন বলেন, ‘পুলিশ শরীফের কাছ থেকে দুটি সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স ক্যালিবারের বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি ছুরি জব্দ করেছে। তার কাছে থাকা দুটি আগ্নেয়াস্ত্রই অবৈধ।’
তিনি আরও জানান, রায়হানের কাছে আরও আগ্নেয়াস্ত্র আছে কিনা তা দেখতে পুলিশ তার বাসভবনে তল্লাশি চালায়। কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি।
ওসি বলেন, রায়হান আগ্নেয়াস্ত্রের প্রতি বিশেষ আগ্রহের কারণে এক লাখ টাকায় একটি বিদেশি পিস্তল কেনার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ইন্টারনেট থেকে বিদেশি পিস্তলের ছবি ডাউনলোড করে রাখতেন।
রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এবং অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়েছে।