সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ঘিরে গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির সহিংসতায় স্থানীয় পুলিশও অংশগ্রহণ করেছে।
ওই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। খবর বিবিসির।
শুক্রবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে অ্যামনেস্টি আরও অভিযোগ করেছে যে, দাঙ্গা থামানোর জন্য যেমন পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় নি, তেমনই দাঙ্গা পীড়িত মানুষ যখন ফোন করে পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন, তখনও তাদের এগিয়ে আসতে দেখা যায় নি।
২৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া হিন্দুত্ববাদী ওই তাণ্ডবে ৫০ জনেরও বেশি মুসলমান নিহত হয়।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের মারধর, আটককৃতদের নির্যাতন এবং হিন্দুদের সঙ্গে দাঙ্গায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তাদের কাছে থাকা কয়েকটি ভিডিওতে দাঙ্গার সময় পুলিশকে নীরব ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকতে এবং দাঙ্গাকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ করতে দিতে দেখা গেছে।
হিন্দুত্ববাদী নেতারা বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণ, দাঙ্গার উস্কানি দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং পুলিশ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। যাদের অধিকাংশই মুসলমান।
ফেব্রুয়ারির ওই দাঙ্গায় পুলিশের দুষ্কর্ম ও নির্মমতা নিয়ে সেসময় বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। অ্যামনেস্টির তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি আরও সুনিশ্চিত হল।
জানা গেছে, সহিংসতার প্রথম ৪ দিনে দিল্লি পুলিশের কাছে ১৩ হাজার ২০০টি ফোন যায়। তবে পুলিশ নীরব ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই সহিংসতা এমন চরম আকার ধারণ করে। ফোনে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে দাঙ্গার ঘটনা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও জানানো হয়েছে।
আরও বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দিল্লিতে দাঙ্গার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও দাঙ্গার সময়ে দিল্লি পুলিশের কী ভূমিকা ছিল, তার একটিরও তদন্ত হয় নি।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে অবশ্য দিল্লি পুলিশের এক মুখপাত্র সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, কোনো পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে যদি এধরণের অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে নিশ্চয়ই তদন্ত করা হবে।