২০২০: মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সে রকম কোন সুখবর নেই। বরং সিনহা হত্যা, কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের উপর নির্যাতন ও সর্বশেষ এক ডিসির মামলায় গভীর রাতে সাংবাদিককে গ্রেফতারের ঘটনা প্রশাসনের অতিরিক্ত রকমের কর্তৃত্ববাদী চর্চার স্বরূপ উন্মোচন করে চলেছে।
চট্টগ্রামের সাংবাদিক সারোয়ারের আর্তি দেশবাসীকে হতবাক করেছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতায় সিলেট এমসি কলেজ, বেগমগঞ্জের নারী বিবস্ত্র করে ভিডিও ক্লিপ প্রচারে দায়ী দেলোয়ার মামাদের উত্থান। হাজী সেলিমপুত্র কর্তৃক এসএসএফ কর্মকর্তার উপর হামলা প্রমাণ করে সাধারণ মানুষ এদের হাতে কত অসহায়।
যে কোন প্রতিবাদকে ম্যান্ডেটবিহীন সরকার ও তাদের পদলেহী এক গোষ্ঠী নানা ভাবে ট্যাগ দিয়ে দমন করতে চেষ্টা করছে। করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার কেলেংকারী করা সাহেদের সংগীসাথী ঘনিষ্ঠ রা মিডিয়া রাজনীতি সরকারে বেশ প্রভাবশালী।
সাংবাদিক কাজলের উপর চলা বর্বরতা বছরশেষে আপাত অবসান হলেও সত্য বলার অপরাধে লেখক মুশতাক আহমেদ কার্টুনিস্ট কিশোর, পলাশ সহ অনেক মানুষ প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে। বিরোধী দলের জন্য কোন স্পেস দেয়া হচ্ছে না। এমনকী ছাত্র শিক্ষক সাধারণ জনগণ, তাজরিনের শ্রমিক মধ্যরাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
এক কথায় ২০২০ সালে মানবাধিকারের এক দু:সহ অধ্যায় বাংলাদেশ পার করছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রায় অকার্যকর। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে কেউ কেউ কথিত সফট ইস্যু ( নারী শিশু নির্যাতন সহ নানা বিষয়ে) তে সোচ্চার হলেও নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে তাদের নীরবতা ও পুরোপুরি এড়িয়ে যাবার প্রবণতা দৃশ্যমান।
সর্বশেষ রংপুরের সিআইডি এসপির কর্মকান্ডে এটা প্রতীয়মান যে শুধু নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারই সংকুচিত হয় নি পাশাপাশি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকে আইন, নৈতিকতা ও অধিকারের বিবেচনায় না নিয়ে এক ধরণের পূর্ব ধারণা ও সংকীর্ণ বর্ণবাদী বিবেচনায় অবদমিত করার প্রচেষ্টা দিনে দিনে শুধু জোরদারই হয়নি, বরং তা অব্যাহত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
– এডভোকেট শাহ আলম ফারুক
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী
সম্পাদক (অ.), সোজা কথা ডটকম