সন্দ্বীপ টাউনে সভা সমাবেশ (৭)
[এ লিখাটি বা পর্বটি ওরাল হিস্ট্রি বা স্মৃতিকথন, ইতিহাস নয়। তবে ইতিহাসবিদরা এই লিখা বা পর্বগুলো থেকে তথ্য-উপাত্তগুলো গবেষণার জন্য সূত্র বা রেফারেন্স উল্লেখপূর্বক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে শেয়ার করতে হলে পূর্ব অনুমতি নিয়ে উদ্ধৃতি বা লেখকের টাইম লাইন থেকে শেয়ার করতে পারবেন। গবেষক ছাড়া অন্যরা পর্যালোচনা এবং প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে উদ্ধৃত করতে হলে লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে, আংশিক বা সম্পূর্ণ কোন ধরণের অনুলিপি করা যাবে না। বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক কপিরাইট আইন দ্বারা লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লিখিত অনুমতির জন্য ইমেইল: sandwip21st@gmail.com]
গত সপ্তাহে পর্ব নং ১৮ এ ভাসানীর রাজনৈতিক প্ল্যাটিনাম জুবিলীর কথা উঠে এসেছে। বলেছিলাম, `কি করেন নাই ভাসানী। কোন দিকে তার পদচারণা ছিল না। কি সমাজ, কি রাজনীতি, কি হক্কুল ইবাদ, কি হক্কুল্লাহ সহ জীবনের সব ক্ষেত্রে (১২ ডিসেম্বর ১৮৮০ – ১৭ নভেম্বর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত) দীর্ঘ ৯৬ বছরে কি করেন নাই ভাসানী।` হক ভাসানী রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন ৭৩ বছরের বেশি। প্ল্যাটিনাম জুবিলী।
১৯৬৯ সালে স্বৈরশাহী আইয়ুবের পতন ও ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে ভাসানীর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। আইয়ুবের পতন আন্দোলনে সন্দ্বীপের ভূমিকাও ছিল অনস্বীকার্য। ৬৯ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৫৮ সালের থেকে ১৯৬৯ সালে ২৫ মার্চ এ গণঅভ্যুত্থানের মুখে আইয়ুবের ১১ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।
পুরো আন্দোলনটা হয়েছিল ভাসানীর অগ্রণী ভূমিকায়, আর তখন বঙ্গবন্ধু ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি। আওয়ামী লীগের ৬ দফা ও ছাত্রদের ১১ দফা আইয়ুব বিরোধী মনোভাব ও পাকিদের বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় আচরণ আমাদের অসন্তোষ করে। ভারত থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান ও আমাদের স্বকীয়তা রক্ষা করার আশা গুড়ে বালি হয়ে যায়। ১৯৪৮ এর রাষ্ট্র ভাষা থেকে শুরু করে আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক তথা চাকরি বাকরি, শিক্ষা দীক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্যসহ সব সেক্টরে বৈষম্য ও বঞ্চনা ছিল সুস্পষ্ট।
১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা বাংলাদেশে গণসর্মথন লাভ করে। আইয়ুবের গোয়েন্দা সংস্থা অভিযোগ করে যে, ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে কতিপয় ব্যাক্তি ভারতীয় সহায়তায় এক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করছে। ফলে আইয়ুব সরকার উভয় পাকিস্তানে প্রায় দেড় হাজার বাঙালিকে গ্রেফতার করে। ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে অভিযুক্ত করে। ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে।
১৯৬৮ সালের নভেম্বরে ছাত্র অসন্তোষকে কেন্দ্র করে আইয়ুবের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ৬৯ এর তা একটা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। মওলানা ভাসানী ঘোষণা করেন, গভর্নর হাউস ঘেরাও করা হবে ও রাজনৈতিক কর্মসূচির দেয়া হবে। ৬ ডিসেম্বর ‘জুলুম প্রতিরোধ দিবস’ পালনের জন্য মওলানা ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), মোহাম্মদ তোয়াহার পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশন এবং আবদুল হকের নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান কৃষক সমিতি যৌথ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভার আয়োজন করে। জনসভার পর একটি বিরাট মিছিল গভর্নর হাউস ঘেরাও করে।
সেখানে মিছিলকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সূত্র ধরে মওলানা ভাসানী পরদিন ঢাকা শহরে হরতাল ডাকেন। ৮ ডিসেম্বর ভাসানী ও মোজাফফর আহমেদের নেতৃত্বাধীন দুই ন্যাপ, আওয়ামী লীগ, পিপল্স পার্টি, নেজামে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামসহ প্রধান বিরোধী দলসমূহের ডাকে বাংলাদেশের সর্বত্র হরতাল পালিত হয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগও ‘জুলুম প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে।
অতঃপর ১৪ ডিসেম্বরে ভাসানী ন্যাপের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ঘেরাও আন্দোলনের কর্মসূচি। সে অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর পাবনার ডিসি’র বাড়ি ঘেরাও করার মাধ্যমে ঘেরাও আন্দোলনের সূচনা ঘটে। ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ), পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া গ্রুপ) এর নেতৃবৃন্দ ‘ছাত্র সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করে এবং তাদের ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে।
১১ দফার মধ্যে ১৯৬৬ সালে ঘোষিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন সম্পর্কিত ৬ দফার সাথে ছাত্র সমস্যাকেন্দ্রিক দাবি দাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংক্রান্ত দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাছাড়া এসময় থেকেই বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রাধান্য পেতে শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-সহ ছাত্র সংগ্রাম কমিটির পূর্ব বাংলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ৬৯ এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। (দ্রষ্টব্যঃ পর্ব নং ১৫)
১১ দফা কর্মসূচি ঘোষিত হওয়ার পরপরই ৯ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ও মোজাফফর ন্যাপসহ ৮ টি রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ডেমোক্রাটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠিত হয়। তারা ফেডারেল পার্লামেন্টারি পদ্ধতির সরকার, প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচন, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমান, খান আবদুল ওয়ালী খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি দাবি করে এবং দাবিগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে গণআন্দোলন জোরদার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারী থেকে ২৫ মার্চ এ আইয়ুবের পতন পর্যন্ত প্রত্যেক দিন ছাত্র শিক্ষক শ্রমজীবী ও জনতা কেউ না কেউ শহীদ হতে থাকেন। ২২ ফেব্রুয়ারী গণঅভ্যুত্থানের প্রবল চাপে আইয়ুব খান ঘোষণা করে যে, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (১৯৭০ সালে) তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। একই দিন শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্তগণ এবং নিরাপত্তা আইনে আটক ৩৪ জন নেতা মুক্তি পান। সরকার পক্ষে মামলায় ১১ জন রাজ স্বাক্ষী ছিল। সাধারণ স্বাক্ষীর তালিকায় ২২৭ জনের নাম আদালতে পেশ করা হয়। ৪ জন রাজস্বাক্ষীকে সরকার পক্ষ থেকে বৈরী ঘোষণা করা হয়েছিল। শুনেছি, সন্দ্বীপ থেকেও সাধারণ স্বাক্ষীর নাম দেয়া হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে আইয়ুব খান আহুত গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের কথা ঘোষণা করেন এবং পর দিন ২৩ ফেব্রুয়ারী আহুত জনসভায় জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহবান জানান। অন্যদিকে মওলানা ভাসানী গোলটেবিল বৈঠকে যোগদান করতে অস্বীকৃতি জানান। ৬৯ এর গণজাগরণকে ‘জালেম’ ও ‘মজলুম’এর মধ্যকার সংঘাত হিসেবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। ফলে ভাসানী prophet of violence হিসেবে পরিচিতি পান। আর ৬৯ এ গণআন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমান হলেন ‘বঙ্গবন্ধু’। মার্কিন সাংবাদিক Dan Coggin, The Weekly Time ম্যাগাজিনে ভাসানী সম্বন্ধে লেখিছেন, credited Bhashani, “as much as any one man”, for instigating the 1969 Mass uprising in East Pakistan that culminated in the collapse of the Ayub Khan regime.
১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন আবার দানা বাঁধতে শুরু করে। সেই ঘুরে ফিরে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ ও ১৯৪০ সালের শেরে বাংলার স্টেটস। এই রাজনৈতিক ধারায় সন্দ্বীপ কোনো অংশে পিছিয়ে ছিল না। সন্দ্বীপ টাউনে আইয়ুব বিরোধী ক্ষোভ ও স্বকীয় জাতিসত্ত্বার স্বপ্ন বৃহত্তর আঙ্গিকে গঠন প্রক্রিয়ার জন্য সাংগঠনিক তৎপরতা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। ঢাকার রাজপথের বাতাস বইতে থাকে সন্দ্বীপে।
সন্দ্বীপের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা ঢাকা কেন্দ্রিক রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক কর্ম তৎপরতা শুরু করে। মিছিল মিটিং হার হামেশা হতে থাকে। ইতোমধ্যে অপেক্ষাকৃত বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সন্দ্বীপ সফর অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সহায়তা করে। চট্রগামের নেতাদের আগ্রহ কম ছিল না সন্দ্বীপের প্রতি। তাছাড়াও সন্দ্বীপের ছাত্র ছাত্রীরা যারা সন্দ্বীপের বাইরে কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যেতেন; তাদের প্রভাবও লক্ষ্য করার মতো ছিল।
পাকিস্তানের আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের পর্দ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। সেন্টার পরীক্ষা যেমন মেট্রিক, ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী পরীক্ষা পশ্চিম পাকিস্তানে সহজে পাস করা যেতো ও পাসের হার ছিল বেশি। ফলে চাকরির বাজারে পশ্চিম পাকিস্তানের ছাত্র ছাত্রীদের সুযোগ ছিল বেশি। সন্দ্বীপের কয়েকজন পশ্চিম পাকিস্তানে পরীক্ষা দিয়ে সহজে পাস করে আসেন।
লেখা পড়ার উপকরণ যেমন লেখার কাগজ কর্ণফুলী পেপার মিলে উৎপন্ন হয়ে করাচিতে সীল মারার জন্য নেয়া হতো। সেই কাগজ বাংলাদেশে নিয়ে এসে বিক্রি করা হতো বেশি দামে (১২ আনা ও পাকিস্তানে ৬ আনায়)। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম ছিল পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বেশি। বাংলাদেশে উৎপন্ন চাল দামে ছিল বেশি। সুবিধাবাদী শ্রেণী ও মধ্যস্বত্বভোগী ২২ (ব্যবসায়িক) পরিবারের হাতে বন্দি ছিল পাকিস্তানের অর্থনীতি।
সন্দ্বীপের ছাত্রীরা তখন মিছিল মিটিংএ যোগ দিতেন না। তবে রাজনীতি সচেতন ছিলেন। কয়েক জন ছাত্রী মেইন স্টিম রাজনীতিতে যথাযত স্থান করে নিয়েছিলেন। ছাত্রদের মধ্যেও কয়েকজন ছিলেন জাতীয় রাজনীতিতে। উনাদের প্রভাব সন্দ্বীপে বিশেষ করে টাউনে পরিলক্ষিত হয়েছিল। আজকের দিনের মত ইন্টারনেট তখন ছিল না। মুখে মুখে আলোচনার মাধ্যমে, চিঠি পত্র বা রাজিনৈতিক বই যেমন লাল বই গোপনে পড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হতে দেখা যেত। প্রত্যেকের দলীয় এজেন্ডা ছিল জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা। নিজেদের ভাগ্যের কথা চিন্তাই করা যেতো না। নেতানেত্রী ছিলেন জনগণের জন্য নিবেদিত। এইসব বিষয়ে সন্দ্বীপ ছিল উদাহরণ দেয়ার মতো। আর এখন, যাহোক।
৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান যখন তুঙ্গে। চারি দিকে পরিবর্তনের আশা যখন প্রতিভাত হচ্ছিল। তখন সন্দ্বীপ টাউনের একটি গণ মিছিলের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। তারিখটির কথা আজ আমার মনে নেই। আইয়ুব বিরোধী গণ মিছিলের আয়োজন চলছে সন্দ্বীপ টাউনে। আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে এক বুদ্ধি এলো। কি করে মিছিলটাকে অর্থবহ করা যায়। আমরাও মিছিলে যোগ দিবো।
আমাদের ১ টি কুকুর ছিল। নাম তার টমি। প্রভু ভক্ত ছিল। ঠিক করা হলো টমিকে নিয়ে আমিও যাব মিছিলে। আমার মেঝু ভাই মোঃ রফিকুর রহমান তালুকদার কিছু রঙিন কাগজ নিয়ে আসলেন। ওই কাগজ কেটে রিং এর মতো করে লম্বা মালা তৈরী করা হলো। ধারির ও মুলি বাঁশ দিয়ে ফেস্টুন বানানো হলো। ডবল ডিমাই সাদা কাগজে লেখা হলো –
“আয়ুইব মোনায়েম ভাই ভাই,
এক রশিতে ফাঁসি চাই।“
ফেস্টুনের সাথে রঙিন কাগজের মালা গেঁথে টমির গলায় বেঁধে দেয়া হলো। মিছিল পাঁচ রাস্তার মোড় থেকে কোর্ট প্রাঙ্গন হয়ে থানা অতিক্রম করে কার্গিল হাই স্কুলের সামনে দিয়ে খাল পাড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। আমিও ওই মিছিলে জয়েন্ট করি। টমিও ছিল। মহুর্মুহ শ্লোগানে আকাশ বাতাস ধ্বনিত হতে থাকে। টমিকে দেখে মিছিলটি আরো বিপ্লবাত্মক হয়ে উঠে। অল্পক্ষন পর পুলিশি ধাওয়া খেয়ে মিছিলটি ছত্র ভঙ্গ হয়ে যায়।
এ এক অভিনব মিছিল আজো মনে পড়ে। সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন সত্যিই বিমোহিত করে। পৃথিবীর ইতিহাসে তারাই জীবিত ও জীবন্ত যারা মানুষের জন্য কাজ করেছেন, মঙ্গল করেছেন। নিজের গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জন্য নিবেদিত ছিলেন তারাই আজ স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে রয়েছে। অন্যদিকে যারা নিজের স্বার্থ দেখেছেন, নিজের প্রতিষ্ঠা চেয়েছেন; তারা গড্ডালিকা প্রবাহের মত বিস্মৃত হয়েছেন।
৬৯ এর স্বৈরাচার বিরোধী আত্মাহুতি ও ত্যাগ আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়ে যাবে যুগ যুগ ধরে। জনগণের পক্ষের শক্তি অমর হোক।
স্মৃতিকথনে: শিব্বীর আহমেদ তালুকদার
আইনজীবী, সমাজ সংগঠক ও কথ্য ইতিহাস গবেষক।
sandwip21st@gmail.com
—–
আরো বিস্তারিত জানার জন্য:
1. Coggin, Dan (18 April 1969) Prophet of Violence- the WeeklyTime-; p.41.