সন্দ্বীপ টাউনে সভা সমাবেশ (১)
[এ লিখাটি বা পর্বটি ওরাল হিস্ট্রি বা স্মৃতিকথন, ইতিহাস নয়। তবে ইতিহাসবিদরা এই লিখা বা পর্বগুলো থেকে তথ্য-উপাত্তগুলো গবেষণার জন্য সূত্র বা রেফারেন্স উল্লেখপূর্বক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে শেয়ার করতে হলে পূর্ব অনুমতি নিয়ে উদ্ধৃতি বা লেখকের টাইম লাইন থেকে শেয়ার করতে পারবেন। গবেষক ছাড়া অন্যরা পর্যালোচনা এবং প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে উদ্ধৃত করতে হলে লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে, আংশিক বা সম্পূর্ণ কোন ধরণের অনুলিপি করা যাবে না। বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক কপিরাইট আইন দ্বারা লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লিখিত অনুমতির জন্য ইমেইল: sandwip21st@gmail.com]
সন্দ্বীপ টাউনের দক্ষিণে একটা বড় মাঠ ছিল সাঁওতাল (হতাল) খালের পাড়ে। নাম তার খালপাড়। অধুনালুপ্ত ওয়াপদা রেস্ট হাউস সংলগ্ন দক্ষিণে। ওই খালপাড় মাঠে সভা সমাবেশ হতো। অন্যান্য সময় খেলাধুলা হতো। আমরাও অনেক খেলেছি। তাছাড়াও নৌকা – সাম্পান (নদী পথে পরিবহন) যোগে আসা মালামাল খালাস করা হতো। আমার মনে হয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতাভূক্ত থাকার কারণে সভা সামবেশের জন্য খালপাড় মাঠটি আইডিয়াল ছিল।
এই খালপাড়ের মাঠে এক সমাবেশে মাওলানা হুসাইন আহমদমাদানি ১৯২৩ সালে বক্তৃতা করেন। মাওলানা মাদানী দারুল উলুমদেওবন্দ থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করার পর তার পরিবারসহ মদিনায়যান। তিনি সেখানে আরবি ব্যাকরণ, উসুল আল ফকহ, উসুল আলহাদিস ও তাফসির শিক্ষাদান করতে থাকেন। তিনি ১৮ বছর ধরেমদিনায় ও মাসজিদে নববীতে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান করেছেন এবংওই দীর্ঘ সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজামুবারকের পাশে হাদিস পড়িয়েছিলেন। এরপর তিনি সিলেট, কলকাতা সহ ভারতের অনেক জায়গায় শিক্ষকতা করেন৷ তারপরতিনি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান শিক্ষক এবং শাইখুল হাদিসনিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে ভারতের সবচেয়ে সন্মানীয় বেসামরিক পদকপদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন। এই মহান সর্বজন শ্রদ্বেয় ও সর্বোজ্ঞসুধীজন ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের স্পুলিঙ্গ বিচ্ছুরণ করতেসন্দ্বীপে আসেন।
সন্দ্বীপে ফরায়েজী আন্দোলন এবং ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, খিলাফত কমিটি, জমিয়তে ওলামা হিন্দ ওকম্যুনিস্ট পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। জমিয়তে ওলামা হিন্দের ব্যাপক সমর্থন ছিল আলেম সমাজের মধ্যে। তন্মধ্যে মাওলানা মুছা, মাওলানা মনিরুজ্জামান ও মাওলানা আমিন উল্লাহ সহ অনেকে সন্দ্বীপে দেওবন্দী আলেম ও রাজনৈতিক নেতা ছিলেন।
সন্দ্বীপে ও খালপাড়ের মাঠে এক সমাবেশে মাওলানা হুসাইন আহমদমাদানির বক্তৃতা সত্যি গুরুত্ব বহন করে। কেননা তিনি দেওবন্দী আন্দোলন, রেশমি রুমাল আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দাবানলের মত উত্তপ্ত আগুনের পাত্রে রাখা পানি যেন ফুটছে। দেওবন্দী আন্দোলনের সূত্রপাত হয় দারুল উলুম দেওবন্দে। ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে অবস্থিত একটি দরছে নিজামীয়া মাদরাসায়।
সুন্নি ইসলাম কেন্দ্রিক পুনর্জাগরণবাদী আন্দোলন দেওবন্দ থেকে শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ব্যর্থ সিপাহী বিদ্রোহের পর ১৮৬৬ সালের ৩০ মে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলন এখনো ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, বর্তমানে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও বিস্তার ঘটেছে। এই আন্দোলন শাহ ওয়ালিউল্লাহ (কুতুবউদ্দিন আহমেদ ইবনে আবদুল রহিম) (১৭০৩ – ১৭৬২) দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। তাছাড়াও সালাফি, তাকিউদ্দিন আহমদ ইবনে তাইমিয়া (১২৬৩ – ১৩২৮) ও মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব (১৭০৩ – ১৭৯২) দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
রেশমি রুমাল আন্দোলন (তেহরিক-ই-রেশমি রুমাল) বলতে বেনিয়া ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করার জন্যে ১৯১৩ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে দেওবন্দি আলেমদের দ্বারা সংগঠিত একটি আন্দোলন। এতে উসমানীয় সাম্রাজ্য, জার্মান ও আফগানিস্তানের সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়। আফগানিস্তানে দেওবন্দি নেতা উবাইদুল্লাহ সিন্ধির কাছ থেকে পারস্যে আরেকজন নেতা মাহমুদুল হাসানের কাছে পাঠানো চিঠিটি পাঞ্জাব সিআইডি উদ্ধারের করে। অতঃপর তাদের রাষ্ট্র বিরোধী পরিকল্পনা জানিজানি হয়ে পরে। চিঠিটি রেশমের কাপড়ের উপর লেখা হয়েছিল বলে এর নামকরণ করা হয় রেশমি রুমাল আন্দোলন। রেশমি রুমাল আন্দোলন ভারতের উপজাতীয় এলাকায় একটি মুসলিম বিদ্রোহ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল এই চিঠিতে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯১৫ সালের অক্টোবরে মাওলানা উবাইদুল্লাহ সিন্ধি ও দারুল উলুম দেওবন্দের প্রিন্সিপল মাওলানা মাহমুদুল হাসান কাবুলের দিকে যাত্রা করেন। উবাইদুল্লাহ সিন্ধি আফগানিস্তানের আমির হাবিবুল্লাহ খানকে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য প্রস্তাব করতে চেয়েছিলেন। অন্যদিকে মাহমুদুল হাসান জার্মান ও তুর্কির সাহায্য চান। মাহমুদুল হাসান হেজাজের দিকে অগ্রসর হন।
এর মধ্যে উবাইদুল্লাহ সিন্ধি আফগানিস্তানের আমিরের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হন। তাকে তুরস্কে পৌছে দিতে তার সাথে আসা অনুসারী ছাত্রদের নিয়ে কাবুলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে,ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্যান-ইসলামি চিন্তাধারা সর্বোত্তম ভূমিকা রাখতে পারবে। ব্রিটেনের বিরুদ্ধে খলিফার জিহাদে যোগদানের জন্য তিনি তুরস্ক যেতে ইচ্ছুক ছিলেন। বার্লিন-ভারতীয় কমিটি যা ১৯১৫ সালের পর ভারতীয় স্বাধীনতা কমিটিতে রূপ নেয়।পরে তা ইন্দো-জার্মান-তুর্কি মিশনে রূপ নেয়; যা ইন্দো-ইরানি সীমান্তের উপজাতিগুলোকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে উৎসাহ দেয়ার কথা ছিল।
এই গ্রুপটি ১৯১৫ সালের ডিসেম্বরে কাবুলে দেওবন্দিদের সাথে মিলিত হয়। এই মিশন ভারতীয় আন্দোলনের বিপ্লবী-কর্মীদের ভারতের সীমানায় নিয়ে আসার পাশাপাশি জার্মান সম্রাট, আনোয়ার পাশা ও মিশরের খেদিব আব্বাস হিলমির বার্তা নিয়ে আসে; যাতে ভারতেইংরেজের বিরুদ্ধে অগ্রসরের কথা ছিল। মিশনের তাৎক্ষণিক উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানের আমিরের ব্রিটিশ ভারতের বিরুদ্ধে অগ্রসর হওয়া এবং আফগান সরকারের কাছ থেকে চলাচলের উন্মুক্ত পথ লাভ করা।
কিন্তু পরিকল্পনা ফাস হওয়ার পর শীর্ষ দেওবন্দি নেতারা গ্রেপ্তার হন। শাইখুল হিন্দ বলে পরিচিত মাহমুদুল হাসানকে মক্কা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ও তাকে ইউরোপের মাল্টায় নির্বাসন দেয়া হয়। শিক্ষক মাহমুদুল হাসান দন্ডিত হয়ে মাল্টা দ্বীপে নির্বাসিত হলে হুসাইন আহমদ মাদানি তার দেখাশোনার জন্য স্বেচ্ছায় তার সাথে যান। তিনি তিন বছরের জন্য কারারুদ্ধ ছিলেন। ১৯২০ সালে তিনি মাল্টার বন্দি জীবন থেকে মুক্তি লাভ করেন।
১৯২০ সালে মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানিও শিক্ষক মাহমুদুল হাসান সহ মাল্টা থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। আলেমদের সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নেতৃত্ব দেন। মাওলানা মাদানি বলেন যে, সরকারি কোন আইন যদি জনসাধারনের সেফটির জন্য বানানো হয়, এবং তা যদি শরিয়াহ বিরোধী না হয়;তাহলে তা মান্য করতে হবে। ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯২১ ‘ব্রিটিশ সরকারেরঅধীনে চাকরি করা হারাম’ ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।দুই বছর কারাবাসের পর ১৯২৩ সালে তিনি মুক্তিলাভ করেন। এখনকওমি মাদ্রাসার আলেমগণ এই ফতোয়া মান্য করে চলেন।
ওই সময়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য আন্দোলন ছিল খিলাফত আন্দোলন (১৯১৯ – ১৯২৪)। ইহা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রভাবে উদ্ভূত একটি প্যান-ইসলামি আন্দোলন। অটমান সম্রাজ্যের ওসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ (১৮৭৬ – ১৯০৯) প্যান-ইসলামি কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। তুর্কিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন নির্মূল করার লক্ষ্যে এবং বিদেশি শক্তির আক্রমণ থেকে তাঁর ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্যকে রক্ষা করে বিশ্ব-মুসলিম সম্প্রদায়ের সুলতান বা খলিফা হিসাবে টিকে থাকার জন্য এ আন্দোলনের সূচনা করেন। ওই সময়ে তাঁর পক্ষ থেকে জামালউদ্দীন আফগানি প্যান-ইসলামবাদ প্রচারের জন্য ভারত সফর করেন। কিছু ভারতীয় মুসলমানেরা এ মতবাদের প্রতি অনুকূল সাড়া দেয়।
বাংলাদেশের সংখ্যাধিক্য জনমানুষের স্বকীয়তা রক্ষার্থে ও উন্নতিকে সামনে রেখে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল ও একপক্ষের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বঙ্গভঙ্গ রদ (১৯১১) হয়েছিল [যা আবার পেতে আমাদের ৬৬ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ৭১ এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করতে হয়েছিল। তাছাড়াও লাহোর প্রস্তাবের স্টেটস এর এস কেটে দিয়ে আমাদের পরাধীন করে রাখা হয়েছিল ২৪ বছর।] তুরস্কের ওপর ইতালীয় আক্রমণ (১৯১১) ও বলকান আক্রমণ (১৯১১ – ১৯১২) এবং তুরস্কের বিপক্ষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে (১৯১৪ – ১৮) সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ব্রিটেন অংশগ্রহণ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয় এবং সেভার্স চুক্তির (১৯২০) অধীনে তুরস্কের ভূখন্ড ইউরোপীয় শক্তিগুলির মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হওয়ায় ইসলামের পবিত্র স্থানসমূহের ওপর খলিফার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।
এ কারণে তুর্কি খিলাফত রক্ষা এবং সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ ও ইউরোপীয় শক্তিগুলির কালো হাত থেকে তুরস্ক খেলাফতকে বাঁচানোর জন্য ১৯১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খিলাফত আন্দোলন শুরু হয়। এসময়ে কংগ্রেসের মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৯১৯ সালের এপ্রিলে সংঘটিত জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড এবং ১৯১৯ সালের রাওলাট অ্যাক্টকে সরকারি নির্যাতনের প্রমাণ হিসাবে চিহ্নিত করেন।ফলে গান্ধী অহিংস জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ‘সত্যাগ্রহ’ শুরু করেন।
সত্যাগ্রহের প্রতি মুসলমানদের সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেন এবং কেন্দ্রীয় খিলাফত কমিটির সদস্য হন। সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের নাগপুর সম্মেলনে (১৯২০) গান্ধী ‘স্বরাজ’ কর্মসূচিকে খিলাফত আন্দোলনের দাবির সঙ্গে যুক্ত করেন এবং উভয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য অসহযোগ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। বাংলায় খিলাফত-অসহযোগ আন্দোলন (১৯১৮ –১৯২৪) একটি গণআন্দোলনে পরিণত হয় এবং এতে হিন্দু ও মুসলমানরা অংশ নেয়।
এমন ইংরেজ বিরোধী রাজনৈতিক পরিস্থিতে ১৯২৩ সালে সন্দ্বীপ টাউনের খালপাড়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই রকম সভা সমাবেশ থেকে উচ্চারিত হতো, খিলাফত রক্ষা করো ও স্বরাজ অর্জন করো,এবং এ আন্দোলনকে সমর্থন করা প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের পবিত্র কর্তব্য। ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অখন্ডতা এবং খিলাফতকে রক্ষা করার পক্ষে জন সমর্থন আদায় করাই ছিল এর লক্ষ্য। সাথে সাথে স্বরাজও।
মাওলানা মুছা, মাওলানা মনিরুজ্জামান ও মাওলানা আমিন উল্লাহ সহ অনেকে সন্দ্বীপে জমিয়তে ওলামা হিন্দের সমর্থক, প্রতিনিধি ও নেতা ছিলেন। সন্দ্বীপে উনারা স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকার জন্য কারাবরণও করেছেন। (সন্দ্বীপে আরো অনেকে কারাবরণ করেছেন, তাঁদের নাম ও অবদান পরবর্তী কোনো পর্বে লিখবো আশা করি)। দেওবন্দীরা কংগ্রেস ও খেলাফত কমিটির সাথে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনও করেছিলেন।
তাই, ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক উত্থানের সময়ে মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানির সন্দ্বীপ টাউনের খাল পাড়ের জন সমাবেশের জন্য ১৯২৩ সালে সন্দ্বীপ সফর নিশ্চয় গরুত্ব বহন করে। জনশ্রুতি আছে যে, ওই সমাবেশে স্মরণকালের জনসমাগম হয়েছিল। স্বাধীনতার দ্যুতি সকলের চোখেমুখে ফুটে উঠেছিল। অনেক ঘাত প্রতিঘাত ও আনন্দ বেদনার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনিতা এসছে। এক দীর্ঘ পরিক্রমার মধ্য দিয়ে আমাদের আজকের স্বাধীনতা; যা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা যুগ যুগান্তরের প্রজন্মের কর্তব্য।
আমরা যেন নিজেকে প্রশ্ন করি – আমাদের দেশ প্রেম আছে তো? আমরা দেশকে কি দিতে পেরেছি? ব্যক্তির জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তি যেমন জরুরি; ঠিক তেমনি করে বাংলাদেশের স্বাধীনিতা ও মুক্তি অটুট রাখতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি বলেছেন – “Ask not what your country can do for you; ask what you can do for your country.”(আপনার দেশ আপনার জন্য কী করতে পারে তা জিজ্ঞাসা করবেন না; আপনি আপনার দেশের জন্য কি করতে পারেন তা জিজ্ঞাসা করুন।)
রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা যেন কড়ি দিয়ে না বেঁচি।
স্মৃতিকথনে: শিব্বীর আহমেদ তালুকদার
আইনজীবী, সমাজ সংগঠক ও কথ্য ইতিহাস গবেষক।
sandwip21st@gmail.com
—–
আরো বিস্তারিত জানার জন্য:
—–
আশা করি, এই পর্বটি আপনাদের ভালো লেগেছে। লাইক ও কমেন্টের মাধ্যমে মতামত দিবেন, প্লিজ। কোনো রকমের তথ্য বিভ্রাট হলে ইনবক্সে ম্যাসেজ দিবেন বা ইমেইল করবেন। ফলে ভুল শুধরে নিতে পারবো। আর এই পোস্টটি শেয়ার করে নিন আপনার অনলাইনের সোশ্যাল বন্ধুদের মাঝে। যাতে আগামী পর্ব থেকে উনারাও সরাসরি স্মৃতিকথনের সাথে যুক্ত হতে পারেন। সন্দ্বীপকে নিয়ে নস্টালজিয়া ও কেতাদুরস্ত সন্দ্বীপিয়ানা স্মৃতিকথনমূলক পরবর্তী পর্বের উপর ‘চোখ রাখুন’ – ।
আগামী রোববার, ৯ অগাস্ট ২০২০ ইং, আসছে আমার দেখা সন্দ্বীপ (পর্ব নং ১৪)
শিরোনাম থাকবে: সন্দ্বীপ টাউনে সভা সমাবেশ (২)
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: মতামত ও বানান রীতি লেখকের নিজস্ব, এক্ষেত্রে সোজা কথা ডটকম-এর কোন দায় নেই)