সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট : দিল্লিতে সহিংসতায় মদদ দেয়ার অভিযোগে জেলে আটক জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির (জেএনইউ) সাবেক ছাত্রনেতা উমর খালিদের মুক্তি দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাবশালী দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবী, নির্মাতা, ইতিহাসবিদ ও লেখক।
বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি তোলেন তারা। আনন্দবাজার জানায়, খালিদকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেলের মধ্যে তার ওপরে হামলা হতে পারে আশঙ্কা করে খালিদের জন্য সেখানে পর্যাপ্ত সুরক্ষার আরজি জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
বিবৃতিদানকারীর মধ্যে রয়েছে নোয়াম চমস্কি, মীরা নায়ার, রামচন্দ্র গুহ, অমিতাভ ঘোষ, সালমান রুশদি, অরুন্ধতী রায়, রত্মা পাঠক শাহ, পি সাইনাথেরা, রাজমোহন গান্ধী, আনন্দ পট্টনায়ক, রমিলা থাপার, ইরফান হাবিব, মেধা পাটকর ও অরুণা রায়ের মতো লোকেরা।
ভারতের বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন উমর খালিদ। এ নিয়ে দিল্লিতে সহিংসতায় বিপুলসংখ্যক মুসলিমের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি মসজিদে ভাঙচুর চালানোর দৃশ্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা গেছে। কিন্তু উত্তর-পশ্চিম দিল্লির এই সহিংসতার মামলার চার্জশিটে উমর খালিদসহ সিএএ-এনআরসিবিরোধী আন্দোলনের অনেক নেতাকেই আসামি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। খালিদের বিরুদ্ধে দমনমূলক ইউএপিএর ধারাও দেয়া হয়েছে।
২০০ বিশিষ্ট ব্যক্তি তাদের বিবৃতিতে লিখেছেন, নাগরিকদের সমানাধিকার লঙ্ঘনকারী এনআরসি-সিএএ-র বিরোধিতা করার জন্যই দিল্লি পুলিশ উমর খালিদকে দাঙ্গায় উস্কানির মতো মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। সরকারের উচিত অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়া। এই কাজ করে দিল্লি পুলিশ তাদের সাংবিধানিক শপথও ভঙ্গ করেছে।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে হিংসার ঘটনার পরে সেপ্টেম্বরে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এই সাহসী মানবাধিকার কর্মীর পাশে আমরা আছি।
এদিকে বিজেপির সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার যে চার্জশিট দিল্লি পুলিশ দিয়েছে, তাকে প্রতারণাপত্র বা ‘চিটশিট’ আখ্যা দিয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। এই চার্জশিটে ‘উত্তেজক বক্তৃতা’ দেওয়ার জন্য অনেকের সঙ্গে তার নামও রাখা হয়েছে।
সহিংসতায় মদদদাতা হিসেবে কংগ্রেসের সালমান খুরশিদ, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাট, সিপিআই (এমএল) নেত্রী কবিতা কৃষ্ণন, ছাত্রনেতা কাওয়ালপ্রীত কৌর, বিজ্ঞানী গওহর রেজা, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের নামও চার্জশিটে রাখা হয়েছে।